ভ্ভাম্্রভ্ড ভললভ্লঞ্ষা

শ্রীরামপ্রাণ গুপ্ত প্রণীত

রূপবতী সাঁধবীলতী, ভারত ললনা, কোথা দিতে তাদের তুলনা ?

প্রকাশক-_ শ্রীপুর্ণচন্্র ঘোষ

২৬, বেচারামের দেউড়ী, ক্ঞাম্া।

মূল্য ॥%০ আনা

1১011010019 ১80১1) 01000 1১9৮

চা] 111 0৯0১] ২0 ০২75১ 1১4০6

প্রিবতম।স্

ন্বিভভাম্পন্ন £

ভারত-ললনা মুদ্রিত প্রকাশিত হইল ইহার অধিকাংশ “ভারত মহিলা” পত্রিকার প্রকাশিত হইয়াছিল বিবিধ ইংরেজী বাঙ্গলা গ্রন্থ সাময়িক পত্র অবলম্বনে সপ্ত বিংশতি ভারত ললনার জীবনের পবিত্র কগা সঙ্কলিত হইয়াছে ভারত ললন। পাঠক পাঠিকা সমাজে গৃহীত হইলেই সমস্ত শ্রম সার্থক জ্ঞান করিব। ইতি

দিনাজপুর ৬ই শ্রাবণ, ১৩২৩

রাণীগঞ্জ__ঘোঁড়াঘাট, এ্রীরামপ্রাণ গুপ্ত।

পঞ্চথেরী__

ব্রয়ী__

সূচীপত্র ১--৯ ভদ্র! পটাচার! অন্বপালী খাষিদাসী সুমেধা ১০ --২৬ কুক্সাবতী খন! লীলাবতী ... জয়মতী

দ্বাদশ নারী_- ২৭৫৫

সিন্ধুরাণী পদ্মিনী

দেবল। দেবী মীরা বাই তারা বাই ধাত্রী পান্না দুর্গীবতী পৃর্থীরাজ মহিষী যোধপুর মহিষী রূপ নগরী গুণোর রাণী কৃষণ কুমারী

১০০০%০54

১২ ২৩

ত৭ ২৯ ৩৩ ৩৫ ৩৮ ৪১৯ ৪২ ৪৬ ৪৭ ৫০ ৫১ ৫২

(%* )

কন্মদেবী-_- ৫৬ _-৬১ প্রথম 5 ৫ড দ্বিতীয়! 5 হর ৫৭ | তৃতীয় নি টি ৫৯, রাণী ভবানী ৬২ অহুল্যা বাই ৭৭ লক্ষ্মী বাই ৮৬ চিত্র সূচী

বুদ্ধদেব (ভারত মহিলা )

জয়লাগর জয়দোল ( রত্বমাল! ) রাণী ভবানীর পিত্রালয় (সাহিত্য ) অহল্য। বাই (ভারত মহিল! ) লন্ষমী বাই (ঝান্সীর রাণী)

বুদ্বীদেব।

পি লীগ? পে

বাগবাজার রীডিং সখ্যাপনিছি ৬৬৫৩৬ 8৪

চট), শপ “পা সং্য।4292825-5 পের তারিখ ০6 (৯129০

থেরী শব্দের অর্থ স্থবির অথবা জ্ানরদ্ধ।। ঘে সকল পমত্রী সাক্ষাৎ ভাবে বুদ্ধদেবের উপদেশ লাভ করিরা মুক্ভিমার্সের অধিকাবিণী হইয়াছিলেন, ভ্রাহার। বৌদ্ধ শাপ্ধ সাহিভো থেরা নামে খ্যাত প্ৃহিয়াছেন। বৌদ্ধ শান্র স্ুত্তপিটকে এইরূপ ৭৩ জন থেরার ঞাবন রত্ত লিপিবদ্ধ দেখিতে পাওরা যার * তাহাদের গ্াবনবশড পাঠ করিলে বৌদ্ধ যুগের প্রারস্তে ভারতবর্ষের আধ্য সমাজে দ্বী জাতির অবস্থা কীদুশ ছিল, শৎসন্বদ্ধে আমাদের জ্ঞান জন্মে। ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাব কালে আধ্্যনারী সমাজের উচ্চস্থানে অপিষ্ঠিঠ। ছিলেন ; াহাদের অনেকে ধর্ম বিষরে অস্ত্রষ্টি আন্রিকতা। লাভ করিন্ন। এবং নানা বিষরে মনস্থিতা প্রদর্শন করিয়া যশস্থিনী হইর়াছিলেন |

স্বপ্রসিদ্ধ লেখক শ্রীযুক্ত বিজয়চন্দ্র মজুঘদার মহাশয় ক্ুত্তপিটক বণিত ৭৩ জন থেরীর চরিত বঙ্গ সাহিত্যে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন আমর। তদবলম্বনে জন থেরার জীবন কথা সঙ্কলন করিয়া দিলাম

ভদ্র!

খেরী ভদ্রা জন্মগ্রহণ করিয় রাজগৃহের জনৈক শ্রেচী বণিকের গৃহ আলোকিত করিয়াছিলেন এই গৃহের কুলপুরোহিতের সার্থক নামে এক পুত্র ছিল। যুবক, সার্থকের কান্তি রমণীয় ছিল, তাহার রমণীয় কান্তি দর্শনে কিশোরীতদ্রার হৃদয়-তন্ত্রীতে অপূর্বরাগিণী বাজিয়া উঠে; তিনি তাহার প্রেমান্ুরাগিণী হইয়াছিলেন। সুন্দর সার্থকের অন্তর বড় কুৎ্পিৎ ছিল' তাহার পাপরাশি মনোহর কান্তি এবং মনোজ্ঞ বাগজাল তেদ করিয়া বাহির হইয়। পড়ে। রাজগৃহাধিপতি চৌর্যযা- পরাধে তাহাকে ধৃত করিয়। প্রাণদণ্ডের বিধান করিলেন, ঘাতকের তাহাকে সিংহ-পিঞ্জরে আবদ্ধ করিয়া বধ্য ভূমিতে লইয়া চলিল। প্রেমান্ধ অবলা ভদ্রা প্রেমাম্পদের তাদূশ অবস্থা অবলোকন করিয়া একেবারে আত্মহারা হইদ্না পড়িলেন এবং পিতার নিকট আপন অন্তনিহিত প্রেম প্রকাশ করিয়া সার্থকের জীবন রক্ষার উপায় অবলম্বন জন্য ব্যাকুল হৃদধে অঞ্রসিক্ত নয়নে প্রার্থনা করিলেন। শ্রেষ্ঠী পিতা, আপন স্নেহপুত্তলী ছ্ুহিতার মনোরগ্ন জন্য বু উইকোচ দানে ব্রাঙ্গণ কুমার সার্থককে মুক্ত করিয়৷ তাহার হস্তে কন্ঠারত্ব সমর্পণ করিলেন।

সাধবী রমণীর বিমল প্রেম সার্কের কুচরিত্র সংশোধন করিতে অনমর্থ হইল। একদিন সার্থক তাহাকে বলিল, আমি চৌর্ধ্যাপরাধে ধৃত হইয়া উদ্ধার কামনায় পর্বতশিখরে দেবতার পুজা মানস করিয়াছিলাম। এখন দেবতার পুজা দিতে মনন করিয়াছি, তুমি অলঙ্কতা হইরা আমার সহগমন কর, আমি পব্ধত শিখরে আরোহণ করিয়া সন্ত্রীক দেবতার পুজা কারব। সরলা নারী পতিসহ পর্বত শিখরে আরোহণ কাবিলেন। এই নিঞ্জন স্থানে সার্থক পত্বীর অলঙ্কার অপহরণ অভিপ্রারে তাহাকে বধ করিতে উদ্যোগী হইল। তখন ভদ্রা,

(৩). ভ্ডাজত্ ভনমতনন্সা

প্রাণরক্ষার জন্য ছলন! করিয়া বলিলেন, আমি তোমার একান্ত প্রেমানুরাগিণী। আমার মৃত্যু উপস্থিত হইয়াছে, এই সময় একবার তোমাকে আলিঙ্গন করিয়া আমার জীবনের শেষ আকাঙ্ষ! পরিতৃপ্ত করি। সার্থক সম্মত হইলেন; ভদ্রা তাহাকে আলিঙ্গন প্রদান ব্পদেশে শিখর পার্থে আনয়ন করিল; তাহার কৌশলে সার্থক পদস্বলিত হইয়া নিয়ে পতিত'হইল এই অবসরে ভদ্রা অলঙ্কারাদি তথায় পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করিলেন

অতঃপর ছিন্নকেশ। একশাটা রমণী বিভ্রান্ত চিত্তে সর্ধত্র পরিভ্রমণ করিয়া ফিরিতে লাগিলেন এই সময় একদা তিনি গৃধ্‌ কুট পর্বতের ভিক্ষু সঙ্ঘের পুরোভাগে ভগবান বুদ্ধের দর্শন লাভ করিলেন এবং তাহার প্রাণোন্মাদকর উপদেশে যুদ্ধ হইরা সত্য ধর্মে দীক্ষিত হইলেন। ভদ্রা গুরুর কৃপায় দিব্যজ্ঞান লাভ করিয়া কৃতার্থ হইলেন ; তাহার সমস্ত ক্রেশ, সমস্ত চিন্ততাপ দূরীভূত হইল ; তিনি মগধ, অঙ্গ, কাশী, কোশল প্রভৃতি দেশ পরিভ্রমণ করিয়া! অসীম উসাহে সত্যধর্্ম প্রচার করিতে লাগিলেন। এইভাবে পঞ্চাশ বৎসর গত হইল ধনশালী শ্রেষ্ঠী- কন্তা তদ্রা ভিক্ষান্্রে ্ষুন্নিবারণ করিতেন ; পুণ্যার্থ উপাসক প্রদত্ত শাটী তাহার লজ্জা নিবারণ করিত; সে বসনে তাহার দেহ আবদ্ধ থাকিত? কিন্তু প্রাণ যুক্ত; বন্ধন শূন্য ছিল।

পটাচার৷

পটাচার! বাল্যকালে পিতৃ ভবনের অলঙ্কার স্বরূপ ছিলেন। শ্রাবন্তী নগরীর একজন শ্রেষ্ঠী বণিকের গৃহে তিনি জন্স গ্রহণ করেন। ধনশালী পিতা তাহাকে পরম বাৎসল্যে প্রতিপালন করেন। কন্যা যৌবন প্রাপ্ত হইলে ন্নেহশালী পিতা তাহাকে এক ধনবান বণিক কুমারের

জ্ঞান তনভনঞ্ম1 (8)

সহিত পরিণয় হ্ত্রে বন্ধন করিতে উদ্যোগী হইলেন। কিন্তু পটাচারা একজন প্রতিবাসী দরিদ্র যুবকের প্রেমের মোহনমন্ত্রে আকুষ্ট হইয়া গোপনে পিতৃভবন পরিত্যাগ পূর্বক প্রেমাস্পদ যুবক সহ দূরদেশে পলায়ন করিলেন।

এই দৃরদেশে ত্রমান্য়ে ছুইটি পুল্ররত্র জন্ম গ্রহণ করিয়। প্রেম সর্বস্য দম্পত্ীর আনন্দ বর্দন করিল তাহারা পুন্র মুখ দর্শন করিয়া সাতিশয় সৃষ্ট হইলেন এবং দারিদ্র্য দুঃখ বিস্বৃত হইর1| জীবনযাত্রা নির্বাহ করিতে লাগিলেন। ততকালে একদা স্বামী কাষ্ঠ আহরণ জন্য বনে গমন করিয়। সর্প দংশনে মৃত্যুমুখে পতিত হইলেন প্রাণাধিক স্বামীর মৃত্যুতে অবলা পটাচারা একেবারে আশ্ররহীনা হইত] পড়িলেন এবং পিতৃন্নেহ স্মরণ পূর্বক শিশুপুল্র ছুইটিকে 'লইরা পিতৃভবনাভিঘুখে যাত্রা করিলেন। পথে হতভাগিনী পটাচারার সর্ধনাশ হইল। ক্রমান্বয়ে তাহার নয়নের মণি পুক্রদ্বর মাতার কোল শূন্য করিয়া চলিয়া গেল। পটাচারা শোকদগ্ধচিত্তে শ্রাবন্তী নগরীতে উপনীত হইলেন। তিনি এখানে আসিয়া দেখিলেন, বাত্যাতাড়িত গৃহতলে পতিত হইরা তাহার পিতা মাতা এবং ভ্রাতার এক সঙ্গে প্রীণাস্ত হইয়াছে

অসহ্য শোক দুঃখে পটাচারার জদর একেবারে ভাঙ্গিয়া পড়িল, তিনি উন্মাদিনী হইয়া আপন শোকগাথা গাহিয়। সর্বত্র পরিভ্রমণ করিতে লাগিলেন অতঃপর তিনি বুদ্ধদেব এবং তদীয় নবধর্খের মহিমায় আকৃষ্ট. হইতে লাগিলেন। একদিন আপন শোক-কাহিনী বিবৃত করিয়া কাদিতে কাদিতে তগবানের পদযুগলে পতিত হইলেন। বুদ্ধদেব মধুর বচনে তাহাকে সান্ত্বনা দিতে আরম্ভ করিলেন; তাহার অমৃত তুল্য উপদেশ বাক্য শ্রবণ করিয়া তিনি সমস্ত শোক দুঃখ বিস্বত হইলেন, থেরী দল ভুক্ত হইয়া শতশত শোকাকুলা নারীকে সাস্থবনা প্রদ্ধান করিতে লাগিলেন। অচিরে ভারতবর্ষের ধর্মসসমাজে তাহার

(৫) ভরাক্সত লল্মলা!

প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হইল, তাহার মধুর উপদেশে মুগ্ধ হইয়া দলে দলে সংসারতাপক্রিষ্টী নারী বুদ্ধদেব এবং নবধর্ম্েরে আশ্রয় গ্রহণ করিতে আরম্ভ করিল।

অন্বপালী

অম্বপালী প্রসিদ্ধা বৌদ্ধ রমণী। তাহার জীবন কথা বৌদ্ধ ইতিহাসের এক উজ্জল অধ্যার। অন্বপালীর অপুর্ব রূপের খ্যাতি সর্বত্র বিদ্রিত ছিল। তিনি প্রথম যৌবনে আপন অতুল রূপের ব্যবসায় দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করিতেন। তিনি তাদৃশ উপায়ে অর্থ উপার্জন করিয়। অগাধ ধনের অধিকারিনী হইয়াছিলেন। ভগ্বান বুদ্ধদেবের অন্যতম লীলাক্ষেত্র বৈশালী নগরীর পার্খবর্তী কোটিগ্রামে তাহার সুদৃণ্ত বাসতবন, সুরহত উপবন এবং সুবিস্তৃত আমকানন শোতা পাইত। তগবান বুদ্ধদেবের আবিভাব কালে বৈশালীতে লিচ্ছবি বংশীয়দের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। তাহার! বুদ্ধদেবের সাতিশয় অন্বাগী ছিলেন। এই কারণ তদীয় জীবনের অনেকাংশ বৈশালী নগরীতে অতিবাহিত হইয়াছিল তিনি বৈশালীতে আগমন করিয়া মহাবন নামক উদ্যান বাটিকায় বাস করিতেন। কিন্তু ধর্মচত্র প্রবর্তনের চতুঃচত্বাবিংশ বর্ষে (এই সময় তাহার বয়স ৭৯ বৎসর হইয়াছিল ) তিনি বৈশালীতে উপনীত হইয়া বারনারী অন্বপালীর আত্রকাননে গমন করিলেন। এই সংবাদ শ্রবণ পূর্বক অন্বপালী আপনাকে সৌভাগ্যবতী বিবেচনা করির। হৃষ্টচিন্ত হইলেন এবং তদীয় সকাশে উপনীত হইরা পরদিন মধ্যাঞ্ছে আহার জন্য তীহাকে নিমন্ত্রণ করিলেন। পতিতা বারনারীকে সৎ্পথ প্রদর্শন করিবার উদ্দেস্তে বুদ্ধদেব তাহার নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিলেন

ভ্ডান্গত লতা 7

অতঃপর অন্বপালী সগর্ধে গৃহাতিমূখে প্রত্যারত হইলেন। পথে ভগবান বুদ্ধদেবের দর্শনাভিলাষী লিচ্ছবিদের সঙ্গে তাহার সাক্ষাৎ হইল। তাহারা তদীয় প্রমুখাৎ ভগবানের নিমন্ত্রণ গ্রহণের সংবাদ শ্রবণ করিয়া বিস্মিত হইলেন এবং ক্ষুন্ধচিত্তে তদীয় সমীপবর্তী হইয়া অন্বপলীর নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান পূর্বক তাহাদের নিমন্ত্রণ গ্রহণ জন্য সানুনয় প্রার্থনা করিলেন। কিন্তু বুদ্ধদেব তাহাদের অনুরোধে অন্বপালীর নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করিতে অসম্মত হইলেন। তখন তক্ত লিচ্ছবিগণ দুঃখিত অন্তরে প্রস্থান করিলেন এবং অন্বপালীর ভবনে উপনীত হইয়। বুদ্ধদেবের নিমন্ত্রণ প্রত্যাহার করিবার জন্য অনুরোধ জানাইলেন। লিচ্ছবিদের অন্ুগ্রহপালিতা রূপ জীবিনী অস্বপালী তাহাদের অন্থরোধ বক্ষা করিতে অসন্মত হইলেন তাহারা পুনঃ পুনঃ ব্যর্থ মনোরথ হইয়া সাতিশয় ছুঃখিত হইলেন এবং অন্বপালীকে সহস্র স্থুবর্ণ মুদ্রার প্রলোভন দেখাইলেন। কিন্তু বারনারী অন্বপালী সমস্ত তুচ্ছ করিয়! আপন সংকল্পে অটল রহিলেন

পরদিন মধ্যাহ্ছে তগবান বুদ্ধদেব অন্বপালীর গৃহে আহার করিলেন। তীহার অমৃতময় উপদেশে অশ্বপালী অনুতপ্ত হইয়া উঠিলেন এবং বহু বিনয়বচনে আম্রকানন সহ সমগ্র সম্পত্তি বৌদ্ধ সঙ্ঘের উপকারার্থ উৎসর্গ করিলেন। অতঃপর অনুতপ্ত বারনারী থেরী শ্রেণীভুক্ত হইলেন) তাহার বন্যুগব্যাপী সেবাব্রত কত মাতৃহীন শিশুর ব্যথা প্রশমিত করিয়াছে, কত স্বজনবিয়োগবিধুরের হৃদয়ক্ষতে প্রলেপ প্রদ্দান করিয়াছে, কত শঙ্কিত মৃত্যুপথযাত্রীকে চিরশান্তির অধিকারী করিয়াছে; তাহার স্ুরচিত মনোহর গাথা অগ্ভাপি নরনারীর মোহ- মুদগর রূপে বিদ্যমান রহিয়াছে

খষি দাসী

থেরী খষি দাসীর চরিত্র কথ! বিচিত্র রসসঞ্জাত। খবি দাসীর জন্মভূমি ভারতললামভূতা উজ্জয়িনী। তাহার পিতা ধন-ধান্য পূর্ণ উজ্জয়িনীর একজন শ্রেষ্টা বণিক ছিলেন পূর্ব জন্মের কর্মদোষে * খষি দাসীর তিন বার বিবাহ হইয়াছিল এবং প্রত্যেক বারেই তিনি

* এরকচ্ছ নগরেতে ছিল এক ধনী স্বর্ণকার ; ছিন্ন তার পুক্র আমি, যৌবনে করিল পরদার | মরিয়া নিরয় ভোগ করিলাম দীর্ঘকাল ধরি, বানর হইয়া পরে আর জন্ম লাভ করি। সিদ্ধুদেশে গিয়া এক অরণ্যেতে যবে মরিলাম কাণ। আর খোঁড়া এক ছাগী গর্ভে জন্ম লভিলাম। রস গো বণিক গৃহে এক গো উদরে হইল জনম; খাটিন্ত বলদ হয়ে বারমাস, এমনি করম রঃ চি তার পর হল জন্ম দীন। এক বীথি দাসী ঘরে; হইলাম নপুংসক ; পরদারে এই ফল পরে। বত্রিশ বছরে ঘরি শকট চালক দরিদ্রের কন্যা হয়ে জগ্মিলীম, খণ গ্রস্ত বহু বণিকের। অনেক শুদের দায়ে শ্রেঠী এক একদা বাধিয়! ধরে নিয়ে গেল মোরে বিলাপিন্ব কতন] কাদিয়া। ষোড়শী ইইন্ছ যবে, হেরি মোরে কুমারী খুবতী শ্রেষী পুত্র গিরিদাস হইল আসক্ত মোর প্রতি! অগ্য ভার্ধ্যা ছিল তার শীলে গুণে যশে চমৎকার পতি প্রাণা। আমি কিনা ভাঙ্গিলাম কপাল তাহার বিজয় বাবুর থেরী গাথা |

শ্ডাল্রত লন্না (৮)

স্বামীর প্রেমে বঞ্চিতা হইয়াছিলেন। প্রথম বিবাহ অন্তে খষি দাসী অনুক্ষণ প্রেমপূর্ণ চিত্রে স্বামীর সেবা করিতেন; শ্বশুর শাশুড়ী তাহাকে রূপসী লক্ষ্মী বলিয়া! আদর করিতেন ; কিন্ত স্বামী সাধবী পত্বীর হৃদগত ভালবাসা এবং সেবা শুশ্রষা তুচ্ছ করিয়া তাহাকে পরিত্যাগ করিলেন। অতঃপর খধি দাসীর পিতা মাতা অদ্ধ শুক্ক গ্রহণ করিয়া তাহাকে দ্বিতীয় বরে সমর্পণ করিলেন। স্বামী ধনাঢ্য ; খষি দাসী তাহার কুল আশ্রর করিয়া দাসীর মত গৃহকার্য্য সম্পন্ন করিতে লাগিলেন ; বিবিধ বিধানে স্বামীর মনোরঞ্জনে প্রবৃত্ত হইলেন কিন্তু এই স্বামীও তাহাকে প্রত্যাখ্যান করিলেন ছুইবার বিন1 দোষে দণ্ড হইল এই সময় একদা একজন সংঘতচিত্ত দীনহীন যুব! ভিক্ষার্থ তাহার পিতৃ ভবনে উপনীত হইলেন খাঁষ দাসীর পিতা মাতা বহু সমাদরে এই ভিক্ষুককে গৃহবাপী করিয়। তাহার হস্তে কণ্ঠারহ্র সমর্পণ করিলেন | নব জামাত। এক পক্ষ গৃহে অবস্থিতি করিয়া বিরক্ত হইয়া উঠিলেন এবং চীবর ঘটিক! গ্রহণপূর্বক সংসার পরিত্যাগ করিয়া ভিক্ষা অন্বেষণে বহির্গত হইলেন এইবার দুঃখ লজ্জায় খধি দাসীর হৃদয় তাঙ্গিয়া পড়িল। তিনি প্রব্রজ্যার জীবন যাপন অথবা প্রাণ নাশ করিবার জন্য পিতা মাতার অনুমতি প্রার্থনা করিলেন পিতা মাতা৷ তাহাকে গৃহে বাস পুর্ধক সাধু জনের সেবা করিয়া সাধুতা লাভ করিতে উপদেশ দিলেন। কিন্তু খষি দাসী পুনঃ পুনঃ প্রত্রজ্যা অবলম্বন জন্য অনুমতি প্রার্থন! করিতে লাগিলেন। তখন পিতা মাতা অঞুমোচন করিতে করিতে স্নেহের পুত্তলী কন্ঠারত্বকে গৃহ পরিত্যাগ করিতে অনুমতি প্রদান করিলেন। অতঃপর তিনি ভগবান বুদ্ধদেবের শরণাপন্ন হইলেন এবং তাহার কৃপায় তরি বিদ্তা লাভ করিয়া ব্রত পূর্ণ করিলেন » তাহার সমস্ত দুঃখ,সমস্ত অনুশোচনার অন্ত হইল।

সুমেধা

প্পুরাকালে মন্তাবতী নগরীতে 'কোঞ্চ নামক এক নরপতি রাজস্ব করিতেন। মন্তাবতীর রাজভবনের প্রমোদ বিলাসের লীলাক্ষেত্রে স্থমেধার জন্ম, কিন্তু স্ুখৈশ্ব্যপালিত। স্মেধা কৈশোর কালেই ভগবান বুদ্ধ এবং তদীর ধর্মের অন্ুরাগিণী হইয়া উঠেন। পৃথিবীর মৃত্যু শোক তাহার তরুণ জদয়ে বৈরাগ্য আনয়ন করে, তিনি _ অপ্রমেয় স্থখৈশ্ব্য পরিত্যাগ করিষ্। প্রব্রজ্যায় জীবন যাপন করিবার জন্ঠ পিতা মাতার অন্থুমতি প্রার্থনী হইলেন। হৃদয়শোণিত তুলা। কণ্ঠার প্রার্থনা শ্রবণ করিয়। রাজা কোঞ্চ ব্যথিত হইলেন; রাজ মাহা অঞ্বিসক্জন করিতে লাগলেন তীাহার। প্রাণাধিকা কন্ঠার মতি পারবন্তন আভপ্রারে ঠাহার সমক্ষে সংসারের সুখচিত্র উজ্জ্বল বর্ণে আঁ্কত কাররা প্রদর্শন করিলেন, বরণাবতার রাজ অনিকর্তকে তাহার পাণি গ্রহণ জগ্ত আমন্্ণ করির। পাঠাইলেন। তাহাদের আমন্ত্রণে বাঞজা অনিকত্ত সুন্দরা স্থমেধার প্রেমার্থ হইয়। উপনীত হইলেন। তিনি মধুর বচনে কুমারী সুমেধাকে সম্বোধন করিয়। প্রেম ভিক্ষা কারলেন। [কন্ত তাহার সমস্ত প্ররাপ ব্যর্থ হইল; মুক্তি অন্রাগিণী স্ুমেধার হৃদর মন অপূর্ব সৌন্দর্যে অলঞ্কত ছিল, €সে সৌন্দব্যের দপ্তর নিকট পৃাথবীর সমস্ত সৌন্দয্য আপনা আপনি মলিন হইর়ী পাড়ত; তান তাদৃশ অপার্থিব পৌন্দধ্যের উপভোগ কল্পে পৃথিবার সমস্ত সুখ সম্পদ তুচ্ছ করিলেন। কিশোরী সুমেধ রাজ-প্রেম প্রত্যাখ্যান করিয়া মহ। প্রেমে মন্ত হইলেন। তিনি ভগবান বুদ্ধের, চরণাশ্রয়ে ক্ষান্তি লাভ করিলেন, তাহার সকল তৃষ নিরৃত্ত হইল, তাহার হৃদয় মন মুক্ত শুদ্ধ হইয়া উঠিল

শপ বক

জ্জন্সী রুক্নাবতী

(দয়া)

তৌীদ্বযুগে উৎ্পলাবতী নগরীতে রুক্সাবতী নাম্মী একজন সম্পত্তি- শালিনী দয়াবতী বৌদ্ধমহিল! বাস করিতেন তিনি যে পল্লীতে বাস করিতেন, তাহার কোন নরনারীর অন্নবন্ত্রাীভীবজনিত ক্লেশভোগ বার্তা কর্নমগোচর হইলে তিনি তঙক্ষণাৎ সে ক্লেশতোগ দূর করিবার জন্য যত্র করিতেন। পল্লীতে কেহ কষ্টে পতিত হইরাছে কিনা তিনি সর্ধদা গোপনে সে বিষয়ের অনুসন্ধান লইয়া ক্রি ব্যক্তির ক্রেশ বিমোচনে যত্্বতী হইতেন। একদা মুন্তিমতী দরা রুক্সাবতী রাজপথে বিচরণ করিতে করিতে দেখিতে পাইলেন, একটি দুতিক্ষক্িষ্টা নারী খাগ্তাতাবে অনন্ঠোপার হইয়া তাহার সগ্ভোজাত .শিশুর জীবদ্দেহ ভক্ষণ করিবার উদ্যোগ করিতেছে সে সময় সেদেশে ভয়ানক ছুতিক্ষ উপস্থিত হইবাছিল। ক্ষুধার্ভ নরনারীর আত্তনাদে বোধ হইত 'ষে, সমস্ত স্থান শ্মশান ভূমিতে পরিণত হইয়াছে চতুদ্দিক ক্ষুন্িরৃতি সম্পাদনার্থ যেন লোল জিহব। বিস্তার করিতেছিল। তরুলতা, পত্রপুষ্প এবং তৃণারুর পর্য্যন্ত ছুতিক্ষ পীড়িত নরনারীর জঠরানলের তৃপ্তি সাধনে সমূলে ধ্বংস প্রাপ্ত হইয়াছিল। অনাহারে মৃত্যুমুখে পতিত নরনারীদের দেহ সকল ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হওয়াতে সমগ্র দেশ বিরাট শ্মশানের আকার ধারণ করিয়াছিল। দয়াবতী রুল্সাবতী যখন দেখিতে পাইলেন ধে, সপ্প্রসবা নারী ক্ষুধার জ্বালায় অস্থির হইয়া! নবজ্জাত শিশুর দেহ ভক্ষণ করিবার উদ্যোগ করিতেছে, তখন তিনি কিংকর্তব্য-

(১১) ভ্ডাব্রৎ্ত ভশতন্জ্ন।

বিষূঢ় হইয়া পড়িলেন। তিনি ভাবিতে লাগিলেন, মানবীর চিত্তবৃত্তির কলুষত। কি প্রকারে এরূপ ভয়ঙ্কর পরাকাষ্ঠা লাত করিয়াছে! জগতের স্বাভাবিক রীতিনীতি কি তরক্কর রূপে সীমা উল্লঙ্যন করিয়াছে! মাতা নিজ দেহ পোধষণার্থ জীবিত পুত্রের দেহমাংস উদরসাৎ করিয়া ক্ষুন্িবৃত্তি সম্পাদন করিতে দ্বিধা বোব করিতেছে না। এইরূপ তাবে ভাবিতে ভাবিতে রুল্সাবতী সেই ক্ষুধাতুরা নারীর সম্মুখে অগ্রপর হইয়া বলিতে লাগিলেন, ক্ষুধার্তে,ক্ষান্ত হও।” তখন সেই ক্ষুৎ প্রগীড়িত। নারী বলিল, তবে কি আহার করিব? দেশে স্বচ্ছন্দ বনজাত শাক পাতা ঘাস আদি পর্য্যন্ত লোকের উদরসাহইয়া গিরাছে। এখন কি আহার করি? রুক্সাবতী বলিলেন, “ক্ষান্ত হও। আমি গৃহ হইতে খাগ্ঘপামগ্রা আনরন করিয়া তোমাকে দিতেছি তুমি তোমার এই সগ্যোজাত শিশুর দেহ ভক্ষণ করিও না। ক্ষান্ত হও।” এইরূপ আশ্বাস প্রদান করিয়া বুদ্ধিমতী রুল্মাবতী কিঘ্তক্ষণের জন্য এঁ নর- পিশাচীকে নিবৃত্ত করিলেন। সেও কিঞ্চিৎ আশ্বস্ত হইল। কিন্তু পরক্ষণেই রুল্সা ভাবিলেন, যদি আমি খাগ্য আনরন করিতে গৃহে গমন করি, তাহা হইলে সেই অবকাশে ক্ষুধার জালার অস্থির হইয়া যদি এই নারী শিশুটিকে গ্রাস করিয়া ক্ষেলে, তাহা৷ হইলে ত, শিশুর প্রাণরক্ষা করা হইল না। আর শিশুটির প্রাণ রক্ষার্থ যদি আমি মাতৃক্রোড় হইতে বলপুর্বক শিশুটিকে লইয়া যাই? তাহা হইলে শোকে তাপে জঠরীনল জ্বালায় অস্থির হইয়া প্রস্থতাও ইহলীলা সংবরণ করিবে সুতরাং এস্থান পরিত্যাগ করিনা যাই কিরূপে? এই প্রকার যযৌ তন্থৌ অবস্থার রুষ্মাবতী মহাপঙ্কটে পড়িলেন। কিন্তু অবিলম্বে তিনি কর্তব্য নির্ধারণ করিলেন। অটল হ্কর্য ধৈর্য্য সহকারে একথানি শাণিত সুতীস্ক ছরিক। দ্বারা স্বীয় মাংসল স্তন দ্বপ্ন কর্তন করিয়া সম্তানরুধিরলোলুপা নারীকে প্রদ্দান করিলেন বিকট

ভ্ঞাক্ুত তলঙলন্না (১২)

ভৈরব ভাবে ক্ষুধার্ত হস্ত প্রসারণ করিয়া স্তন্য মাংসপিও গ্রহণপূর্ববক তক্ষণ করিতে লাগিল এই স্থধোগে মহীয়সী রুল্মাবতী শিশুটিকে লইর| পলায়ন করিলেন; তীহার বক্ষস্থলন হইতে প্রবাহিত রুধির ধার! উত্পশাবতী নগরীর রাজমার্গ রঞ্জিত করিয়া ফেলিল ।*

খন। লীলাবতী (বিষ্যা)

হন৷ লীলাবতী বিদুষী ভারত-রমণী। সুদূর অতীত কালে এই দ্ভই মনস্থিনী নারী ভারতবর্ষে জন্ম পরিগ্রহ করিয়াছিলেন। অগ্ভাপি তাহাদের জ্ঞানের প্রদীপ্ত প্রভায় ভারতবর্ষ উচ্জবল রহিয়াছে !

খনার জ্যোতিষ শান্বে এবং লীলাবতীর গণিত শাস্ত্রে অগাধ পার- দশিতা ছিল। অনেক মহা্মার ধারণা যে, আমাদের দেশে নারীজাতি উচ্চশিক্ষার বঞ্চিত ছিল। খনা এবং লীলাবতীর জীবন তাহাদের মতের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে তাদৃশ প্রদীপ্ত প্রতিভা- শালিনী নারীদ্বয়ের জীবন কথা পরিজ্ঞাত হইবার জন্য আমাদের মন স্বতাবতঃই কৌতুহলাক্রান্ত হইয়া থাকে কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, তাহাদের জীবন-চরিত অতীতের অন্ধকারে আচ্ছন্ন হইয়। পড়িয়াছে ; এই ঘোর অন্ধকার দুর করিবার কোন উপায় নাই। ইহাদের সন্বন্ধে আমাদের দেশে অনেক কিন্বদস্তী প্রচলিত রহিয়াছে এই সকল কিন্বদস্তীর অনেকগুলিই বিশ্বাসযোগ্য নহে

* ভারত-মহিলা নান্নী মাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত পশ্তিত হরিদেব শাস্ত্রী মহাশয়ের বৌদ্ধমহিলা হইতে রুক্সাবতীর কথা উদ্ধত হইল। তাহার নিকট কৃতজ্ঞত1 জ্ঞাপন করিতেছি। ' শাস্বীমহাশয়ের ঠিকানা! জানিতে না পারায় অন্নুমতি লইতে পারি নাই।

(১৩) ভ্ডাক্লসক্ত তনতনজ্সা

খনা চিরখ্যাত বিক্রমাদিত্যের রাজসতার অন্যতম রত্ব মিহিরের পত্রী ছিলেন। তাহাদের উভয়েরই শৈশব এবং বাল্যকাল এক সঙ্গে অনাধ্যজাতির আশ্রয়ে অতিবাহিত হইয়াছিল ; স্টাহারা উভয়েই এক সঙ্গে অনার্ধ্দের নিকট জ্যোতিষ শান্তর শিক্ষা লাভ করেন।

আধ্যা খনা কোন হ্ছত্রে শৈশবকালে পিতামাতার স্নেহক্রোড় হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া অনার্ধ্যালয়ে নীত হইয়াছিলেন, তাহা নিদেশে করিবার কোন উপায্র নাই। কিন্তু মিহির সন্বদ্ধে এইরূপ জনঞ্্ত চলিরী আসতেছে যে, তীর পিত। মহামহোপাধ্যার জ্যোতিষ শান্ বরাহ পুত্রের জন্ম মাত্র তাহার আযঘুক্কাল নির্ণর করিতে প্ররত্ত হন এবং গণনার ভুল বশতঃ একশত বৎসর স্থানে দশ বৎসর মাত্র আযুঃ অবধারণ করেন। এজন্য বরাহ সাতিশয় ক্ষু্ন হইয়া পড়েন এবং মাত্র দশ বতসরের জন্য শ্নেহপাশে বদ্ধ হইতে অনিচ্ছুক হন। অভ্ঃপর তিনি পুভ্রকে মৃত পাত্রে সংস্থাপন করিয়া নদীর আোতে ভাপাইয়া দেন। একজন অনার্য রমণী দৈবাৎ শিশুকে দেখিতে পায় ; শিশুর সুন্দর মুখ তাহার হৃদয় স্নেহসিক্ত করিয়া তুলে ; রমণী তাহাকে গুহে আনয়ন করিয। সযত্ে প্রতিপালন করিতে আরম্ভ করে

ভারতরত্ব মিহির কিরূপে অনার্ধ্যগ্ুহে নীত হইয়া প্রতিপালিত হইয়াছিলেন, তাহা বপিত হইল | এই অনাধ্যবাসে খনার সঙ্গে তাহার শৈশব বাল্যজীবন অতিবাহিত হইয়াছিল তাহাদের বাল- স্থলত সখাক্রমে অনুরাগে পরিণত হন। তারৃণ অতিনব ভাবের আবি্ভাবে তাহাদের হৃদর পুলকাবিষ্ট হইয়া উঠে; তাহারা পরিণয় সুত্রে সম্মিলিত হন।

নবীন দম্পতি বয়োবৃদ্ধি সহকারে আপনাদিগকে আর্ধ্যবংশ সম্ভৃত বলিয়া বুঝিতে পারেন এবং গণন! দ্বারা আপনাদের পিতৃমাতৃকুলের পরিচয় লাভ করিতে সমর্থ হন। তাহারা পাঠ সমাপ্ত করিয়া জন্মভূমি

ভ্ডাল্পজ্ হল?! (১৪)

দর্শন আত্মীয় স্বজনের সঙ্গ লাভ জন্য ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন, কিন্তু অশেষ সুখস্থৃতি জড়িত আশ্রয় স্থল এবং স্নেহশীল প্রতিপালকদিগকে . পরিত্যাগ করিতে তাহাদের হৃদয় ভাঙ্গিয়া পড়িতে লাগিল অবশেষে জন্মভূমি দর্শন আত্মীয় স্বজনের সঙ্গলাভ আকাঙ্ষাই জয়লাভ করিল, তাহার! অনার্ধ্যদের নিকট হইতে বাপ্পাকুললোচনে বিদায়গ্রহণপূর্বক স্বদেশের অভিমুখে যাত্রা করিলেন। অনাধ্্যগণ তাহাদের অদর্শনের কল্পনায় ক্রিষ্ট হইয়া পশ্চাদ্বস্তী হইতে লাগিলেন, মিহির খনা৷ তাহা- দিগকে প্রীতিপূর্ণ সান্ত্বনা বাক্যে প্রতিনিবৃত্ত করিলেন তাহারা দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ পূর্বক আপনাদের হৃদয়ানন্দ মিহির খনার মঙ্গল কামন! করিয়া গৃহে ফিরিয়া আসিল।

মিহির খনা আগত হইলে বরাহ পুত্র এবং পুত্রবধূর পরিচয় প্রাপ্ত হইয়া আনন্দে অধীর হইলেন এবং তাহাদিগকে সাদরে গ্রহণ করিলেন। বরাহ পুভ্র মিহিরকে রাজ সভায় উপস্থিত করিলেন ;. মহারাজ বিক্রমাদিত্য তাহার অসাধারণ গুণগ্রাম দর্শন করিয়া প্রীত হইলেন ; রাজাদেশে মিহির সতাবত্ব্ূপে আসন পরিগ্রহ করিলেন। বরাহ নিঞ্জে সভারত্ব ছিলেন; তদুপরি পুত্রের রাজ-প্রসাদ লাভ সাতিশয় আনন্দের কারণ হইল খন রাজ সভার ভূষণ স্বরূপ শ্বশুর স্বামীর আশ্রয়ে বাস করিয়। পরম সুখে দিন অতিবাহিত করিতে লাগিলেন এবং তাহাদের জ্ঞানালোচনায় সহায় স্বরূপিনী হইলেন। কিন্তু শ্বশুর স্বামীর সঙ্গে জ্ঞানালোচনার সুত্র অবলম্বন করিয়াই খনার সুখ রাশিতে কীট প্রবেশ করিল। খনা৷ জ্যোতিষ শাস্ত্রে শ্বশুর স্বামী অপেক্ষা অধিক পারদশিনী ছিলেন। খনা সময় সময় শ্বশুরের গণনা সংশোধন করিয়। দ্রিতে লাগিলেন ইহার ফলে বরাহের হৃদয়ে ঈর্ষযার সঞ্চার হইল

এই সময় একদা বরাহ আকাশের নক্ষত্র সংখ্যা নির্ধারণ জন্য,

(১৫) ভ্ডাল্লত্ ভনতনক্ম?

রাজাদেশ প্রাপ্ত হইলেন। বরাহ নিজে এই গণনা করিতে অসমর্থ হইয়। পুত্র বধু খনাকে উহার ভার অর্পণ করিলেন। খন শ্বশুরের আদেশান্থলারে গণনা পূর্বক আকাশের নক্ষত্র সংখ্যা অবধারণ করিয়া? দিলেন। বরাহ যখ| সময়ে রাজ সভায় গমন পূর্বক মহারাজাকে আকাশের নক্ষত্র সংখ্যা পরিজ্ঞাত করিলেন। মহারাঞ্জ বিক্রমাদ্িত্য. তাদৃশ্ত অদ্ভুত গণনা শক্তি দর্শনে চমত্কৃত হইলেন। তঙকালে খনার বিগ্কার খ্যাতি তাহার শ্রুতি গোচর হইয়াছিল। তিনি খনাকেই গণনাকারিণী বলিম্বী অনুমান করিলেন এবং অনুসন্ধান দ্বারা আপন অনুমান বথার্থ বলিয়া জানিতে পারিলেন। গুণমুগ্ধ বিক্রমাদিত্য মনম্থিনী খনার দর্শন লাভ জন্য কৌতুহলাক্রান্ত হইলেন এবং কৌতুহলের আতিশষ্য বশতঃ হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হইয়া তাহাকে রাজ সতার আনয়ন, করিবার জন্ঠ আদেশ করিলেন। এই আদেশ প্রতিপালন করিলে কুলমর্ধ্যাদা নাশ অবত্ঠন্তাবী দেখিরা বরাহ কিংকর্ভব্যবিমূঢ় হইয়। পড়িলেন। পুত্রবধূর অসাধারণ গুণগ্রাম তাহার দরে ঈরধ্যার সঞ্চার করিয়াছি, এক্ষণ কুলমর্ধ্যাদা নাশ ভয় তাহাকে পীড়িত করিতে লাগিল। বরাহ খনার জিহ্বা কর্তন করিয়া শান্তিলাতের সংকল্প, করিলেন এবং পুভ্র মিহিরকে তদন্ুবূপ আদেশ দিলেন

পিতার তাদৃশ অমানুষিক আদেশ শ্রবণে মিহিরের মাধায় আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়িল, সমস্ত পৃথিবী তাহার পদতলে ঘুণিত হইতে লাগিল বরাহের সংকল্প আদেশের বিষয় খনার কর্ণগোচর হইলে তাহার জীবনে ধিকার উপস্থিত হইল ; তিনি জীবন তার বলিয়া বোধ করিতে. লাগিলেন স্বামীকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “এ জীবন পদ্মপত্র স্থিত জলবিষ্বের ন্যায় অস্থিরঃ পৃজ্যপাদ শ্বশুরের হৃদয় শান্ত করিবার জন্য এই নশ্বর দেহ পাত করিতে পারিলে তাহা পরম ফলো- পধায়ক হইত। অতএব সত্বরে তাহার আদেশ প্রতিপালন কর।”

ভাল্লত লনা. (৯৬)

এই বাক্য শ্রবণ করিয়া মিহির উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন, তাহার বিবেক বুদ্ধি আচ্ছন্ন হইয়া পড়িল ; তিনি খনার জিহ্বা কর্তন করিয় চিরদিনের জন্য আপন নাম কলঙ্ষিত করিলেন খনার তিরোতাবের পর কত কাল,_কত যুগ অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে, অগ্ঠাপি লোকে তীহার বচন আবৃত্তি করিধা থাকে এই সকল বচন অতিজ্ঞতালন্ধ জ্ঞানগর্ভ। তত্সমুদয় পাঠে আমরা বর্ধা কৃষি সম্বন্ধে অনেক তত্ব জানিতে পারি। কিন্বদন্তী বিছুষী খনাকে এই সকল বচনের রচয়িবী রূপে নির্দেশ করিতেছে কিন্তু উজ্জয়িনীবাসিনী বিছবধীর বচন বাঙ্গলা ভাষায় গ্রথিত দেখিগ্বা আমাদের মান সহজেই দ্বিধা উপস্থিত হয় সম্ভবতঃ এই সকল বচন উজ্জ্িনীর ভাষাতেই রচিত হইয়াছিল, তারপর বাঙ্গালী জাতি তৎসমূদয় গ্রহণ পূর্ধক আপনাদের ভাষার রূপান্তরিত করির়াছে। খনার বচনের কতকগুলি হিন্দি মিশিত, এজন্য যে প্রক্রিয়ায় খনার বচন রূপান্তর প্রাপ্ত হইয়াছে, তাহা অনুমিত হইতে পারে। খনার বচন সাহিত্যের হিসাবে সৌষ্ঠবশালী না হইলেও আলোচনার যোগ্য; তাদৃশ আলোচনা গৃহস্থ কৃষক কুলের হিতজনক | * * আমরা এখানে খনার কতিপয় বচন উদ্ধত করিয়া দিলাম |.

যদি বর্ষে অঘনে; রাজা মান মাগনে।

যদি বর্ষে পৌষে টাকা হয় ভুঁমে।

যদি বর্ষে মাঘের শেম, ধন্য রাজার পুণ্য দেশু।

ঘদি বর্ষে ফাগুনে, চিন। কাউন দ্বিগুণে।

চৈত্রে থর থর, বৈশাখে ঝড় পাথর,

জ্যৈষ্ঠ শুখা, আষাঢ়ে ধারা

শস্তের ভার না সহে ধরা।

কর্কট ছরকট, সিংহ শু

কন্া কানেকান।

(৪ স্ডাল্লত ভলত্মন্ন!

খনার তুলনাগ্চ লীলাবতীর আবিরাব কাল আধুনিক। লীলাবতী ভারত ভূষণ ভাঙ্করাচার্যের কণ্ঠা। তাস্করাচার্য্যের হুর্য্য সিদ্ধান্ত নামক প্রসিদ্ধ গ্রস্থের আলোচন। করিয়া পুরাতন্বজ্ঞ বেটলি সাহেব নির্দেশ

বিনা বায়ে তুল। বর্ষে,

কোথা রাখবে ধান। অগহন্‌ ঘে বর্ষে মেঘ,

ধন্য রাজা ধন্য দেশ।

অগহন্‌ দোবর্‌, পুষ, দেড়াঃ

মাধ, সয়াই, ফাগুন্‌ বর্ষে ঘরছছকে ঘাই।

পানি বর্ষে আধা পুষ,+

আধা গেসু আধা ভূষ্‌।

- বর্ষে যদি মকরে।

চাষ হবে টিকরে মাথে যদি বর্ষে দেবা। তবে হয় প্রজার সেবা যদি বর্ষে মাঘের শেবা ধন্য সে রাজা ধন্য সে দেশা ষৌ বর্ষে বৈশাখা রাউ | এক ধান্মে দোবর চাউ 'ন্ক্যেন্ঠে মারে, আষাড়ে ভরে। কাটিয়। মাড়িয়া খরে পুরে জ্যেষ্ঠেতে ফুটে তারা আবাঢে ভর্বে গাড়া অরদরা বরষে সভ- কিছু হা। এক জবাস্‌ পতর্‌ বিন্ভ'1 একো পানি যৌ৷ বরষে সাতি | কুর্মি পহিরে সোপ পাতি

ভাবত লঙ্পন্ন। (৯৮)

করিয়াছেন যে, ভাঙ্করা চার্যয খৃষ্টীয দ্বাদশ শতাব্দীতে আবিভূতি হইয়া- ছিলেন। . কিন্তু এই সম্বন্ধে মতদ্বৈধ আছে কেহ কেহ ভাগ্চরাচাধ্যকে অধিকতর প্রাচীন বলিয়। বিশ্বাস করেন।

স্ুকিলা শ্রাবণ, ধুলিয়া ভাদু্া। আশ্বিন মাসেরে না লাগে কাহ্য় ঝাষ্তিক মাসেরে বা বরস|। ক্ষেত ছাড়ি কিরি পলায় চাষা কাষ্ঠিক মাসেরে ভগ্ডারে পানি। হাটুয়া কাড়িবে বড় গৌনি | আধাট়ে নবমী শুকুল পথ | কি কর শ্বশুর লেখা জোখা যদি বর্ষে যুষল ধারে মাঝ সমুদ্রে বগা চরে যদি বর্ষে ছিটে ফোট]। পাহাড়ে হয় মীনের ঘটা যদি বর্ষে ঝিমি ঝিষি। শন্যের ভরে কাপে মেদিনী হেসে স্ু্য বসেন পাটে। চামার বলদ বিকায় হাটে কোদালে কুড়লে মেঘের গা এলো মেলো৷ বহে বা। কৃষককে বল বাধতে আল। আল্গ না হয় হবে কাল॥ আউয়া বাউয়া বহে বতাম্‌।, তব হোলা বরৃথা কে আশ্‌ বৎসরের প্রথমে ট্শানে বয়। সেই বৎসর বড় বর্ষা হয়

(৯৯) ভাস ভহন্া

তারতললাষভূতা বারানসী ভাস্করাচার্য্ের বাসভূমি ছিল। তদীয় কন্ঠা লীলাবতীর জীবনও এই পবিত্র তীর্থ ক্ষেত্রেই অতিধাহিত হইয়াছিল।

ভাছুরে মেঘে বিপরীত বায়। সে দিন বড় বর্ষা হয় শ্রাবণ ভাঙ্রে বহে ঈশান কাঁধে কোদাল নাচে কুষাণ ভাছুরে মেখে পৃবে বায়। সে দিন বড় বর্ষা হয় জো পৃরবা পৃরবৈয়া পাবে স্থখলে নদিয়া নাউ বহাবে সাওন পাছেয়া মহি ভরে। ভাদৌ পূরবা পথল সরে শ্রাবণে বয় পৃবে বায়। হাল ছেড়ে চাষা বাণিজ্যে যায় আষাঢ় সাওন বহে পৃথিয়া। বেচ বরদ কেন গাইয়া সান কে পুরৌয়া, ভাদন্‌ পচ্চিমা জোর। বরধা বেঁচ স্বামী, চল দেশ কা ওর। পূর্ণ আমাড়ে দক্ষিণে বয়। সেই 'বৎসর বন্যা হয় বেঙ. ডাকে ঘন ঘন। জল হবে শীত্র জান বেও. খন ঘন ডাকিলে শীঘ্র বৃষ্টি হয়। চন্দ্র যগ্ডলের মধ্যে তারা। জল বর্ষে মূষল ধারা

ভক্ত ভতনন্না কি

লীলাবতী বিবাহের অব্যবহিত পরেই বিধবা হন এবং পিতার উৎসাহে গণিত শান্ধ শিক্ষা করিয়া তদালোচনায় সমগ্র জীবন অতিবাহিত করেন। লীঙ্গাবতীর অকাল বৈধব্য সন্বদ্ধে একটি কৌতুকাবহ কিন্বদস্তী লিপিবদ্ধ করিতেছি। তাস্করাচার্য্য গণন! দ্বারা বিবাহের পূর্বেই কন্ঠার অদৃষ্ট লিপি অবগত হন। অকাল বৈধব্য তাহার অদৃষ্টে লিখিত ছিল। একটি শুতলগ্নে বিবাহ ক্রিয়। সম্পন্ন হইলে অকাল টবধব্য অসম্ভব বলিয়।. ভাস্করাচার্য্যের বিশ্বাস ছিল। ভাঙ্করাচার্য্য এই লগ্চে বিবাহ দিয়া প্রিয়তম! কন্ঠার অকাল বৈধবয নিবারণ কৰ্িতে সঙ্কল্প করেন। লগ্ন অবধারণ জন্য বিবাহ সভায় বর কন্যার সন্বথে জল যন্ স্থাপিত হইয়াছিল এই যন্ত্র অর্থাৎ পাত্র

দূর সভা নিকট জল। . নিকট সভা রসাতল পৃবেতে উঠিল কাড়। ডণ্জা ডোবা একাকার পশ্চিমের ধনু নিত্য খরা। পৃবের ধনু বর্ষে ঝরা কাতির পুণিমা কর আশা। খনা বলে শোন্রে চাবা নির্মল মেঘে যদি বাত বয়। রবি খন্দের ভার ধরা না সয় মেঘে করে রাত্রে আর হয় জল। তবে জেন মাঠে যাওয়াই বিফল পৌষের কুয়া বৈশাখের ফল। দিন কুয়া তদিন জল পৌব গরমী বৈশাখে জাড়। প্রথম আবাঢ়ে ভরবে গাড়

(২১ ) স্ডাবত্ ভভতলজ্ম।

জল পূর্ণ ছিল, তাহাতে একটি অতি ক্ষুদ্র ছিদ্র ছিল, এই ছিন্্র পথে পাত্রস্িত সমস্ত জল নিঃশেষ হইয়া বহির্গত হইবার মুহুর্তই সেই শুত- লগ্র ছিল। সতাস্থ দর্শক বৃন্দ সোতস্ুক নেত্রে শুভ লগ্নের প্রতীক্ষ! করিতেছিলেন, কিন্তু দৈবাৎ লীলাবতীর অলঙ্কার হইতে একটি মুক্তা! জল যন্ত্রে পতিত হইয়। ছিদ্র পথ রুদ্ধ করে এবং তজ্জন্ঠ লগ্ন উত্তীর্ণ হইয়। যায়। এইরূপে পুরুষকার বলে অৃষ্ট লিপি খগ্ডনের প্রয়াস

ব্যর্থ হয়।

মাঘ কে গর্মী, জেঠ্‌ জাড়,।

পহিলা পানি ভর্‌ গৈল্‌ তাড়, ঘাঘ, কহে হাম্‌ হোবৌ যোগী কুয়াকা পানি ধোই হে ধোবী

ডাক দিয়ে বলে মিহিরের স্ত্রী শুন-পতির পিতা ভাদ্র মাসে জলের মধ্যে নড়েন বস্থুমাতা রাজ্য নাশে, গো নাশে, হয় অগাধ বান।

হাতে কাঠা গৃহী ফেরে কিন্তে না পান ধান

শ্রাবণ ধুই, বাধুই নহি।

ভাঙ্ব ধুই, কিছু কিছু রহি।

আশ্বিন ধুই, সর্বস্ব যাহি

দিনে জল রাতে তারা।

এই দেখবে শুখার ধার!

বাদল বামুন বান। |

দক্ষিণে পেলেই যান রি

রাত নিবদ্দর দিনকে ছয়] | দুয়া) উড

কহে ঘাঘ, যে বরখা গয়। পপ

কোলি লুক্রি, ফুলে কাশ্‌। চে | বর. ২১

আব্‌ নাহিন্‌ বরখা কে আশ্॥ ভঃ ৫৭৯

₹)০৮ ১৯১৪০

পবিগা

ডাকত শনতলঞ্মা (২২)

ভাস্করাচার্ধ্য এই ব্যাপারে ব্যথিত হুইয়। বলেন, আমি একখানি গ্রন্থ রন! করিয়া তাহা তোমার 'নামানুারে লীলাবতী নামে অভিহিত করিব। এই গ্রন্থ সময়ের শেষ মুহূর্ত পর্য্যন্ত বিদ্যমান থাকিবে, কীন্তি দ্বিতীয় জীবন তুল্য, তোমার ইহ জীবন ব্যর্থ হইল, কিন্তু এই দ্বিতীয় জীবন চিরস্থায়ী হইয়া সফল হইবে। তাস্রাচার্ধ্য তাহার প্রতিশতি রক্ষা করিয়াছিলেন। তিনি গণিত এবং ব্যবহারিক জামিতি সম্বন্ধে গ্রন্থ রচনা করিয়া তাহা লীলাবতী নামে অভিহিত করেন।

এই বিবরণ কবি বিরচিত উপন্যাস বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে। কিন্তু ইহার মূলে সত্য নিহিত রহিয়াছে আমরা লীলাবতীর কাহিনীতে পুত্রীর মঙ্গলার্থ পিতার ' এঁকাস্তিক আগ্রহ এবং যত্তের পরিচয় প্রাপ্ত হইয়া থাকি। তাক্করাচার্ধ্য কন্তার বৈধব্যহঃখপীড়িত জীবনে শাস্তি আনয়ন উদ্দেশ্যে বিপুল আয়াস সহকারে তাহাকে গণিত শান্ধে পারদশিনী করিয়া তুলিয়াছিলেন। এই শান্ধে তাহার এরূপ দক্ষতা হইয়াছিল যে, তিনি দর্শন মাত্র বৃক্ষের পত্র এবং ফল সংখ্যা নির্ণয় করিতে পারিতেন। গণিত শান্ত্রানতিজ্ঞ ব্যক্তির নিকট ইহা" বিশ্বাসের অযোগ্য বলিয়া বোধ হইতে পারে। কিন্তু 1201807) বিগ্ভার সমাধানে এইরূপ গণনা যে সম্ভবপর, তাহা গণিতশান্দর্শী মাত্রেই অবগত আছেন। লীলাবতী গ্রন্থ পিতা পুত্রীর প্রশ্নোত্তরচ্ছলে লিখিত। এই গ্রন্থ ভারতীয় পাটাগণিত শান্বের শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত রহিয়াছে। আকবরের অন্যতম প্রধান অমাত্য ফেজী পারস্য ভাষায় লীলাবতীর অনুবাদ করিয়া গিয়াছেন। ইংরাজী ভাষাতেও লীলাবতী অনুদিত হইয়াছে অস্কুবাদ কর্তার নাম ডাক্তার টেইলার এবং মিষ্টার কোলক্রক |

জয়মতী

(পতি ভক্তি)

আআপামের নরপতি চক্রধবঙ্জ পিংহের রাঞ্জত্ব কালে দুরাকাজ্ষ স্বার্থপর মন্ীবৃন্দ শাসন সংক্রান্ত সমস্ত ক্ষমতা গ্রাস করিয়া অখণ্ড প্রভু সংস্থাপন করিবার উষ্ভোগী হন এবং তদর্য রাঞ্জাকে হত্যা করিয়। একজন অগপ্রাপ্ত বয়ন্ক রাজকুমারকে রাজপদে অভিষিক্ত করেন! .এই নবীন বাজ প্রঞ্জা মগুলী মধ্যে লরা নামে পরিচিত ছিলেন লরা শব্দের অর্থ বালক

লর1 রাজ ছুব্বল চিত্ত এবং অকর্ণ্য ছিলেন; এজন্য তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক হইয়াও -রাজোর শাপন দণ্ড পরিচালন করিতে অসমর্থ হন; ছুরকাজ্ষ এবং স্বার্থপর মন্তরীবৃন্দই পূর্বব তাহার নামে শাসন, কার্য নির্বাহ করিতেন। তিনি কেবল বিলাস ব্যসনে, প্রজা পীড়নে এবং স্ববংশীরদের ধ্বংস সাধনে নিরত থাকিতেন। তাহার ভোগৈশ্বর্ষ্যের সংস্থান জন্য বহু প্রজার সর্বনাশ সাধিশ হইয়াছিল; তাহার রাজ পদের বিপ্ব নাশ জন্ রাজবংণায়দের রক্তে পুথিবী কলঙ্কিত হইয়াছিল? তাহার ক্রুরাচরণে চারিদিকে আর্তনাদ উঠিয়াছিল

সভী জয়মতীর জীবন নাশ রাঙ্গা লরার অসংখ্য পাপাচরণের _ সধো সর্বাপেক্ষা অধিক মন্তান্তিক। জয়মতীর বৃত্তান্ত পাঠ করিলে _ আমাদের হৃদর যুগপত ঘ্বণায় আকুল প্রীতিতে আগ্নুত হইয়া থাকে 'লরা রাষ্জার অমানুষিক স্বার্থপরত। . নিষ্ঠুরতা দর্শন করিয়া আমর! ক্ষুন্ধ হই, আর জয়মতীর অপূর্ব পতিপ্রেম সহিষুণতা আমাদিগকে মুগ্ধ করে আমরা এখানে জয়মতীর করুণ কাহিনী বিবৃত করিতে প্রবৃত্ত হইলাম

ভাব ্ত শুশতপন্ম! (২৪ )

জয়মতী আসামের রাজকুলে পরিণীতা হইয়াছিলেন। তাহার পতির নাম গদাপাণি। গদাপাঁণির বাহুতে অসীম শক্তি, কিন্তু হৃদয়ে শাস্তি ছিল। তিনি গাহ্‌স্থ্য সুখের প্রয়াসী ছিলেন; রাজ্য, লালসা তাহার হৃদয়ে স্থান প্রাপ্ত হয় নাই। গদাপাণি পর্ণ কুটীরে পত্বী জয়মতী এবং দুইটি শিশু পু লইয়া সুখে সংসার যাত্র! নির্ব্বাহ করিতেন। গদাপাণির অলোকসামান্ত গুণরাজি তাহাকে সাতিশয় লোকপ্রির করিয়াছিল। এই লোকপ্রিয়তাই সর্বনাশের কারণ হইল। রাজা লরা লোকপ্রিয় গদ্বাপাণিকে আপনার রাজপদের কণ্টক স্বরূপ বিবেচনা করিলেন ; তাহার হত্যার জন্য ঘাতক নিযুক্ত হইল।

দশ বার জন রাজান্ুচর গদাপাণিকে হত্যা করিবার জন্য তাহার অনুসরণ করিতে আরম্ভ করিল গঞ্দাপাণি প্রবল বিক্রমে তাহাদের" প্রতিরোধ করিয়।৷ আত্মরক্ষা করিতে লাগিলেন। একবার তিনি সম্তরণ পূর্বক ব্রহ্গপুত্র নদ উত্তীর্ণ হইয়া আততায়ীদের হস্ত হইতে. পরিত্রাণ পাইলেন। রাজান্চরেরা পথে ঘাটে, সর্বত্র তাহার' অগ্ুসরণ করিতে আরস্ত করিল; প্রতি পাদক্ষেপে তাহার জীবন বিদ্ব' সঞ্ছুল হইতে লাগিল। |

এইভাবে দীর্ঘ দিন আত্মরক্ষা কর! অসম্ভব দেখিয়া জয়মতী; তাহাকে কিছু দিনের জন্য আত্মগোপন করিয়া থাকিতে বলিলেন। তেজস্বী বীরপুরুষ গদাপাণি প্রিষ্বতমা পত্বীর এই প্রস্তাবে মন্ীহত হইলেন এবং পুত্র কলত্র অসহায়াবস্থায় পরিত্যাগ পূর্বক স্বীয় জীবন, রক্ষার জন্য পলায়ন করিতে অস্বীকার করিলেন। কিন্তু জয়মতী. ভীহাকে পুনঃ পুনঃ অনুরোধ করিতে লাগিলেন এবং তাহার অনুপস্থিতি কালে রাজার অত্যাচার হইতে আত্মরক্ষার সামর্থ্য জ্ঞাপন, করিলেন। অবশেষে গদাপাণি পত্বীর ব্যাকুল হৃদয়ের অনুরোধ,

(২৫ ) আডাজ্ত ভহ্লম্মট

উপেক্ষা করিতে না পারায় তাহার প্রস্তাবে সম্মত হইলেন ..এবং তগবানের হস্তে-ত্ীপুত্র সমর্পণ করিয়া তাহাদের নিকট হইতে বাসাকুল লোচনে বিদায় গ্রহণ করিলেন। অতঃপর .তিনি নাগ? পর্বতের দুর্গম প্রদেশে লুক্কািত হইয়। রহিলেন।

রাঁজান্ুচরবর্গ বহু অন্ুসন্ধানেও গদাপাণির সংবাদ সংগ্রহ করিতে অসমর্থ হইল; তখন তাহারা নিরুপায় হইয়া তাহার পলায়ন বৃত্তান্ত লরা রাজাকে পরিজ্ঞাত করিশ। তিনি এই সংবাদ পরিশ্রুত হইয়া ক্রোধে জ্বলিয়া উঠিলেন, জয়মতীর নিকট হইতে সংবাদ সংগ্রহ করিবার অভিপ্রায়ে তাহাকে বন্দী করিয়া রাজ সভায় আনয়ন জন্য আদেশ করিলেন রাজাদেশ প্রতিপালিত হইল

বীর নারী জয়মতী রাজসতায় উপস্থিত হইলে সভাস্থ ব্যক্তিবর্শ তাহার তেজস্বিতাবাঞ্জক দীপ্ত মুখমণ্ডল দর্শন করিয়। স্তত্তিত হইলেন। কিন্তু তাহার সেই সতীস্বের জলন্ত প্রভা পাষাণ হৃদয় লরা রাজাকে বিগলিত করিতে অসমর্থ হইল। তিনি ক্ুদ্ধন্বরে জয়মতীকে তাহার স্বামীর অবস্থানের বিষয় প্রশ্ন করিলেন। সত্য- বাদিনী তেজন্বিনী জয়মতী তাদৃশ সঙ্কট কালেও সগর্বে উত্তর করিলেন, আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিব না। বাজপুরুষগণ কখনও প্রলোভন, কখনও বা তয় প্রদর্শন করিতে লাগিলেন। কিন্ত তেজন্থিনী সতী সমস্ত-তুচ্ছ করিয়া আপন সংকল্পে. অটল. রহিলেন। প্রলোভন এবং ভয় প্রদর্শন বিফল হওয়াতে তাহাকে কারারুদ্ধ করিয়। তাহার প্রতি অভ্যাচার করিবার জন্য আদেশ প্রদত্ত হইল। পাপিষ্ঠ রাজানুচরবর্গ তাহাকে উলঙ্গ করিয়া কান্ঠ দণ্ডে বন্ধন পূর্বক বেত্রাঘাত করিতে লাগিল। এইভাবে পক্ষাধিক কাল অতিবাহিত হইল » আদর্শ সতী প্রাণাধিক স্বামীর প্রাণরক্ষার উদ্দেশ্যে সমস্ত যন্ত্রণা. অবিচলিত চিত্তে সহ করিতে লাগিলেন। পত্বীর - প্রতি এই ভীষণ,

ভ্াঞ্জক্ শনভলন্ন] (২৬)

অত্যাচারের সংবাদ শ্রবণ করিয়া গদাপাণি অজ্ঞাতবাসে অস্থির হইগী"পড়িলেন; তিনি আত্মপ্রকাশ করিয়া পত্থীর 'উদ্ধার সাধন মানসে তাহার নিকট ছদ্মবেশে উপস্থিত হইলেন। পতিপ্রাণা সতী ছদ্মবেশ সন্ধেও পতিকে দর্শন মাত্র চিনিতে পারিলেন। তিনি ব্যাকুল হৃদরে তাহাকে অচিরে সে স্থান পরিত্যাগ করিতে ইঙ্গিত করিলেন। মরণাহতা পরীর এই শেষ প্রার্থনা উপেক্ষা করিলে মৃত্যুকালে তাহার মনের শান্তি অন্তহিত হইবে বুঝিতে পারিয়! গদাপাণি আত্মপ্রকাশের সংকল্প পরিত্যাগ করিলেন। তারপর তিনি অতৃপুলোচনে পত্বীর কাতর মুখমণ্ডল শেষবারের জন্য দেখিয়া লইয়! উন্মাদের ন্ঠায় তথা হইতে চলিয়া গেলেন। . তখন পতিপ্রাণ জয়মতী উদ্বেগশৃন্ঠ চিত্তে স্বামীর হিতার্থ জীবনের পূর্ণাহুতি প্রদান করিলেন রাজানুচরদের ষোড়শ দিবস ব্যাপী অমানুষিক উত্পীড়নে তাহার জীবন দীপ নির্বাপিত হইল; পৃথিবীতে পতিপ্রেম সহিঞ্চুতার অপূর্ব দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হইল

এই সময় লরা রাজা এবং তদীয় অমাত্যবর্গের পাপের মাও _ পরিপূর্ণ হইগাছিল।. প্রক্ৃতিপুঞ্জ তীহাদের অত্যাচার উৎপীড়ন আর সহ করিতে না পারিয' ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিল এবং তাহাদিগকে ' বিদুরিত করিয়া গদাপাণিকে রাজপদে অভিবিক্ত করিল তদীয় পুত্র রুদ্র সিংহ জননীর পুণ্য অবদান স্থাফী করিবার অভিপ্রারে তাহার জীবন নাশ স্থলে সুবৃহৎ দীঘিকা খনন করিয়া তাহার তীরে দেবমন্দির নির্মাণ করিলেন। এই দীধিকা এবং দেবমন্দির অগ্ভাপি বিদ্ুমান থাকিয়া পাতিত্রত্য এবং মাতৃভক্তির সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে সর্ধদাধারণের নিকট দীঘিকা জয়সাগর এবং দেবমন্দির জরদোল নামে পরিচিত

স৯/ক১

[গর প্র লিকপাল!

ভ্ডাল্পজ্ হল?! (১৪)

দর্শন আত্মীয় স্বজনের সঙ্গ লাভ জন্য ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন, কিন্তু অশেষ সুখস্থৃতি জড়িত আশ্রয় স্থল এবং স্নেহশীল প্রতিপালকদিগকে . পরিত্যাগ করিতে তাহাদের হৃদয় ভাঙ্গিয়া পড়িতে লাগিল অবশেষে জন্মভূমি দর্শন আত্মীয় স্বজনের সঙ্গলাভ আকাঙ্ষাই জয়লাভ করিল, তাহার! অনার্ধ্যদের নিকট হইতে বাপ্পাকুললোচনে বিদায়গ্রহণপূর্বক স্বদেশের অভিমুখে যাত্রা করিলেন। অনাধ্্যগণ তাহাদের অদর্শনের কল্পনায় ক্রিষ্ট হইয়া পশ্চাদ্বস্তী হইতে লাগিলেন, মিহির খনা৷ তাহা- দিগকে প্রীতিপূর্ণ সান্ত্বনা বাক্যে প্রতিনিবৃত্ত করিলেন তাহারা দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ পূর্বক আপনাদের হৃদয়ানন্দ মিহির খনার মঙ্গল কামন! করিয়া গৃহে ফিরিয়া আসিল।

মিহির খনা আগত হইলে বরাহ পুত্র এবং পুত্রবধূর পরিচয় প্রাপ্ত হইয়া আনন্দে অধীর হইলেন এবং তাহাদিগকে সাদরে গ্রহণ করিলেন। বরাহ পুভ্র মিহিরকে রাজ সভায় উপস্থিত করিলেন ;. মহারাজ বিক্রমাদিত্য তাহার অসাধারণ গুণগ্রাম দর্শন করিয়া প্রীত হইলেন ; রাজাদেশে মিহির সতাবত্ব্ূপে আসন পরিগ্রহ করিলেন। বরাহ নিঞ্জে সভারত্ব ছিলেন; তদুপরি পুত্রের রাজ-প্রসাদ লাভ সাতিশয় আনন্দের কারণ হইল খন রাজ সভার ভূষণ স্বরূপ শ্বশুর স্বামীর আশ্রয়ে বাস করিয়। পরম সুখে দিন অতিবাহিত করিতে লাগিলেন এবং তাহাদের জ্ঞানালোচনায় সহায় স্বরূপিনী হইলেন। কিন্তু শ্বশুর স্বামীর সঙ্গে জ্ঞানালোচনার সুত্র অবলম্বন করিয়াই খনার সুখ রাশিতে কীট প্রবেশ করিল। খনা৷ জ্যোতিষ শাস্ত্রে শ্বশুর স্বামী অপেক্ষা অধিক পারদশিনী ছিলেন। খনা সময় সময় শ্বশুরের গণনা সংশোধন করিয়। দ্রিতে লাগিলেন ইহার ফলে বরাহের হৃদয়ে ঈর্ষযার সঞ্চার হইল

এই সময় একদা বরাহ আকাশের নক্ষত্র সংখ্যা নির্ধারণ জন্য,

(১৫) ভ্ডাল্লত্ ভনতনক্ম?

রাজাদেশ প্রাপ্ত হইলেন। বরাহ নিজে এই গণনা করিতে অসমর্থ হইয়। পুত্র বধু খনাকে উহার ভার অর্পণ করিলেন। খন শ্বশুরের আদেশান্থলারে গণনা পূর্বক আকাশের নক্ষত্র সংখ্যা অবধারণ করিয়া? দিলেন। বরাহ যখ| সময়ে রাজ সভায় গমন পূর্বক মহারাজাকে আকাশের নক্ষত্র সংখ্যা পরিজ্ঞাত করিলেন। মহারাঞ্জ বিক্রমাদ্িত্য. তাদৃশ্ত অদ্ভুত গণনা শক্তি দর্শনে চমত্কৃত হইলেন। তঙকালে খনার বিগ্কার খ্যাতি তাহার শ্রুতি গোচর হইয়াছিল। তিনি খনাকেই গণনাকারিণী বলিম্বী অনুমান করিলেন এবং অনুসন্ধান দ্বারা আপন অনুমান বথার্থ বলিয়া জানিতে পারিলেন। গুণমুগ্ধ বিক্রমাদিত্য মনম্থিনী খনার দর্শন লাভ জন্য কৌতুহলাক্রান্ত হইলেন এবং কৌতুহলের আতিশষ্য বশতঃ হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হইয়া তাহাকে রাজ সতার আনয়ন, করিবার জন্ঠ আদেশ করিলেন। এই আদেশ প্রতিপালন করিলে কুলমর্ধ্যাদা নাশ অবত্ঠন্তাবী দেখিরা বরাহ কিংকর্ভব্যবিমূঢ় হইয়। পড়িলেন। পুত্রবধূর অসাধারণ গুণগ্রাম তাহার দরে ঈরধ্যার সঞ্চার করিয়াছি, এক্ষণ কুলমর্ধ্যাদা নাশ ভয় তাহাকে পীড়িত করিতে লাগিল। বরাহ খনার জিহ্বা কর্তন করিয়া শান্তিলাতের সংকল্প, করিলেন এবং পুভ্র মিহিরকে তদন্ুবূপ আদেশ দিলেন

পিতার তাদৃশ অমানুষিক আদেশ শ্রবণে মিহিরের মাধায় আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়িল, সমস্ত পৃথিবী তাহার পদতলে ঘুণিত হইতে লাগিল বরাহের সংকল্প আদেশের বিষয় খনার কর্ণগোচর হইলে তাহার জীবনে ধিকার উপস্থিত হইল ; তিনি জীবন তার বলিয়া বোধ করিতে. লাগিলেন স্বামীকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “এ জীবন পদ্মপত্র স্থিত জলবিষ্বের ন্যায় অস্থিরঃ পৃজ্যপাদ শ্বশুরের হৃদয় শান্ত করিবার জন্য এই নশ্বর দেহ পাত করিতে পারিলে তাহা পরম ফলো- পধায়ক হইত। অতএব সত্বরে তাহার আদেশ প্রতিপালন কর।”

ভাল্লত লনা. (৯৬)

এই বাক্য শ্রবণ করিয়া মিহির উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন, তাহার বিবেক বুদ্ধি আচ্ছন্ন হইয়া পড়িল ; তিনি খনার জিহ্বা কর্তন করিয় চিরদিনের জন্য আপন নাম কলঙ্ষিত করিলেন খনার তিরোতাবের পর কত কাল,_কত যুগ অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে, অগ্ঠাপি লোকে তীহার বচন আবৃত্তি করিধা থাকে এই সকল বচন অতিজ্ঞতালন্ধ জ্ঞানগর্ভ। তত্সমুদয় পাঠে আমরা বর্ধা কৃষি সম্বন্ধে অনেক তত্ব জানিতে পারি। কিন্বদন্তী বিছুষী খনাকে এই সকল বচনের রচয়িবী রূপে নির্দেশ করিতেছে কিন্তু উজ্জয়িনীবাসিনী বিছবধীর বচন বাঙ্গলা ভাষায় গ্রথিত দেখিগ্বা আমাদের মান সহজেই দ্বিধা উপস্থিত হয় সম্ভবতঃ এই সকল বচন উজ্জ্িনীর ভাষাতেই রচিত হইয়াছিল, তারপর বাঙ্গালী জাতি তৎসমূদয় গ্রহণ পূর্ধক আপনাদের ভাষার রূপান্তরিত করির়াছে। খনার বচনের কতকগুলি হিন্দি মিশিত, এজন্য যে প্রক্রিয়ায় খনার বচন রূপান্তর প্রাপ্ত হইয়াছে, তাহা অনুমিত হইতে পারে। খনার বচন সাহিত্যের হিসাবে সৌষ্ঠবশালী না হইলেও আলোচনার যোগ্য; তাদৃশ আলোচনা গৃহস্থ কৃষক কুলের হিতজনক | * * আমরা এখানে খনার কতিপয় বচন উদ্ধত করিয়া দিলাম |.

যদি বর্ষে অঘনে; রাজা মান মাগনে।

যদি বর্ষে পৌষে টাকা হয় ভুঁমে।

যদি বর্ষে মাঘের শেম, ধন্য রাজার পুণ্য দেশু।

ঘদি বর্ষে ফাগুনে, চিন। কাউন দ্বিগুণে।

চৈত্রে থর থর, বৈশাখে ঝড় পাথর,

জ্যৈষ্ঠ শুখা, আষাঢ়ে ধারা

শস্তের ভার না সহে ধরা।

কর্কট ছরকট, সিংহ শু

কন্া কানেকান।

(৪ স্ডাল্লত ভলত্মন্ন!

খনার তুলনাগ্চ লীলাবতীর আবিরাব কাল আধুনিক। লীলাবতী ভারত ভূষণ ভাঙ্করাচার্যের কণ্ঠা। তাস্করাচার্য্যের হুর্য্য সিদ্ধান্ত নামক প্রসিদ্ধ গ্রস্থের আলোচন। করিয়া পুরাতন্বজ্ঞ বেটলি সাহেব নির্দেশ

বিনা বায়ে তুল। বর্ষে,

কোথা রাখবে ধান। অগহন্‌ ঘে বর্ষে মেঘ,

ধন্য রাজা ধন্য দেশ।

অগহন্‌ দোবর্‌, পুষ, দেড়াঃ

মাধ, সয়াই, ফাগুন্‌ বর্ষে ঘরছছকে ঘাই।

পানি বর্ষে আধা পুষ,+

আধা গেসু আধা ভূষ্‌।

- বর্ষে যদি মকরে।

চাষ হবে টিকরে মাথে যদি বর্ষে দেবা। তবে হয় প্রজার সেবা যদি বর্ষে মাঘের শেবা ধন্য সে রাজা ধন্য সে দেশা ষৌ বর্ষে বৈশাখা রাউ | এক ধান্মে দোবর চাউ 'ন্ক্যেন্ঠে মারে, আষাড়ে ভরে। কাটিয়। মাড়িয়া খরে পুরে জ্যেষ্ঠেতে ফুটে তারা আবাঢে ভর্বে গাড়া অরদরা বরষে সভ- কিছু হা। এক জবাস্‌ পতর্‌ বিন্ভ'1 একো পানি যৌ৷ বরষে সাতি | কুর্মি পহিরে সোপ পাতি

ভাবত লঙ্পন্ন। (৯৮)

করিয়াছেন যে, ভাঙ্করা চার্যয খৃষ্টীয দ্বাদশ শতাব্দীতে আবিভূতি হইয়া- ছিলেন। . কিন্তু এই সম্বন্ধে মতদ্বৈধ আছে কেহ কেহ ভাগ্চরাচাধ্যকে অধিকতর প্রাচীন বলিয়। বিশ্বাস করেন।

স্ুকিলা শ্রাবণ, ধুলিয়া ভাদু্া। আশ্বিন মাসেরে না লাগে কাহ্য় ঝাষ্তিক মাসেরে বা বরস|। ক্ষেত ছাড়ি কিরি পলায় চাষা কাষ্ঠিক মাসেরে ভগ্ডারে পানি। হাটুয়া কাড়িবে বড় গৌনি | আধাট়ে নবমী শুকুল পথ | কি কর শ্বশুর লেখা জোখা যদি বর্ষে যুষল ধারে মাঝ সমুদ্রে বগা চরে যদি বর্ষে ছিটে ফোট]। পাহাড়ে হয় মীনের ঘটা যদি বর্ষে ঝিমি ঝিষি। শন্যের ভরে কাপে মেদিনী হেসে স্ু্য বসেন পাটে। চামার বলদ বিকায় হাটে কোদালে কুড়লে মেঘের গা এলো মেলো৷ বহে বা। কৃষককে বল বাধতে আল। আল্গ না হয় হবে কাল॥ আউয়া বাউয়া বহে বতাম্‌।, তব হোলা বরৃথা কে আশ্‌ বৎসরের প্রথমে ট্শানে বয়। সেই বৎসর বড় বর্ষা হয়

(৯৯) ভাস ভহন্া

তারতললাষভূতা বারানসী ভাস্করাচার্য্ের বাসভূমি ছিল। তদীয় কন্ঠা লীলাবতীর জীবনও এই পবিত্র তীর্থ ক্ষেত্রেই অতিধাহিত হইয়াছিল।

ভাছুরে মেঘে বিপরীত বায়। সে দিন বড় বর্ষা হয় শ্রাবণ ভাঙ্রে বহে ঈশান কাঁধে কোদাল নাচে কুষাণ ভাছুরে মেখে পৃবে বায়। সে দিন বড় বর্ষা হয় জো পৃরবা পৃরবৈয়া পাবে স্থখলে নদিয়া নাউ বহাবে সাওন পাছেয়া মহি ভরে। ভাদৌ পূরবা পথল সরে শ্রাবণে বয় পৃবে বায়। হাল ছেড়ে চাষা বাণিজ্যে যায় আষাঢ় সাওন বহে পৃথিয়া। বেচ বরদ কেন গাইয়া সান কে পুরৌয়া, ভাদন্‌ পচ্চিমা জোর। বরধা বেঁচ স্বামী, চল দেশ কা ওর। পূর্ণ আমাড়ে দক্ষিণে বয়। সেই 'বৎসর বন্যা হয় বেঙ. ডাকে ঘন ঘন। জল হবে শীত্র জান বেও. খন ঘন ডাকিলে শীঘ্র বৃষ্টি হয়। চন্দ্র যগ্ডলের মধ্যে তারা। জল বর্ষে মূষল ধারা

ভক্ত ভতনন্না কি

লীলাবতী বিবাহের অব্যবহিত পরেই বিধবা হন এবং পিতার উৎসাহে গণিত শান্ধ শিক্ষা করিয়া তদালোচনায় সমগ্র জীবন অতিবাহিত করেন। লীঙ্গাবতীর অকাল বৈধব্য সন্বদ্ধে একটি কৌতুকাবহ কিন্বদস্তী লিপিবদ্ধ করিতেছি। তাস্করাচার্য্য গণন! দ্বারা বিবাহের পূর্বেই কন্ঠার অদৃষ্ট লিপি অবগত হন। অকাল বৈধব্য তাহার অদৃষ্টে লিখিত ছিল। একটি শুতলগ্নে বিবাহ ক্রিয়। সম্পন্ন হইলে অকাল টবধব্য অসম্ভব বলিয়।. ভাস্করাচার্য্যের বিশ্বাস ছিল। ভাঙ্করাচার্য্য এই লগ্চে বিবাহ দিয়া প্রিয়তম! কন্ঠার অকাল বৈধবয নিবারণ কৰ্িতে সঙ্কল্প করেন। লগ্ন অবধারণ জন্য বিবাহ সভায় বর কন্যার সন্বথে জল যন্ স্থাপিত হইয়াছিল এই যন্ত্র অর্থাৎ পাত্র

দূর সভা নিকট জল। . নিকট সভা রসাতল পৃবেতে উঠিল কাড়। ডণ্জা ডোবা একাকার পশ্চিমের ধনু নিত্য খরা। পৃবের ধনু বর্ষে ঝরা কাতির পুণিমা কর আশা। খনা বলে শোন্রে চাবা নির্মল মেঘে যদি বাত বয়। রবি খন্দের ভার ধরা না সয় মেঘে করে রাত্রে আর হয় জল। তবে জেন মাঠে যাওয়াই বিফল পৌষের কুয়া বৈশাখের ফল। দিন কুয়া তদিন জল পৌব গরমী বৈশাখে জাড়। প্রথম আবাঢ়ে ভরবে গাড়

(২১ ) স্ডাবত্ ভভতলজ্ম।

জল পূর্ণ ছিল, তাহাতে একটি অতি ক্ষুদ্র ছিদ্র ছিল, এই ছিন্্র পথে পাত্রস্িত সমস্ত জল নিঃশেষ হইয়া বহির্গত হইবার মুহুর্তই সেই শুত- লগ্র ছিল। সতাস্থ দর্শক বৃন্দ সোতস্ুক নেত্রে শুভ লগ্নের প্রতীক্ষ! করিতেছিলেন, কিন্তু দৈবাৎ লীলাবতীর অলঙ্কার হইতে একটি মুক্তা! জল যন্ত্রে পতিত হইয়। ছিদ্র পথ রুদ্ধ করে এবং তজ্জন্ঠ লগ্ন উত্তীর্ণ হইয়। যায়। এইরূপে পুরুষকার বলে অৃষ্ট লিপি খগ্ডনের প্রয়াস

ব্যর্থ হয়।

মাঘ কে গর্মী, জেঠ্‌ জাড়,।

পহিলা পানি ভর্‌ গৈল্‌ তাড়, ঘাঘ, কহে হাম্‌ হোবৌ যোগী কুয়াকা পানি ধোই হে ধোবী

ডাক দিয়ে বলে মিহিরের স্ত্রী শুন-পতির পিতা ভাদ্র মাসে জলের মধ্যে নড়েন বস্থুমাতা রাজ্য নাশে, গো নাশে, হয় অগাধ বান।

হাতে কাঠা গৃহী ফেরে কিন্তে না পান ধান

শ্রাবণ ধুই, বাধুই নহি।

ভাঙ্ব ধুই, কিছু কিছু রহি।

আশ্বিন ধুই, সর্বস্ব যাহি

দিনে জল রাতে তারা।

এই দেখবে শুখার ধার!

বাদল বামুন বান। |

দক্ষিণে পেলেই যান রি

রাত নিবদ্দর দিনকে ছয়] | দুয়া) উড

কহে ঘাঘ, যে বরখা গয়। পপ

কোলি লুক্রি, ফুলে কাশ্‌। চে | বর. ২১

আব্‌ নাহিন্‌ বরখা কে আশ্॥ ভঃ ৫৭৯

₹)০৮ ১৯১৪০

পবিগা

ডাকত শনতলঞ্মা (২২)

ভাস্করাচার্ধ্য এই ব্যাপারে ব্যথিত হুইয়। বলেন, আমি একখানি গ্রন্থ রন! করিয়া তাহা তোমার 'নামানুারে লীলাবতী নামে অভিহিত করিব। এই গ্রন্থ সময়ের শেষ মুহূর্ত পর্য্যন্ত বিদ্যমান থাকিবে, কীন্তি দ্বিতীয় জীবন তুল্য, তোমার ইহ জীবন ব্যর্থ হইল, কিন্তু এই দ্বিতীয় জীবন চিরস্থায়ী হইয়া সফল হইবে। তাস্রাচার্ধ্য তাহার প্রতিশতি রক্ষা করিয়াছিলেন। তিনি গণিত এবং ব্যবহারিক জামিতি সম্বন্ধে গ্রন্থ রচনা করিয়া তাহা লীলাবতী নামে অভিহিত করেন।

এই বিবরণ কবি বিরচিত উপন্যাস বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে। কিন্তু ইহার মূলে সত্য নিহিত রহিয়াছে আমরা লীলাবতীর কাহিনীতে পুত্রীর মঙ্গলার্থ পিতার ' এঁকাস্তিক আগ্রহ এবং যত্তের পরিচয় প্রাপ্ত হইয়া থাকি। তাক্করাচার্ধ্য কন্তার বৈধব্যহঃখপীড়িত জীবনে শাস্তি আনয়ন উদ্দেশ্যে বিপুল আয়াস সহকারে তাহাকে গণিত শান্ধে পারদশিনী করিয়া তুলিয়াছিলেন। এই শান্ধে তাহার এরূপ দক্ষতা হইয়াছিল যে, তিনি দর্শন মাত্র বৃক্ষের পত্র এবং ফল সংখ্যা নির্ণয় করিতে পারিতেন। গণিত শান্ত্রানতিজ্ঞ ব্যক্তির নিকট ইহা" বিশ্বাসের অযোগ্য বলিয়া বোধ হইতে পারে। কিন্তু 1201807) বিগ্ভার সমাধানে এইরূপ গণনা যে সম্ভবপর, তাহা গণিতশান্দর্শী মাত্রেই অবগত আছেন। লীলাবতী গ্রন্থ পিতা পুত্রীর প্রশ্নোত্তরচ্ছলে লিখিত। এই গ্রন্থ ভারতীয় পাটাগণিত শান্বের শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত রহিয়াছে। আকবরের অন্যতম প্রধান অমাত্য ফেজী পারস্য ভাষায় লীলাবতীর অনুবাদ করিয়া গিয়াছেন। ইংরাজী ভাষাতেও লীলাবতী অনুদিত হইয়াছে অস্কুবাদ কর্তার নাম ডাক্তার টেইলার এবং মিষ্টার কোলক্রক |

জয়মতী

(পতি ভক্তি)

আআপামের নরপতি চক্রধবঙ্জ পিংহের রাঞ্জত্ব কালে দুরাকাজ্ষ স্বার্থপর মন্ীবৃন্দ শাসন সংক্রান্ত সমস্ত ক্ষমতা গ্রাস করিয়া অখণ্ড প্রভু সংস্থাপন করিবার উষ্ভোগী হন এবং তদর্য রাঞ্জাকে হত্যা করিয়। একজন অগপ্রাপ্ত বয়ন্ক রাজকুমারকে রাজপদে অভিষিক্ত করেন! .এই নবীন বাজ প্রঞ্জা মগুলী মধ্যে লরা নামে পরিচিত ছিলেন লরা শব্দের অর্থ বালক

লর1 রাজ ছুব্বল চিত্ত এবং অকর্ণ্য ছিলেন; এজন্য তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক হইয়াও -রাজোর শাপন দণ্ড পরিচালন করিতে অসমর্থ হন; ছুরকাজ্ষ এবং স্বার্থপর মন্তরীবৃন্দই পূর্বব তাহার নামে শাসন, কার্য নির্বাহ করিতেন। তিনি কেবল বিলাস ব্যসনে, প্রজা পীড়নে এবং স্ববংশীরদের ধ্বংস সাধনে নিরত থাকিতেন। তাহার ভোগৈশ্বর্ষ্যের সংস্থান জন্য বহু প্রজার সর্বনাশ সাধিশ হইয়াছিল; তাহার রাজ পদের বিপ্ব নাশ জন্ রাজবংণায়দের রক্তে পুথিবী কলঙ্কিত হইয়াছিল? তাহার ক্রুরাচরণে চারিদিকে আর্তনাদ উঠিয়াছিল

সভী জয়মতীর জীবন নাশ রাঙ্গা লরার অসংখ্য পাপাচরণের _ সধো সর্বাপেক্ষা অধিক মন্তান্তিক। জয়মতীর বৃত্তান্ত পাঠ করিলে _ আমাদের হৃদর যুগপত ঘ্বণায় আকুল প্রীতিতে আগ্নুত হইয়া থাকে 'লরা রাষ্জার অমানুষিক স্বার্থপরত। . নিষ্ঠুরতা দর্শন করিয়া আমর! ক্ষুন্ধ হই, আর জয়মতীর অপূর্ব পতিপ্রেম সহিষুণতা আমাদিগকে মুগ্ধ করে আমরা এখানে জয়মতীর করুণ কাহিনী বিবৃত করিতে প্রবৃত্ত হইলাম

ভাব ্ত শুশতপন্ম! (২৪ )

জয়মতী আসামের রাজকুলে পরিণীতা হইয়াছিলেন। তাহার পতির নাম গদাপাণি। গদাপাঁণির বাহুতে অসীম শক্তি, কিন্তু হৃদয়ে শাস্তি ছিল। তিনি গাহ্‌স্থ্য সুখের প্রয়াসী ছিলেন; রাজ্য, লালসা তাহার হৃদয়ে স্থান প্রাপ্ত হয় নাই। গদাপাণি পর্ণ কুটীরে পত্বী জয়মতী এবং দুইটি শিশু পু লইয়া সুখে সংসার যাত্র! নির্ব্বাহ করিতেন। গদাপাণির অলোকসামান্ত গুণরাজি তাহাকে সাতিশয় লোকপ্রির করিয়াছিল। এই লোকপ্রিয়তাই সর্বনাশের কারণ হইল। রাজা লরা লোকপ্রিয় গদ্বাপাণিকে আপনার রাজপদের কণ্টক স্বরূপ বিবেচনা করিলেন ; তাহার হত্যার জন্য ঘাতক নিযুক্ত হইল।

দশ বার জন রাজান্ুচর গদাপাণিকে হত্যা করিবার জন্য তাহার অনুসরণ করিতে আরম্ভ করিল গঞ্দাপাণি প্রবল বিক্রমে তাহাদের" প্রতিরোধ করিয়।৷ আত্মরক্ষা করিতে লাগিলেন। একবার তিনি সম্তরণ পূর্বক ব্রহ্গপুত্র নদ উত্তীর্ণ হইয়া আততায়ীদের হস্ত হইতে. পরিত্রাণ পাইলেন। রাজান্চরেরা পথে ঘাটে, সর্বত্র তাহার' অগ্ুসরণ করিতে আরস্ত করিল; প্রতি পাদক্ষেপে তাহার জীবন বিদ্ব' সঞ্ছুল হইতে লাগিল। |

এইভাবে দীর্ঘ দিন আত্মরক্ষা কর! অসম্ভব দেখিয়া জয়মতী; তাহাকে কিছু দিনের জন্য আত্মগোপন করিয়া থাকিতে বলিলেন। তেজস্বী বীরপুরুষ গদাপাণি প্রিষ্বতমা পত্বীর এই প্রস্তাবে মন্ীহত হইলেন এবং পুত্র কলত্র অসহায়াবস্থায় পরিত্যাগ পূর্বক স্বীয় জীবন, রক্ষার জন্য পলায়ন করিতে অস্বীকার করিলেন। কিন্তু জয়মতী. ভীহাকে পুনঃ পুনঃ অনুরোধ করিতে লাগিলেন এবং তাহার অনুপস্থিতি কালে রাজার অত্যাচার হইতে আত্মরক্ষার সামর্থ্য জ্ঞাপন, করিলেন। অবশেষে গদাপাণি পত্বীর ব্যাকুল হৃদয়ের অনুরোধ,

(২৫ ) আডাজ্ত ভহ্লম্মট

উপেক্ষা করিতে না পারায় তাহার প্রস্তাবে সম্মত হইলেন ..এবং তগবানের হস্তে-ত্ীপুত্র সমর্পণ করিয়া তাহাদের নিকট হইতে বাসাকুল লোচনে বিদায় গ্রহণ করিলেন। অতঃপর .তিনি নাগ? পর্বতের দুর্গম প্রদেশে লুক্কািত হইয়। রহিলেন।

রাঁজান্ুচরবর্গ বহু অন্ুসন্ধানেও গদাপাণির সংবাদ সংগ্রহ করিতে অসমর্থ হইল; তখন তাহারা নিরুপায় হইয়া তাহার পলায়ন বৃত্তান্ত লরা রাজাকে পরিজ্ঞাত করিশ। তিনি এই সংবাদ পরিশ্রুত হইয়া ক্রোধে জ্বলিয়া উঠিলেন, জয়মতীর নিকট হইতে সংবাদ সংগ্রহ করিবার অভিপ্রায়ে তাহাকে বন্দী করিয়া রাজ সভায় আনয়ন জন্য আদেশ করিলেন রাজাদেশ প্রতিপালিত হইল

বীর নারী জয়মতী রাজসতায় উপস্থিত হইলে সভাস্থ ব্যক্তিবর্শ তাহার তেজস্বিতাবাঞ্জক দীপ্ত মুখমণ্ডল দর্শন করিয়। স্তত্তিত হইলেন। কিন্তু তাহার সেই সতীস্বের জলন্ত প্রভা পাষাণ হৃদয় লরা রাজাকে বিগলিত করিতে অসমর্থ হইল। তিনি ক্ুদ্ধন্বরে জয়মতীকে তাহার স্বামীর অবস্থানের বিষয় প্রশ্ন করিলেন। সত্য- বাদিনী তেজন্বিনী জয়মতী তাদৃশ সঙ্কট কালেও সগর্বে উত্তর করিলেন, আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিব না। বাজপুরুষগণ কখনও প্রলোভন, কখনও বা তয় প্রদর্শন করিতে লাগিলেন। কিন্ত তেজন্থিনী সতী সমস্ত-তুচ্ছ করিয়া আপন সংকল্পে. অটল. রহিলেন। প্রলোভন এবং ভয় প্রদর্শন বিফল হওয়াতে তাহাকে কারারুদ্ধ করিয়। তাহার প্রতি অভ্যাচার করিবার জন্য আদেশ প্রদত্ত হইল। পাপিষ্ঠ রাজানুচরবর্গ তাহাকে উলঙ্গ করিয়া কান্ঠ দণ্ডে বন্ধন পূর্বক বেত্রাঘাত করিতে লাগিল। এইভাবে পক্ষাধিক কাল অতিবাহিত হইল » আদর্শ সতী প্রাণাধিক স্বামীর প্রাণরক্ষার উদ্দেশ্যে সমস্ত যন্ত্রণা. অবিচলিত চিত্তে সহ করিতে লাগিলেন। পত্বীর - প্রতি এই ভীষণ,

ভ্াঞ্জক্ শনভলন্ন] (২৬)

অত্যাচারের সংবাদ শ্রবণ করিয়া গদাপাণি অজ্ঞাতবাসে অস্থির হইগী"পড়িলেন; তিনি আত্মপ্রকাশ করিয়া পত্থীর 'উদ্ধার সাধন মানসে তাহার নিকট ছদ্মবেশে উপস্থিত হইলেন। পতিপ্রাণা সতী ছদ্মবেশ সন্ধেও পতিকে দর্শন মাত্র চিনিতে পারিলেন। তিনি ব্যাকুল হৃদরে তাহাকে অচিরে সে স্থান পরিত্যাগ করিতে ইঙ্গিত করিলেন। মরণাহতা পরীর এই শেষ প্রার্থনা উপেক্ষা করিলে মৃত্যুকালে তাহার মনের শান্তি অন্তহিত হইবে বুঝিতে পারিয়! গদাপাণি আত্মপ্রকাশের সংকল্প পরিত্যাগ করিলেন। তারপর তিনি অতৃপুলোচনে পত্বীর কাতর মুখমণ্ডল শেষবারের জন্য দেখিয়া লইয়! উন্মাদের ন্ঠায় তথা হইতে চলিয়া গেলেন। . তখন পতিপ্রাণ জয়মতী উদ্বেগশৃন্ঠ চিত্তে স্বামীর হিতার্থ জীবনের পূর্ণাহুতি প্রদান করিলেন রাজানুচরদের ষোড়শ দিবস ব্যাপী অমানুষিক উত্পীড়নে তাহার জীবন দীপ নির্বাপিত হইল; পৃথিবীতে পতিপ্রেম সহিঞ্চুতার অপূর্ব দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হইল

এই সময় লরা রাজা এবং তদীয় অমাত্যবর্গের পাপের মাও _ পরিপূর্ণ হইগাছিল।. প্রক্ৃতিপুঞ্জ তীহাদের অত্যাচার উৎপীড়ন আর সহ করিতে না পারিয' ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিল এবং তাহাদিগকে ' বিদুরিত করিয়া গদাপাণিকে রাজপদে অভিবিক্ত করিল তদীয় পুত্র রুদ্র সিংহ জননীর পুণ্য অবদান স্থাফী করিবার অভিপ্রারে তাহার জীবন নাশ স্থলে সুবৃহৎ দীঘিকা খনন করিয়া তাহার তীরে দেবমন্দির নির্মাণ করিলেন। এই দীধিকা এবং দেবমন্দির অগ্ভাপি বিদ্ুমান থাকিয়া পাতিত্রত্য এবং মাতৃভক্তির সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে সর্ধদাধারণের নিকট দীঘিকা জয়সাগর এবং দেবমন্দির জরদোল নামে পরিচিত

স৯/ক১

[গর প্র লিকপাল!

ভ্বাদুস্ণন্যান্্ী ভাাজপুত রমণী নারীকুলের অলঙ্কার ন্বরূপ। রাজপুত রমনী একাধারে কুম্থমের মত স্ুকোমল, বঙ্জের ম্ঠার কঠিন অসংখ্য রাজপুত বীরনারী ভারত কণ্ঠে কমনীয় বত্রমালার ন্যার শোতা৷ পাইতেছেন। আমার এই প্রবন্ধে কতিপর' বীরনারীর জীবনের পবিত্র কথা সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করিতেছি

সিন্কুরাণী

৭১১ খৃষ্টাব্দে আরবগণ সিন্ধু বিজয় করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। সিন্ধুর অধিপতি রাজ দ্রাহির আততারী মোপলমানের গতিরোধ জন্য জ্যেষ্ঠ বাজকুমারকে প্রেরণ করিলেন। আরব সেনাপতি মোহাম্মদ কাসিম শৌর্ধ্য বীর্যের অবতার স্বরূপ ছিলেন। তিনি সিন্ধু রাজকুমারের সমস্ত পরাক্রম অতিক্রম করিয়। রাঞ্ধানী আলোরের অভিমুখে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। সিন্ধুরাজ দাহির এই সংবাদ পরিঞ্ত হইয়া পঞ্চাশ হাজার সৈন্য সমভিব্যাহারে আরববাহিনীর সম্মথে আসিয়। দণগ্ডারমান হুইলেন। প্রবল যুদ্ধ আরন্ধ হইল। একটী গোলার আঘাতে রাক্জহস্তী আহত হইল; হস্তী যন্ত্রণা চীৎকার করিরা রাজাকে লইয়া . রণক্ষেত্র হইতে দূরে পলায়ন করিল। রাজার তিরোধানে তর্দীয় সেনাবন্দ নিরুৎসাহ হইয়া পড়িল। রাজা দাহির নিজ্জে আহত হইয়াছিলেন, কিন্তু তিনি তাহা তুচ্ছ করিরা অবিলম্বে অশ্বপৃষ্ঠে আরোহণ পূর্বক যুদ্ধ ক্ষেত্রে উপনীত হইলেন, এবং পুনব্বার প্রবলোৎ্সাহে যুদ্ধ করিতে লাগিলেন কিন্তু বিজয়ন্রী কিছুতেই তাহার প্রতি প্রসন্ন হইলেন না। তিনি অসি হস্তে শক্র নাশ করিতে করিতে রণক্ষেত্রে প্রাণ পরিত্যাগ করিলেন।

জ্ডাল্স ললন্মা (২৮)

ব্রাজার মৃত্যুর পর .মোহাম্মদ কাসিমের সম্মুখে প্রবলতর বিশ্ব আসিয়া উপস্থিত হইল। বিধব! সিন্ধুরাজমহিষী প্রচণ্ড তেজে কাসিমের বিরুদ্ধে অন্ত্রধারণ করিলেন : তাঁহার আহ্বানে বিজিত সিন্ধু সেনাগণ পুনর্বার সম্মিলিত হইলেন; তিনি শক্রর হস্ত হইতে রাজধানী রক্ষার জন্য সমস্ত বন্দোবস্ত করিলেন বীর রমণীর অপূর্ব বীরত্বে শক্রর গতি প্রতিহত হইয়া পড়িল। যোহাম্ম্দ কাসিম অনন্ঠোপায় হইয়া নগর অবরোধ করিয়া রহিলেন। সিদ্ধুর রাজলক্ী চঞ্চল! হইয়াছিলেন। অচিরে নগর মধ্যে অন্লাভাব দেখা দ্িল। এই কারণ ছূর্গবাসীদের _ পরাজয় অবশ্তন্তাবী হইল। সিন্ধুরাণী আততার়ী মোসলমানের হস্তে আত্মসমর্পণ অপেক্ষা সন্ত রমণী এবং' বালক বালিকা সহ অগ্নিকুণ্ডে জীবন বিসর্জজনই শ্রেয়ঃকল্প করিলেন। তাহার অপূর্ব বীরত্ব দর্শনে মুগ্ধ হইয়া রাজপুত সেনাব্ন্দও স্বজাতিস্ুলত অনুষ্ঠানে আত্মবিসঙ্জন করিতে প্রস্তুত হইলেন। রমণী বালক বালিকাগণ স্বহস্তে চিতা সজ্জিত করিয়া! জলন্ত অগ্রিতে জীবনাহুতি. প্রদান করিলেন। অতঃপর রাজপুত বীরগণ পবিত্র সলিলে অবগাহন অন্ঠান্ত ক্রিয়া কলাপ সম্পাদন পুরঃসর পরম্পরের নিকট বিদায় গ্রহণ করিলেন। তখন: নগরের দ্বার উদঘাটিত হইল; রাজপুত বীরগণ অমিত পরাক্রমে শক্র সৈন্য মধ্যে পতিত হইয়। তাহাদিগকে মথিত করিতে লাগিলেন 7 কিন্তু সংখ্যার অল্পত নিবন্ধন একে একে শক্র হস্তে পতিত হইব জীবন বিপর্জন করিলেন। দিম্ধুরাজমহিধী তাহার অন্ুবর্তী রাজপুত বীরগণের অলোকসামান্য বীরকীত্তি .চিরকালের জন্য ইতিহাসের পৃষ্ঠায় লিখিত হইল।

পদ্মিনী

শুষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথমে লক্ষণ সিংহ চিতোরের রাজ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তীয় পিতৃব্য ভীমসিংহ রাঁজকার্য্য নির্বাহ করিতেন। ভীমসিংহের পত্ীর নাম পদ্মিনী। পদগ্মিনী রূপসী কুলরাজ্জী ছিলেন। তাহার অলোকসামান্টি রূপরাশির খ্যাতি ভারতবর্ষের সব্ত্র বিদ্িত ছিল। দিল্লীর সম্রাট ইন্দ্রিয়বিলাসী আলাউদ্দীন তাহাকে হরণ করিবার অভিলাষে চিতোরপুরী আক্রমণ করিয়াছিলেন। তেজস্বী রাজপুতগণ স্বদেশের গৌরব রক্ষাকঙ্সে বীরদর্পে দণ্ডায়মান হইলেন। আলা দীর্ঘকালব্যাপী অবরোধের পরও জয়ন্ত্রী লাভ করিতে অসমর্থ হইয়। প্রচার করিলেন যে, তিনি পন্মিনীকে লাত করিতে পারিলেই স্বদেশে প্রতিগমন করিবেন কিন্তু রাজপুতগণ এই ঘ্বণ্য প্রস্তাব যথোচিত অবজ্ঞা সহকারে প্রত্যাখ্যান করিলেন তখন আলা প্রস্তাব করিলেন যে, তিনি সেই লোক বিমোহিনী রমণীর পুতিবিন্ব দর্পণে দেখিতে পাইলেই স্বদেশে প্রতিগষন করিবেন

অসংখ্য রাজপুতের রক্তপাত দর্শনে পগ্মিনীর নারীহৃদয় সাতিশনন ব্যথিত 'হইয়াছিল। তিনি এই প্রস্তাবে সম্মত হইবার জন্য স্বামী এবং লক্ষন সিংহকে সনির্বন্ধ অন্থুরোধ করিলেন। তাহার আলার মনোবাস্থ। পূর্ণ করিতে স্বীকৃত হইলেন। আলা অতিথিতাবে চিতোরে প্রবেশ করিয়৷ দর্পণে পদ্মিনীর প্রতিবিম্ব অবলোকন করিয়া একেবারে মুগ্ধ হইয়া পড়িলেন। তিনি শিষ্ট ব্যবহারে ভীম সিংহকে পরিতুষ্ট করিরা স্বীর শিবিরাতিণুখে প্রতিগমন করিলেন। তাহার প্রত্যাবর্ভন কালে ভীমনিংহ ভদ্রতার রীতি অনুসারে তাহার সঙ্গে কিরদ্দ,র পর্যগ্ত গমন করিতেছিলেন। তীহারণ নির্জন স্থানে উপস্থিত হইলে বিশ্বাস-

ভাবত হলললন্স! . ৩০.)

ঘাতক আলার পুর্ব নির্দেশ মত কতিপয় সশন্ত দৈন্ত আসিয়া অসতর্ক ভীম পিংহকে বন্দী করিরা শিবিরে লইরা গেল। আলা ভীম মিংহকে হস্তগত করিয়া প্রচার করিলেন যে, পদ্দিনীকে প্রাপ্ত হইলেই তীহাকে- মুক্তিদান করিবেন।

বীরপতির তানৃশ আকম্মিক বিপদে পতিপ্রাণা পদ্মিনী অপহৃহঃথে পতিত হইলেন; কিন্তু দেতেঙ্গধ্ষিনী রমনী প্রাণে স্বামীকে উদ্ধার করিবার জন্য দুর্জর সঙ্কল্প উপস্থিত হইল; তিনি ধীরচিত্তে স্বামীর- উদ্ধারের উপার চিন্ত। কারিতে 'লাগিলেন। অতঃপর' একজন দূত মোপলমানের শিবিরে উপনীত হইব বলিল, আপনি চিতোর “গরীর অবরোধ পরিত্যাগ. করিদেই পন্িনী আপনার হস্তে আয্মপমর্পন করিবেন। তাহার বাগ্যপহচরী রাজসুত মহিলাগণ 'চির বিদার গ্রহ করিবার জন্য তাহার সঙ্গে এই শিবির পর্যন্ত “আগমন করিবেন। যে সকল পরিচারিক! তাহার 'সহগামিনী হইবে, তাহারাও তাহার সঙ্গে আসিবে ইহারা সকগেই অন্ুষ্যম্পগ্ঠা অন্তঃপুরবাসিনী। অতএব, কেহ যেন কৌতুহল পরবশ হইগ্না তাহাদের শিবিকার বন্ত্ উত্তোলন না করে। কামান্ধ আলাউদ্দীন এই প্রস্তাবে সম্মত হইব ভিতর অবরোধ পরিত্যাগ করিলেন

নিরূপিত দিবসে সাত শত. বন্বাবত শিবিক। মোসলমান শিবিরে প্রবেশ করিল। পগ্মিনী সহচরী পরিচারিকাগণের সহিত আগমন করিয়াছেন ভাবিরা৷ আগাউন্দীন উতর হইলেন এবং চিরবিদায়ের পুবের্ব তীম সিংহকে পদ্মিনীর সঙ্গে একবার সাক্ষাৎ করিবার নিমিক্ত অর্ধঘন্টার অবকাশ দিলেন। ভীম সিংহ সেই সুযোগে চিতোর পুরীতে পলায়ন করিলেন। আলা কিপ্নৎকাঁল পরে শিবিকাগুলির নিকট উপনীত হইলেন। এই সকল শিবিকায়. রাজপুত রমণীগণের' পরিবর্তে. রাজপুত বীরগণ লুকায়িত ছিলেন। তাহারা, আলাকে-

€:৩১৯.) ভ্ডাল্সত ুন্ম!

দেখিবা মাত্র প্রবল পরাক্রমে আক্রমণ করিলেন। কিন্তু আলা -সত্যন্ত/ সুরক্ষিত ছিলেন বলিয়া রক্ষা পাইলেন। রাজপুতের এই. চাতুরীতে তাহার রোধাগ্নি প্রদীপ্ত হইয়া উঠিল। মোসলমান সৈন্ত পুনর্ধার হুর্গাবরোধ করিল। “চিতোরের শ্রেষ্ঠ বীরগণ তাহাদের গতিরোধ. করিবার জন্য দণ্ডায়মান হইলেন; এই কাল-সমরে বীব্ুকুলতিলক- গোরা তদীয় দ্বাদশ বৎসর বয়স্ক ত্রাতুস্পুত্র বাদল লোকাতীত পরাক্রম প্রদর্শন করিয়। সকলকে চম২কৃত করেন। (১) তুমুল যুদ্ধে রাজপুত বীরগণ দলে দলে প্রাণ পরিত্যাগ করিলেন। বিয়লপ্মী আলার কণ্ঠে বিজয়মাল্য অর্পণ. করিলেন। কিন্তু'-আল! রাজপুত জাতির অপম, সাহস বীরত্ব :দেখিয়া বিহ্বল হইলেন এবং নিজ পক্ষের বহু সৈন্য. বিনষ্ট হওয়াতে যুদ্ধ হইতে বিরত.হইয়। দিল্লীতে প্রতিগমন করিলেন। মোসলমান সেনার তিরোভাবে রাঙ্পুতগণ শান্তি লাভ করিলেন, এবং যুদ্ধের ক্ষতি পূরণে প্রবৃত্ত হইলেন কিন্তু সে ক্ষতি পুর্ণ হইতে না. হইতেই আলাউদ্দীন বিপুল বাহিনী সহ পুনর্বার চিতোরপুরী আক্রমণ. করিলেন শক্রর পুনরাগমনে বীরশ্রেষ্ঠ রাজপুতগণ প্রবল তেক্গে অসি হস্তে তাহাদের সন্মুধীন হইলেন। তুমুল যুদ্ধ হইতে লাগিল ।. একদিন নিশীথকালে রাণা গভীর নিদ্রান্ন নিমগ্ন ছিলেন, এমন সময়

0 এইযুদ্ধে বীরবর গোর] প্রাণ পরিত্যাগ করেন, বাদল ক্ষত বিক্ষত শরীরে. গৃহে প্রতিগমন করেন। তাহার পিহৃত্যপন্্ী তাহাকে একাকী ফিরিতে দেখিয়া বুঝিতে পারিলেন যে, তদীয় পতি ফুন্ধক্ষেত্রে অনন্ত নিপ্রায় শয়ন করিয়াছেন তিনি পতির অকাল মৃত্যুতে অত্যন্ত শোকাম্িত হন। কিন্ত আপন শোকবেগ রুদ্ধ করিয়া তাহার হৃদয়দেবতা কিরূপ বীরত্ব প্রদর্শন করিয়াছিলেন, তৎসম্বন্কে প্রশ্ন করেন। বাদল একে একে পিতৃব্যের অলৌকিক বীরত্বের বর্ণনা করেন তিনি পতির বীরত্ব গাথা শ্রবণ করিয়া সাতিশয় প্রীতিলাভ করেন; তারপর অবলস্ত- আম্িকুণ্ডে আত্মবিসর্জন করিয়া ইহ সংসারের সকল জ্বালা যন্ত্রণা বিস্মৃত হন।

ভ্ডাব্রত হলতমন্সা (৩২)

তিনি শুনিতে পাইলেন; কে যেন্‌ গম্ভীর কে বলিতেছে, “মৈ ভূখা হু”। তিনি শব্দের দিকে লক্ষ্য করিয়া এক আশ্যর্ধ্য দৃশ্য দেখিলেন। চিতোরের অধিষ্ঠাত্রী দেবীর তীষণমৃত্তি তাহার নয়নপথে পতিত হইল। দেবী বলিয়! উঠিলেন, “আমি রাজবলি চাহি+” দ্বাদশ জন রাজকুমার চিতোর রক্ষাকল্পে আত্মবলি না দিলে আর রক্ষা নাই।” দেবীর বাক্যে স্বদেশপ্রাণ রাজকুমারগণ জন্মভূমির রক্ষাকল্পে প্রাণ বিসর্জন করিতে ক্ৃতসন্কল্ন হইলে (১) জ্ঞেষ্ঠান্ুক্রমে একাদশ রাজকুমার একে একে সমর ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইর়। প্রাণ বিসর্জন করিলেন। একমাত্র অজয় সিংহ অবশিষ্ট রহিলেন; তাহার মৃত্যুতে রাজকুল নিশ্ম,ল হইবে? বংশে বাতি দিতে কেহ থাকিবে না বলিয়া রাণা তাহাকে যুদ্ধে গমন করিতে নিষেধ করিয়া স্বয়ং যুদ্ধার্থ উদ্যোগী হইলেন।

একদিকে রাণা লক্ষ্মণ সিংহ স্বং যুদ্ধে গমন করিবার জন্য আরোজনে প্রবৃত্ত হইলেন ; অপরদিকে মোসলমাানের হস্তে অপমানের আশঙ্কার বীররমণী পদ্মিনী এবং অন্ঠান্ত চিতোরবাসিনী জ্বলন্ত পাঁবকে আত্মাহুতি প্রদান পূর্বক ধর্মবলে পাশবশক্তিকে পরাভূত করিতে 'সঙ্কল্প করিলেন।

অগ্নিশিখা সদৃশী রাজপুত রমণী বন্দকে দগ্ধীভৃত করিবার জন্ত অগ্নিকুণ্ড প্রচণ্ড তেজে প্রজ্জলিত হইয়া উঠিল। রাণ! সমর ক্ষেত্রে অবতরণ করিলেন, কিন্তু হৃদয় শোণিত দান করিয়াও চিতোর রক্ষা করিতে অসমর্থ হইলেন। আলা যুদ্ধক্ষেত্রে জয়প্রী লাভ করিলেন, তারপর রক্তসিক্ত পথে ধৃমাচ্ছন্ন চিতোরে প্রবেশ করিয়া চিত্তহারিণী পদ্মিনীর অনুসন্ধান করিতে লাখিলেন।

(১) 105091৩0859 20918197009 00100 06 005 19096 0 10500617009 58019 £০% 00 00 8171083090৩ 50101 06 7551508 0০৪, 2306665 ১০০11009, 1015 00203850506 100 059 05115606009 0019৩,

দেবল! দেবী

বলা দেবী গুজরাটের রাজকুমারী, দুর্ভাগ্যের আবর্তে ঘুণিত হুইরা দিল্লীর সম্রাট সুলতান আলাউদ্দীনের অন্তঃপুরে নীত হন। এখানে তিনি জ্যেষ্ঠ রাজকুমার খিজির খাঁর রূপে গুণে মুগ্ধ হইয়? তাহার পক্ষপাতিনী হন। তাহাদের বিবাহের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। খিজির খার জননী এই বিবাহের বিরুদ্ধবাদিনী হইলেন এবং বাল্য-প্রণয়ের বীজ পুত্রের হৃদয় হইতে উতৎ্পাটন করিয়া ফেলিবার মানসে তীহাদের পরস্পরের দর্শন লাভের পথ রুদ্ধ করিয়া দিলেন। ক্ষীণধারা আ্রোতন্বতী গন্তব্য পথে বাধা প্রাপ্ত হইলে কুলপ্লাবনী মৃষ্তি ধারণ করিয়া থাকে! রাজকুমারের প্রত্যেক কার্ধো এরূপ সুগভীর মর্ম বেদনা - প্রকাশ পাইতে লাগিল যে, রাজমহিধীর অন্তঃকরণও অবশেষে তাহাতে দ্রবীভূত হইল। তিনি তাহাদের বিবাহের অনুমতি প্রদান করিতে বাধ্য হইলেন। কিন্তু এই প্রেমিক প্রেমিকা দীর্ঘকাল নিরবচ্ছিন্ন সুখ সন্তোগ করিতে পারেন নাই। রাজনীতির কুটিল চক্রের আবর্তনে খিঞ্জির খা পিতৃহ্ৃদরর হইতে বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়েন এবং তাহার রোধাপ্নিতে প্রণরিষুগলের সমস্ত স্থ শান্তি তক্মীভূত হইয়া যায়। মন্ত্রী মালিক কাকুরের চক্রান্তে রাজাজ্ঞ, লঙ্ঘন দোবে খিজির খা! গোরালিয়ারের ভীষণ ছুর্গে চিরবন্দী হইলেন। এই তীষণ কারাগারেও দেবলা দেবী তাহার সঙ্গিনী ছিলেন। এই হুর্বহ অবস্থার সাধবী প্রণয়িনীর সপ্রেম সেব। শুশ্রবাই খিজিরের একমাত্র সান্ত্বনার হেতু হইরাছিল।

১৩১৬ খৃষ্টাব্দে সুলতান আলাউন্দীন ইহলীলা সংবরণ করিলে তাহার সর্বকনিষ্ঠ পুত্র ওমর মন্ত্রী মালিক কাছুরের সহাপ্রতার পিতৃ

পিংহাদনে আরোহণ করিলেন মালিক কাকুর তাহাকে নিষ্কণটক ৩--

ভাত ভনতন্ন। (৩৪ )

করিবার জন্য জোষ্ঠ রাজকুমার খিজির খার ছুই চক্ষু উৎপাটন করিয়া ফেলিলেন। এই ঘটনার কির্ুদ্দিবস পরেই আলাউদ্দীনের ক্রীত দাস ও: শরীররক্ষকগণ মালিক কাফুরকে হত্যা এবং ওমরকে সিংহাসনচুুত করিয়া সমাটের চতুর্থ পুত্র কুতবউদ্দীনকে রাজসিংহাপন প্রদান করিল। ইন্ট্রিয়পরবশ কুতব রাজসিংহাসনে আরোহণ করিয়া। দেবল। দেবীর অপূর্বরূপলাবণ্যের জন্য সতৃষ্ণ হইয়া উঠিলেন। দাধবী রমণীর নির্মল চরিত্র তাহার পাপলালসা সংযত করিতে পারে নাই কুতব আপনার পাপাতিলাষ চরিতার্থ করিবার অভিপ্রায়ে দেবল! দেবীকে দিল্লীতে আনয়ন করিবার জন্য লোক প্রেরণ করিলেন। খিজির খার বদন মণ্ডল ক্রোধে ক্ষোভে ভীষণ মৃত্তি ধারণ করিল, তিনি অবজ্ঞাভরে ভৎ্সন৷ পূর্ণ উত্তর দিয়! রাজদুতকে বিদায় করিয়া দিলেন ।, কুতব আপনার পাপ সঙ্কল্পে ব্যর্থকাম হইয়! ক্রোধে জলিয়। উঠিলেন। তিনি সাদি নামধেয় জনৈক ছুরাত্বীকে গোয়ালিয়ারের ছুর্গে প্রেরণ করিলেন সাদি তথায় উপনীত হইয়া খিজির খাকে অকম্মাৎ আক্রমণ করিল নরঘাতকের তরবারি উখিত হইলে পতিপ্রীণা. দেবলা দেবী ব্যাকুল হৃদয়ে আপনার সমস্ত শক্তি ঘনীভূত করিয়া. খিজির খাকে বক্ষে চাপিয়া ধরিলেন। কিন্তু হায়! প্রেমদীপ্ত সতীতেজ সেই কঠোর হৃদয় নির্মম নরহস্তাকে দ্রবীভূত করিতে পাবিল না।. তাহার আসি সঞ্চালনে দেবীর হস্ত দয় ছিন্ন বদৃন মণ্ডল ক্ষত বিক্ষত হইয়া পড়িল। তাহার পর খিজির খার ছিন্ন মুণ্ড ভূতল চুম্বন, করিয়া রক্তধারায় পৃথিবী কলঙ্কিত করিল।

মীরা বাই

স্ীরা বাই “অতুলনা ভারত ললন1।” মীরা সুন্দরীকুলরাজ্জী ছিলেন! তাহার অপরূপ সৌন্দর্যের খ্যাতি সর্বত্র বিদিত ছিল। কিন্ত অপরূপ রূপরাশি তাহার অমরত্বের কারণ নহে? মীরার অপাধারণ ধর্্মান্ুরাগ এবং ভগবস্তক্তিই তাহাকে চিরম্মরণীয়া করিয়। রাখিয়াছে ) মীরা বাই যোধপুরের বাঞ্জকুষারী, শিতা মাতার স্নেহ পুত্তলি ছিলেন মীরা বাই আশৈশব সুৈশ্বর্য্যে পরিবদ্ধিত হইয়াছিলেন। কিন্তু রাজপুরীর অশেষ তভোগবিলান একদিনের জন্যও তাহার জীবন কলুধিত করিতে পারে নাই। টৈশব কালেই মীরার কোমল প্রাণে ধর্মবীজ উপ্ত হইরাছিল। বালিক। মীর! নানাবিধ মৃত্তি লইয়। ক্রীড়া। করিতেন, কিন্তু রুষণ মু্তিই তাহার সমধিক প্রির ছিল। মীরা সর্বদা! এই মুষ্তি সঙ্গে সঙ্গে রাখিতেন, কখন তাহার সহিত ক্রীড়া! করিতেন, কখন তাহার সমক্ষে সুমধুর গান গাহিতেন, কখনও বা তাহাকে সন্বোধন করিয়া কথা কহিতেন। এই ভাবে প্রেম তক্তিতে তাহার বাল্য জীবন বদ্ধিত হইয়াছিল

চতুর্দশ বত্সর বয়সে মীরা উদরপুরের রাজকুমার কুস্তের সহিত পরিণয় পাশে আবদ্ধ হইলেন। শ্বশুরালয়ে যাত্রার পূর্বে মাতা তাহাকে আদর করিয়া জিজ্ঞাপা করিলেন, মীরা, তোমার সঙ্গে কি কি সামগ্রী দ্বিব? এই প্রশ্নোত্তরে তিনি কহিলেন, কষ্ণ যুদ্তিটি আমার সঙ্গে দেও, অন্য কোন সামগ্রী আমার পক্ষে নিশ্পরয়োজন মীরা বাই রষ্ণমূত্তি লইয়। শ্বশুরালয়ে আগমন করিলেন ক্রমশঃ তাহার কৃষ্ণ প্রেম ধর্মান্ুরাগ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইতে লাগিল | মীরা বেশ তূষা পরিত্যাগ করিলেন, সাংসারিক বিষয়ে ওঁদাসিন্য প্রকাশ করিতে লাগিলেন

ভ্ডাক্কত তশঙতলন্না (৩৬)

তিনি নূতন নৃতন সঙ্গীত রচনা.করিরা আবাধ্য দেবতা শ্রীক্খের নামে উৎসর্গ করিতেন, সর্বক্ষণ তাহার প্রেম ভক্তিতে মত্ত থাকিতেন, তাহার নাম জপ করিয়াই চরিতার্থ হইতেন। |

মীর! বাইর শ্বশুরকুল শৈব ধর্মাবলর্থী ছিলেন, তীহারা সুখৈশ্বর্যয ভোগ বিলাস ভাল বাসিতেন। মীরার শ্রীকুষ্থান্থরাগ এবং বিলাস বিমুখতা তাহাদের নিকট পাতিশগ্ব অগ্লীর্তিকর হইল? তাহারা তাহার সাধন ভজনে বাধা জন্মাইতে প্রবৃত্ত হইলেন ইহাতে তাহার প্রেম ভক্তি নিরুদ্ধ নির্বরিণীর মত সমধিক উদ্দৃপিত হইরা উঠিল। তখন মীরার শ্বশুর কুল নিরুপার হইয়া তাহাকে রাঞ্জভবন হইতে দূরীকৃত করিয়া অন্তস্থানে আবদ্ধ করিয়া রাখিলেন।

মীরাবাই নিচ্ন হ্ঠানে নির্বাসিতা হইর। সাধন তঙ্গনের অধিকতর সুবিধা প্রাপ্ত হইলেন তিনি নির্ধাদন দণ্ড তুচ্ছ করিয়া কাপ্রমনো- বাক্যে সাধন তঞ্জন করিতে আরম্ভ করিলেন। মীরা তথায় সুদৃশ্ঠ মন্দির নির্মাণ পূর্বক কৃষ্ণ মৃত্তির প্রতিষ্ঠা করলেন, তাহার নামে আক হইয়! দলে দলে সাধু সজ্জন এই ক্ষুদ্র মন্দিরে আগমন করিয়া সাধন ভজন করিতেন। বস্ততঃ মীরার কৃষ্চমন্দির পুণ্যক্ষেত্রে পরিণত হইরাছিল। একদা রাজকুমার কুম্ত মীরাকে দেখিবার উদ্দেশে আগমন করিলেন। তংকালে মীরা নৃত্যগীত ছারা স্বীপ্ধ আরাধ্য দেবতার আরতি করিতেছিলেন। রাঞ্কুমার এই দৃশ্ত দর্ণন করিয়া কুপিত হইরা৷ উঠিলেন, এবং মীরাকে বধ করিবার জন্য তরবারি কোধোনুক্ত করিলেন, কিন্তু তগবং কপার ত্যাহার প্রাণ রক্ষ! পাইল। অতঃপর মীরা দেশ পরিত্যাগ করিতে আদিষ্ট হইলেন। তিনি এই আদেশ প্রাপ্ত হইরা আপন ইষ্ট দেবতার লীলা নিকেতন বৃন্দাবনে গমন করিলেন। এইস্থানে তাহার হদর প্রেম তক্তিতে সুগন্ধ কুম্থমের মত বিকশিত হইয়া উঠিল, তাহার সৌরতে চারিদিকৃ

(৩৭ ) ভ্ডাল্লত হব্সা

পরিপূর্ণ হইল) মীরার পুণ্যকথা শত শত কে বিঘোধিত হইতে লাগিল মীরার এই বিষল যশোরাশি কুম্তকে আরুই করিল তিনি মীরার দর্শন মানসে ছন্মবেশে বৃন্দাবনে উপনীত হইলেন

অতঃপর পতি 'পত্রীতে মিলন হইল তাহারা মিলিত হইয়া মনের আনন্দে সাধন ভজন কারতে লাগিলেন রানা কুস্ত কাব্য রচনায় সুদক্ষ ছিলেন। তাহার রচনা ভাবের প্রাচুর্য্যে ভাষার সৌন্দর্য্য অতি রমণীর ছিল। মীরারও কবিত্ব শক্তি ছিল। বঙ্গীয় কাব্য-কাননের কোকিল জরদেব মীরার সমসাময়িক ছিলেন রাজপুতনার ধর্মপ্রাণ রাজদম্পতি সর্ধদা জঘদেবের কোমল কান্ত পদাবলী পাঠ করিতেন। রাণা কুম্ত গীতগোবিন্দের উত্তর ভাগ লইয়া একখ্যনি কাব্য রচন|। করিয়াছিলেন। মীরাবাইও অসংখ্য কবিতার রচয়িত্রী। তনীয় উপাস্ত দেবতার উদ্দেগ্ে এই সকল কবিতা রচিত হইয়াছিল। তাহার সুমধুর পদাবলী পাঠে আজও অনেক তক্তের হৃদয়ে আনন্দের উদ্্বাস উঠে

মীরাবাই ভারতের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত সমস্ত তীর্ঘক্ষেত্রে পর্যটন করিয়াছিলেন তিনি কোমলপ্রাণ অবলা হইয়াও তগবস্তক্তির বলে পথের সমস্ত ক্লান্তি পরিশ্রম সহ্হ করিতেন। বস্ততঃ ভ্রমণোপলক্ষে তাহার চরিত্রে পুরুষোচিত সাহস; উৎসাহ কষ্টসহিষ্ুুতা পরিদৃষ্ট হইত। তীর্ঘক্ষেত্রে উপনীত হইলে মীরার হৃদয়ের নিভৃত কন্দর হইতে ভগবস্তক্তি শতমুখে ফুটিয়া বাহির হইত ) তন্মদলক নানা অনুষ্ঠানে চারিদিক উজ্জল শ্রী ধারণ করিত। এই সকল অন্ুষ্ঠানকালে মীরার অসাধারণ তাবোন্ত্ততা দেখিয়। লোকে স্তস্তিত হইত। |

এই অংশ জমতী কুমুদিনী দেবীর প্রবন্ধ হইতে সক্কলিত।

তারাবাই

জাজপুত বীরগাথ বীর্ধ্যবান পৃথ্বীরাজ বীরবাল! তারার কীন্তি কলাপে অলঙ্কত রহিয়াছে ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বাক স্ুরতন নামক একজন সত্যসক্কল্প রাজপুত বীর বেদনোরের সামস্তের পদে প্রতিষ্ঠিত হন। বায় স্ুরতন চিরবিখ্যাত সোলাঙ্কি বংশ সম্ভৃত ছিলেন। বেদনোরের সামস্তের পদে প্রতিষ্ঠিত হইবার পূর্বে তিনি মধ্য ভারতের অন্তর্গত তক্কটোড়ার অধিপতি ছিলেন। লিল্লা নামক একজন আফগান সেনাপতি তাহাকে বিতাড়িত করিয়া তঙ্কটোড়। অধিকার করেন। স্ুরতন স্বরাজ্যচ্যুত হইয়া মেবারের অন্তর্গত আরাবলীর পাদদেশস্থিত বেদনোরে আসিয়া বাদ করিতে প্রবৃত্ত হন। চিতোরের রাণা রায়মল্প সুরতনকে বেদনোরের সামন্তের পদে প্রতিষ্ঠিত করেন।

এই রায় স্ুরতনের কন্ঠার নাম তারাবাই। তারা বাল্যকাল হইতেই অশ্বচালন! ধনুর্কিগ্ভায় পারদর্শিনী হইয়া উঠেন যে সময় তারা কৈশোর যৌবনের সন্ধিস্থলে দণ্ডায়মান, তখন রায় স্থুরতন টোড়ার উদ্ধারসাধন জন্য সমরানল প্রজ্জলিত করেন। বীরবাল। তারাবাই যোদ্ধবেশ ধারণ করিয়া বণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন। রাজপুত সৈন্য বিপুল পরাক্রমে যুদ্ধ করিল, কিন্তু যুদ্ধে পরাজিত হইয়া ফিরিয়! আসিতে লাগিল।

এই প্রত্যাবর্তন কালে অশ্বারোহিণী সৌন্দর্্যলীলাময়ী তারাবাই চিতোরের তৃতীয় রাজকুমার জয়মল্লের দৃষ্টিপথে পতিত হন। সে অতুল রূপরাশির প্রথম দর্শনেই জয়মল্প একেবারে বিমোহিত হইয়। পড়েন ; তিনি তারার পাণিপ্রার্থ হন। রায় সুরতন উত্তর করিলেন,

(৩৯ ) ভাবত তশতশজ্ম!

টোড়ার উদ্ধার সাধন কর, তারা তোমার কণ্ঠে বরমাল্য অর্পণ করিবে জয়মল্প এই প্রস্তাবে সম্মত হইয়া টোড়ার উদ্ধার সাধন জন্য সমরক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইলেন, কিন্তু শক্র হস্তে পরাজিত হইয়া ফিরিয়া আসিলেন। তারার তরঙ্গিত রূপরাশি তাহাকে একেবারে বিমোহিত করিয়াছিল, এজন্য তিনি প্রতিজ্ঞা রক্ষা করিতে অসমর্থ হইয়াও তারাকে অঙ্কলঙ্গমী করিবার জন্য বল প্রকাশে উদ্ধত হইলেন রায় সুরতন এই অবমাননার প্রতিশোধ লইবার জন্য জয়মল্লকে হত্যা করিলেন জয়মল্লের হত্যা! সংবাদ ক্রমে রাণ! রায়মল্লের কর্ণ গোচর হইল তিনি দীরভাবে অগ্ঘোপান্ত শ্রাবণ করিয়| বুঝিতে পারিলেন যে, রাজকুমার সোলাঙ্কি বংশের চিরোজ্জল নামে কলঙ্ক লেপন করিতে উদ্যত হইয়া আপনার ছৃষ্ষার্যযের প্রতিদল প্রাপ্ত হইয়াছেন। তখন তিনি লৌকাতীত মহাপ্রাণতা প্রদর্শন করিয়া অপরাধী পুত্রের 'হুত্যাকারী স্থরতনকে তাহার তেজস্িতা সৎসাহসের জন্য পুরস্কৃত করিলেন

চিতোরের চতুর্থ রাজকুমার পুরশ্থীরাজ রায় স্ুরতন তদদীয় বীর- 'বালার অসাধারণ তেজস্থিতা দেখিয়া আকৃষ্ট হইলেন। তিনি সে রমণীরত্নের অভিলাধী হইর] শক্রহস্ত হইতে টোড়ার উদ্ধার করিবার নিমিত্ত সন্কল্প করিলেন পৃর্থীরাজ শৌর্্য বীর্যের আধার ছিলেন কাহার অপাধারণ বীরত্বের বিষয় তারাবাই সম্যক পরিজ্ঞাত ছিলেন .এ কারণ তিনি তাহার পক্ষপাতিনী হইয়া উঠিলেন। তিনি পিতার অনুমতি গ্রহণপূর্ধক টোড়ার উদ্ধার সাধনকল্পে প্রশ্থীরাজের সহিত সম্মিলিত হইলেন তীহারা পাঁচশত রাজপুত সৈন্স সহকারে টোড়ার অভিমুখে ধাবিত হইলেন। পুণ্বীরাঙ্গ শক্রপুরীতে উপনীত হইয়! দেখিলেন, মহরমের উৎসব আরম্ভ হইয়াছে, নগরবাপীরা উৎসবে অত্ত হইয়া! অসতর্ক হইয়1 পড়িয়াছে কৌশলী বীর, সেনাদল ছুর্মের

ভাত লঙ্পনা . (৪)

বাহিরে রাখিয়া মাত্র বীরবাপা তারাবাই আপনার চিত্রপহচর সেনগড়ের সামস্তকে সঙ্গে লইয়া ছুর্গীতান্তরে প্রবেশ করিলেন ১. তারপর রাজপ্রাসাদের সম্মুখে উৎসবরত জনসজ্ঘের সঙ্গে মিশিয়া, গেলেন। এই সময় আদগান অধিপতি উত্সবে যোগ দিবার জন্য প্রাসাদ হইতে বহির্ধত হইলেন। তিনি জনপঞ্জের মধ্যে তিন জন অপরিচিত লোক দেখিয়া! তাহাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করিলেন।, কেহ তদীয় প্রশ্নের উত্তর দিবার পূর্বেই পৃথ্বীরাঙ্জের বর্ষা তারাবাইর ধনুব্বাণ তাহার ইহলীলার শেষ করিয়া দিল। এই আকস্মিক বিপদপাতে আফগানেরা কিরৎকালের জন্য একেবারে কিংকর্তব্য- বিূঢ় হইয়) পড়িল। পুরথ্থীরাজ এবং তদীয় সহচর সহচরী সেই অবসরে ছৃর্গের বহিদ্ধশীরের নিকট আগমন করিলেন। এই সময় এক বিপুলকার হস্তী তাহাদের পথ অবরোধ করিরা দাড়াইল। তারাবাই অনম সাহসে তরবারির আঘাতে হস্তীর শুগড ছিন্ন করিয়। ফেলিলেন। অতঃপর তাহার] নিরাপদে স্বসৈন্যের সহিত মিলিত হইলেন। ইহার পর মুকূর্তেই আফগানের! তাহাদিগকে প্রবল পরাক্রমে আক্রমণ করিল। কিন্তু পরাজিত হইয়া পলায়ন করিল। অতঃপর বীরবাল৷ তারাবাই বিজয়ী পৃথ্বীরাজের কণ্ঠে বরমাল্য অর্পণ করিয়া বীরজারা হইলেন। নবীন দম্পতি স্নিম্্ল আনন্দ নীরে তাদমান হইলেন কিন্তু তাহাদের এই স্থখের দিন অচিরেই অতীশ হইল। শক্রর বিধ প্ররোগে পৃথ্বীরাঞ্জ অকালে কালগ্রাসে পতিত হইলেন। পতিগতপ্রাণা তারাবাই প্রাণপতিসহ জ্বলন্ত চিতায় জীবন বিপঞ্জন করিবার জন্য সঙ্কল্প করিলেন। চিতা সজ্জিত হইল, অগ্নি, ধু'ধু করিয়া অলিয়া উঠিয়া পৃতচিতা আবরিত করিল, “তন্মসাৎ মরদেহ-_চিতা নির্বাপণ, ধুলায় মিশিল ধূল! জীবনে জীবন ।”

ধাত্রী পান্না

স্পাদশাহ হুমায়ূনের অনুগ্রহে (১) পুনর্বার রাজ্যাধিকারী হইয়া ুষ্টবুদ্ধি রাণ। বিক্রমঞ্জিৎ ক্রমশঃ অত্যাচার এবং উতৎপীড়নের মাত্রা বৃদ্ধি করিয়! মিবারের উজ্জল রাজপদ কলগ্ষিত করিতে লাগিলেন অবশেষে সন্থান্ত সদ্দারগণ উত্তেজিত হইয়। তাহাকে সিংহাপনচাত করিয়! তদীয় কনিষ্ঠ ভ্রাত। অপ্রাপ্তবয়স্ক উদয়সিংহকে রাজপদে অভিষিক্ত করিলেন ; উদগ্নসিংহের বয়ঃপ্রাপ্তি পর্য্যস্ত তদীয় খুল্পতাতের দাপীপুল্র বনবীরের হস্তে রাজ্যশাসনের ভার অর্পিত হইল

শাসন ক্ষমতার আস্বাদ প্রাপ্ত হইয়া] বনবীর ক্ষমতালোলুপ হইলেন, রাজসিংহাসূনের এশ্বর্যয তাহার জদরে দুরাকাজ্ষা জাগ্রত করিয়া তুলিল। বনবীর শিশু উদর়সিংহকে হঙা। করিনা আপনার রাজত্ব অব্যাহত রাখিবার জন্য কৃতসঙ্কল্প হইলেন। একদা গভীর রাত্রিতে একজন বিশ্বস্ত অন্ুুচর আসিয়৷ উদরপিংহের মাতৃ সদ্রশী ধাত্রী পান্নাকে সংবাদ দিল, ছুর্ধত্ত বনবীর নিষ্পাপ শিশু উদরিংহকে হত্যা করিবার জন্য আগমন করিতেছেন এই ছুঃসংবাদ শ্রবণ করিয়া তাহার নারা হৃদয়ে অপূর্ব মহাপ্রাণতা উখিত হইল। তিনি বাপ্ারাওর পবিজ্র কুল রক্ষা করিবার অভিপ্রারে অগতপুব্ব স্থর্থত্যাগ করিতে সঙ্কল্প করিলেন ধাত্রী নিঃশব্দে ফলের ঝুঁরিতে সুগ্তিমগ্র উদরসিংহকে রাখিয়া তাহা আতা দ্বার আবৃত করিলেন এবং তারপর সে ঝুরি

(১ গুজরাটের পাঠান অধিপতি বাহাছবর শাহ রাণা বিক্রঘজিৎকে পরাজিত করিয়া মিবার অধিকার করেন | রাজমাতা কর্ণবতী মিবারের উদ্ধার সাধন জদ্য দিল্লীর পাদশাহ হুমায়ূনের নিকট রাখী প্রেরণ করিয়াছিলেন | হুমায়ূন এই রাখ গ্রহণ করিয়া হৃদয়ের মহত্ত্ব প্রকাশ করেন; তাহার বাছবলে বিক্রমজিৎ পুনর্্বার. স্বরাজ্যাধিকার লাভ করিতে সমর্থ হন

'ভ্ডাব্রত্ত ললন্স! (৪২ )

এবিশ্বস্ত অনুচরের যোগে নিরাপদ স্থানে পাঠাইঘা! দিলেন | কিয়ৎক্ষণ পরে বনবীর অসি হস্তে আগমন পূর্বক পান্নাকে উদয়সিংহের বিষয় জিজ্ঞাসা করিলেন। পান্নী নীরবে অধোবদনে স্বীয় নিদ্রিত শিশুপুত্র চন্দনকে অঙ্গুলি সঙ্ষেতে দেখাইয়া! দিলেন। বনবীর উদয়সিংহ বোধে হস্তের অসির আঘাতে চন্দনের হত্যাসাধন করিষা চলিয়া গেল। “নিশ্চল দেবীপ্রতিমার ন্যার দাঁড়াইয়া পান্না! সব দেখিলেন 7” পৃথিবীতে অসামান্য স্বার্থত্যাগ অলৌকিক তেজস্থিতার অক্ষয় দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হইল।

হর্গাবতী

ভুগাণী দুর্গাবতী আকবর শাহের সমসামঘ্বিক। এই প্রাতঃম্মরণীয়া বার নারী বুন্দেলখণ্ডের প্রাচীন রাজধানী মাহোবার অধিপতির কন্তা দুর্গাবতী অসাধারণ রূপবতী ছিলেন। নারীজনোচিত কমনীয় শুণরাজি. তাহার ভূষণ স্বরূপ ছিল। গড়মণ্ডলের ভূপতি দলপতশাহ “এই রমণীরত্বের পাণিপ্রার্থ হন। গড়মণ্ুল রাঞ্য পবিভ্রসলিল৷ নর্মদার তীরে প্রতিষ্ঠিত এবং সমৃদ্ধশালী বলিয়া খ্যাত ছিল। কিন্তু উহার রাজবংশের তাদূশ সামাজিক মর্ধ্যাদা ছিল না। মাহোবার অধিপতি অতি সন্ত্রান্ত রাজপুতবংশসম্তৃত ছিলেন, একারণ সাতিশম্ন গৌরব অন্ুতব করিতেন। তিনি বংশগৌরব নাশ ভয়ে দলপত শাহের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তারপর তিনি বলিয়া পাঠান, যদি দলপতশাহ' বাহুবলে হুর্ীবতীকে আমার ভবন হইতে হরণ করিয়া তাহার পাণিপীড়ন করিতে পারেন, তবে আমি প্রীতি লাভ করিব। দলপতশাহ তেজস্বী বীরপুরুষ ছিলেন। তাহার সৈন্য

(৪৩ ) ভ্ডাক্সত্ অঙ্পম্ম!

বলও যথেষ্ট ছিল। তিনি প্রস্তাব শ্রুত হইয়া পঞ্চাশ হাজার সৈন্য সহ মনোমোহিনী হুর্গীবতীকে লাভ করিবার জন্য ধাবিত হইলেন প্রবল যুদ্ধে দুর্গীবতীরত্ব লাভ করিয়া কণ্ঠে ধারণ করিলেন। তেজস্বিতার সহিত তেঞঙজস্বিতা মিলিত হইল? সুখের সীমা রহিল না। মধ্যভারতে অগ্তাপি রাণী ছুর্গাবতীর নাম শ্রদ্ধা প্রীতির সহিত কীন্তিত হইর়া থাকে বস্ততঃ গড়মণ্ডল তৎপার্ববর্তী প্রদেশ সমূহের রাঞ্জন্তকুলে আর কেহই রাণী ছূর্গাবতীর তুল্য শদ্ধা প্রীতির পুষ্পাঞ্তলি লাত করিতে পারেন নাই

ষোড়শ শতান্দীর মধ্যতাগে গড়মণ্ডল রাজা দৈখ্যে তিন শত মাইল, পার্থে একশত মাইল ছিল। সমগ্র রাজ্য ধনধান্য পূর্ণ সমদ্ধিশালী ছিল। কথিত আছে, গড়মণ্ডল রাঙ্জে ৭* হাঞ্জার জনপুর্ণ পল্লী নগর ছিল।

গড়মণ্ডল রাঙ্ের ধশ্বর্যকাহিনী আকবর শাহের অন্যতম ওমরাহ আসফ থাকে আকরুণ্ট করে? তিনি ১৫৬৪ খুষ্টান্দে বিপুল মোগল বাহিনী লইর়৷ গড়মণ্ডল রাজ্য আক্রমণ করিলেন। এই সময় দলপত শাহ কালগ্রাসে পতিত হইরাছিলেন এবং তদীয় বিধবা মহিবী ছুর্গবতী অপবিণতবযস্ক পুত্রের প্রতিনিধিরপে শাসন কার্ষ্য পরিচালন করিতেছিলেন তেজস্থিনী দুর্গাবতী শক্রর আগমন সংবাদ পরিশ্রুত হইয়া তাহার গতি রোধ জন্য বীরদর্পে দণ্ডারমান হইলেন আট হাজার অশ্বারোহী এবং ততোধিক পদাতিক সৈন্য, দেড় হাজার রণ হস্তী সহ তাহার সাহাধ্যার্থ সজ্জিত হইল। বীরাঙ্গন। দুর্গাবতী হস্তীপৃষ্ঠে আরোহণ করিয়া স্বয়ং সৈনাপত্যের ভার গ্রহণ করিলেন। তাহার যোদ্ধ,বেশ, মন্তকে শিরন্ত্রাণ? হস্তে শাণিত বর্ষা পার্খে ধনুর্বাণ দেখিয়। লোকে ভয়ে ভক্তিতে অতিভূত হইয়া পড়িল; সন্ত মধ্যে মহোৎসাহের সঞ্চার হইল। স্বদেশান্ুরাগের সহিত বীর নারীর

ভাল ললন্ন। (8৪ )

উদ্দীপনা মিলিত হইয়া সৈন্যবৃন্দকে স্বদেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য দৃঢ় সঙ্কপ্প করিয়া 'তুলিল। মোগল সৈষ্ঠ "ক্রমান্বয়ে ছুইবার ছুর্গাবতীর হস্তে পরাজিত হইয়। প্রস্থান করিল? ছয় শত প্রাণশূনা মোগল সৈন্য বণক্ষেত্রে পতিত থাকিয়া মোগল বাহিনীর' দুর্দশার পরিচয় দিতে লাগিল। বিজয়শ্রীশালিনী রাণী দুর্গীবতী শক্রর পশ্চান্ধাবন করিয়া তাহাদিগকে পুনর্ধার আক্রমণ করিবার জন্য সঙ্কপ্প প্রকাশ করিলেন কিন্তু তদীয় মন্ত্রিগণ এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধবাদী হইয়! ক্লান্ত সৈন্যের বিশ্রামের জন্য অভিমত জ্ঞাপন করিলেন। মন্ত্রি সৈন্যগণের সনির্বন্ধ প্রার্থনা অগ্রাহ্থ করিতে না পারিয়া রাণী অগত্যা এই প্রস্তাবে স্বীকৃত হইলেন। এক দিকে রাণী ছুর্গাবতী সসৈন্যে বিশ্রাম করিতে লাগিলেন ; অপর দ্রিকে মোগল সেনাপতি ঘোর অপমানের প্রতিশোধ গ্রহণ নষ্ট গৌরবের উদ্ধার সাঁধন জন্য নবাগত সৈন্ঠসহ নবতেজে শত্রুর অভিমুখে ধাবিত হইলেন। রাণী ছুর্গাবতী শক্রর পুনরাগমন সংবাদ পরিশ্রত হইয়া তাহাদের গতিরোধ জন্য একটি সন্ধীর্ণ গিরি সঙ্কটের সম্মুখে দণ্ডায়মান হইলেন। আসফর্থী৷ কামান লইয়া যুদ্ধ করিতে আরন্ত করিলেন। অবিশ্রান্ত গোলাবর্ষণে হিন্দু সৈন্যের সমস্ত পরাক্রম ব্যর্থ হইবার উপক্রম হইল। রাজকুমার বীর নারায়ণ শত্রহস্ত নিক্ষিপ্ত অগ্ধাঘাতে আহত হইলেন। তেজস্থিনী রাণী প্রাণাধিক পুন্রের তাদৃশ বিপদাপন্ন অবস্থা দেখিয়াও অবিচলিত রহিলেন ; আহত পুত্রকে স্থানান্তরিত করিতে আদেশ করিয়া অমিত পরাক্রমে শক্র সৈন্ত মন্থন করিতে লাগিলেন। তদীয় সৈশ্যগণ রাজকুমারকে আহত দেখিয়া নিকৎসাহ হইল। তাহারা ছত্রতঙ্গ হইয়। পড়িল। রাণী ছুর্গীবতী এই ভাগ্য বিপর্ধ্যয়েও অবিচলিত রহিলেন, কেবল মাত্র তিনশত সৈন্য লইয়া প্রবলোৎসাহে অসমসাহস সহকারে শক্রর আক্রমণ প্রতিরোধ করিতে লাগিলেন; কিছুতেই একপদও.

(৪8৫ ) ভ্ডাগ্রত জভলজ্ন।

পশ্চা্পদ হইলেন না।. শত্রহস্ত নিক্ষিপ্ত শরাঘাতে তাহার এক চক্ষু বিদ্ধ হইল, তিনি স্বহস্তে শর উত্তোলন করিয়া ফেলিলেন কিন্তু তাহার একাংশ চক্ষুর অভ্যন্তরে ভাঙ্গিয়া রহিল। ইহার পর. আর একটী শর আসিয়া তাহার গ্রীবা দেশে বিদ্ধ হইল। এই উতত় স্থানের যন্ত্রণার তাহার নিকট চারি দ্রিক অন্ধকারময় হইয়া আসিল। তিনি হস্তিপৃষ্ঠে এক পার্খ হইতে' অন্য পার্থে বিক্ষিপ্ত হইতে লাগিলেন জয়াশা তিরোহিত হইল। একজন বিশ্বস্ত পরিচারক তাহাকে বণক্ষেত্রের বহির্ভাগে লইয়। যাইবার জন্য অন্থুমতি প্রার্থনা করিল কিন্ত তিনি অবজ্ঞাভরে এই প্রার্থন৷ প্রত্যাখ্যান করিলেন। তিনি বলিলেন, আমরা জয়াশায় জলাঞ্জলি ' দিয়াছি, ইহা সত্য ; কিন্তু ভাই বলিয়া কি আস্মসম্মানও বিসক্জন করিতে হইবে? আমরা এতদিন যশঃ মর্ধযাদা লাভ জন্য আকাঙ্ষা করিরা আসিবাছি; এখন কি দ্বণ্য জীবনের জন্য সেই চিরাজ্ষিত যশঃ মর্ধযাদা পরিত্যাগ করিব ? যদি রুতজ্ঞত। প্রদর্শন করিতে ইচ্ছ| কর, তবে তোমার বর্ষার আঘাতে আমার জীবনান্ত কর, তাহা হইলে আমাকে আর আত্মহত্যা পাপে লিপ্ত হইতে হইবে না ।,রাণীর বাক্য পরিচারক অঞ্ বিপঞ্জন করিতে লাগিল। এদিকে শক্রকুল তাহাকে চতুদ্দিক হইতে পরিবেষ্টন করিয়া ফেলিল। তখন তেজন্িনী রাণী ছুর্গাবতী শক্র হস্তে বন্দী হইবার আশঙ্কায় সহপা পার্বর্তী পরিচারকের কোষ হইতে তরবারি গ্রহণ করিরা৷ স্বীয় হ্ৃদরে আমূল বিদ্ধ করিয়া দিলেন? ঠাহার প্রাণ শৃপ্ত দেহ ভূতলে পতিত হইল।

এই সমর ছর জন মহাবীর রানীর পার্খে অবস্থিতি করির] প্রবল পরাক্রমে যুদ্ধ করিতেছিলেন ; তাহারা এই অপূর্ব আয্মোৎসর্গ দেখির। বিমুগ্ধচিত্তে স্বদেশের জন্য জীবনবিসর্জন করিতে সঙ্কল্প করিলেন একে একে ছয় জনেই শত্রু নাশ করিতে করিতে প্রাণ পরিত্যাগ করিলেন

ভান ত.ললনন! ( ৪৬ )

কর্ণেল গ্লিম্যান লিখিয়াছেন যে, ছুই গিরির মধ্যবর্তী সঙ্কীর্ণ পথে রাণী ছুর্গাবতীর প্রাণ বিসর্জনের স্থান অগ্াপি: দৃষ্টিগোচর হয়। পথিকগণ এই নির্জন স্থান অতিবাহিত করিবার সময় তথায় স্বর্গীয় ছুর্মাবতীর উদ্দেপ্তে তক্তিভরে স্ফষটিক অর্পণ করিয়া থাকে এই স্থানের চতুঃপার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্ফটিক পাওয়া যায়। কর্ণেল শ্লিম্যানও তাহার একটী অর্পণ করিয়া রাণী ছুর্গাবতীর পরলোকগত. আম্মার প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করিয়াছিলেন

পৃদ্বীরাজ মহিষী

আকবর শাহের বিশাল রাঁজপুরীতে খুস্রোজের বাজার বসিয়াছে ;. এই বাজাবে-- কত বাসুন্দরী রাজার ছুলালী ওমরাহ জায়া আমীর জাদী নয়নেতে জালা অধরেতে হাসি অঙ্গেতে ভূষণ মধুর নাদী-_ ক্রয় বিক্রয় করিতেছেন, এবং আপনাদের কমনীয় কান্তিতে চতুর্দিক উদ্তামিত করিয়া তুলিতেছেন। স্বয়ং আকবর শাহ ছদ্মবেশে সে রূপের হাটে ইতস্ততঃ পরিভ্রমণ করিয়া বেড়াইতেছেন এবং স্বীয় অসংযত হৃদয়ের সুখীবেশে উচ্ছলিত হইতেছেন। এই সখের বাজারে স্বামীর অন্থরোধে অপূর্ব সুন্দরী পৃথ্বীরাজমহিষী (এই মহিলা মিবার সন্তৃতা এবং সম্পর্কে প্রাতংম্মরণীয় প্রতাপসিংহের ভ্রাতুপুত্রী ছিলেন ) আগমন করিয়াছেন। কিন্তু প্রমোদমত্ত রূপসিকুলের শীলতাহীন ভাবভঙ্গীতে তাহার হৃদয় ক্ষুব্ হইয়া উঠিল; তিনি অচিরে বিলাসের সে লীল'

(৪৭) ভাত লনা

নিকেতন পরিত্যাগ পূর্বক গৃহাতিমুখে যাত্রী করিলেন তাহার বিছ্যত্প্রভাতুল্য ব্ূপ আকবরকে একেবারে মুগ্ধ করিয়াছিল। তিনি মোহাবেশে আম্মবিস্ৃত হইয়া সন্মিতমুখে তাহার পথ অবরোধ করিয়া দাড়াইলেন। অগ্নিশিখা সদৃশী বীরাঙ্গনা এই আত্মঅবমাননায় ক্রোধে ক্ষিপ্তপ্রার হই উঠিলেন এবং স্থানাস্থান পাত্রাপাত্র সমস্ত ভুলিয়া আকবর শাহের রূপ লালসা চিরকালের জন্য শান্ত করিবার উদ্দেশ্তে লুক্কাধ্বিত তীক্ষুধার ছুরিকা উত্তোলন করিলেন সম্রাট কুসুম স্তবকের অভ্যন্তরে. তাদৃশ হলাহল দর্শন করিয়া বিশ্মিত হইলেন? এবং মুহুর্ত মধ্যে স্বীয় বক্রভাব দমন করিয়া তদ্রতাসহকারে সে রমণী রত্বকে বিদায় দ্রিলেন। “তেজস্বিনী রাজপুত সতী আপন মহস্ব গরিমার উজ্জ্লতর বেশে স্বামী সকাশে গমন করিলেন ।” (৯)

যোধপুর মহিষী

১৬৫৭ খুষ্টান্দে পাদশাহ শাহজাহান সহসা পীড়ার আক্রান্ত হইয়ী- শয্যাগত হন। এই সময় সর্বজ্যেষ্ঠ রাজকুমার দারা রাজধানীতে অবাস্থতি করিতেছিলেন কনিষ্ঠ রাজকুমারগণ মধ্যে সুজা বঙ্গদেশে;. আওরঙ্গজেব দক্ষিণাপথে এবং মুরাদ গুজরাটের শাসনকার্ষ্যে নিযুক্ত ছিলেন। প্রবাসী রাজকুমারগণ পিতার পীড়ার সংবাদ পরিশ্রুত হইয়া রাজ্যলালপায় ক্ষুধিত ব্যাপ্রের ন্যায় রাজধানীর অভিমুখে ধাবিত হন। দারা, আওরঙ্গজেব মুরাদের গতিরোধ করিবার জন্য যোধ- পুরের মহারাজ যশোবস্তের সৈনাপত্যে বিপুল বাহিনী প্রেরণ করেন। চাম্বল নদীর তীরে শামগড় নামক স্থানে উভয়

(১) আধ্যনারী।

-ভাল্লত.লঙ্ন্না (৪৮)

পক্ষ পরস্পরের সম্মুখীন হইলে প্রবল যুদ্ধ আরন্ধ হয়। বিজয়লক্্ী আওরগ্গজজেবের দিকে হেলিয়া পড়েন, যশোবস্ত সিংহ বহু যুদ্ধের পর পরাজিত হইয়া প্রস্থান করেন। এই সংবাদে তদীয় ঠেজস্বিনী মহিধী নিরতিশয় উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন। যশোবস্ত পিংহ যোধপুরের নিকটবর্তী হইলে মহারাগী তাহার তথাকধিত কাপুরুধতার' রাগান্ধ হইয়া দুর্গ দ্বার রুদ্ধ করিয়া দ্রিলেন। তখন দূতগণ আগিয়া নিবেদন করিল “মহারাজ অমিতপরাক্রমে যুদ্ধ করিয়াছেন, তারপর পরাঙ্গ় অবশ্যন্তাবী দেখিয়া স্বসৈন্ঠের অযথা রক্তপাত নিবারণোদ্দেগ্যে কেবল মাত্র ৪৫ শত অন্কুচর সমভিব্যাহারে রণক্ষেত্র পরিত্যাগ করিয়াছেন।” এই প্রবোধ বাক্যেও তেজস্বিনী মহারাণীর ক্ষুব্ষচিত্ত শান্তভাব ধারণ করিল না। তিনি বলিতে লাগিলেন, “মহারাজ যশোবস্ত পৃথিবীর সর্কশ্রেষ্ঠ বীর বংশে” উদয়- পুবের বাঞঙ্জঝংশে বিবাহ করিয়াছেন, বীরকুলবরেণ্য রাণার জামাতা কখনও তাদুশ হীনমতি হইতে পারে না। মহারাজা চিরপুজ্য রাজ বংশের সহিত সম্পর্ক স্থাপন করিয়াছেন, এই কথা স্মরণ করিয়া সে বংশের অনুকরণ করাই তাহার কর্তব্য ছিল। মহারাঁঞ বণক্ষেত্রে প্রাণ-বিপঞ্জন করিলেই আমি শ্রীতিলাভ করিতাম।” ইহার পর কিরকাল নিস্তব থাঁকিত্না মহাঁরাণী পুনর্ধার বলিতে লাগিলেন, “তোমরা মিথ্যাবাদী, মহারাজা কখনও শুত্র যশোরাশিতে কলঙ্ক লেপন করেন নাই। তিনি নিশ্চব যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ বিসর্জন করিঘীছেন। আমি সহমরণে যাইব, তোমরা সকলে চিতা সজ্জিত কর।” ইহার পর মুহুর্তেই পুনর্ধার ভাবান্তর উপস্থিত হইল, তিনি মহারাজার উদ্দেপ্তে নান। প্রকার ভ্সনাহ্ছচক বাক্য প্রয়োগ করিতে আরম্ভ করিলেন। এইরূপ এক ভাবের পর আর একতাব উপস্থিত হইয়া তাহার চিত্ত উদ্বেলিত করিয়া তুলিতে লাগিল। এইভাবে

(৪৯ ) ভ্ডাব্রজ্ তত?

'সপ্তাহাধিক অতীত হইলে তদীর মাতা আগমন পূর্বক নানা প্রকার প্রবোধবাক্যে তাহাকে শান্ত করিলেন . মহারাধীর পতিভক্তি জাশ্রত হইয়া উঠিল ; তিনি মহারাঁজকে সাদরে অভার্থনা করিলেন

এই সময় আওরঙ্গক্ষেব পিতাকে বন্দী এবং ভ্রাতৃক্ন নিক্মুল করিয়। দিলীর রাজতক্তে আরোহণ কৃরিলেন। নবাতিষিক্ত সমাট মহারাজ যশোবন্তকে সাদরে আহ্বান করিরা পাঠাইলেন। তদনুপারে তিনি দিল্লীতে উপনীত হইলে সম্রাট তাহাকে রাঞ্জকার্ধো নিষুক্ত করিলেন ইহার কিছুদিন পরে মহারাজ যশোবন্ত রাজকার্যান্্ররোধে কাবুলে গমন করেন নুরভাগ্যক্রমে তথার রাঞ্জার লোকান্তর হইল তংকালে মহারাজার মহিষীও তাহার সঙ্গে ছিলেন। মহারাঞ্জার পরলোক গমনের পর তিনি পুত্রদ্বরসহ স্বদেশাতিমুখে যাত্রা করিলেন। কিন্তু মতিচ্ছন্ন আওরঙ্গজেব দিল্লীতে তাহাদের শিবির অবরুদ্ধ করিলেন আওরঙ্গজেব তাহাকে দিল্লীতে বন্দী করিলে তিনি বে কৌশলে পরিত্রাণ লাভ করেন, তাহ! তাহার প্রথর উদ্ভাবনা শক্তিৰ পরিচারক। বাশীর কতিপন্ন অন্থুচর কাব্যব্য পদেশে স্বদেশে গমন জগ্ঠ পাদশাহের অনুমতি লাভ করে। তাহাদের যাতার প্রাকালে বাজপুক্রদ্বরের সমবয়স্ক ছইজন বালক রাঞ্ভ্ষণে ভূষিত হইল এবং একজন সঙ্গিনা রমণী রাণীর বেশ পরিধান করিল। ভগু বেশ ধারণের পর ইহাদিগকে শিবিরে রাখিরা বাণী প্রহরিগণের চক্ষে ধুলি নিক্ষেপ পূর্বক রাজপুলদ্বয় কতিপর বিশ্বস্ত অন্ুচর সমভিব্যাহারে পলায়ন করিলেন। তাহাদের পলায়ন বার্তা প্রচারিত হইলে পাঁচ সহস্র মোগল পৈশ্ঠ তাহাদের অনুসরণ করিরাছিল ; কিন্তু কার্য্যান্যক্ষ দুর্গাদাস বিপুল পরাক্রমে মোগল সৈন্যকে একটি গিরিসঙ্কটে অবরুন্ধ করিলেন; ইত্যাবকাশে মহারাজ ঘশোবন্তের মহিষী নিরাপদ স্থানে উপস্থিত হইলেন

&--

রূপনগরী

জ্লপনগরী অর্থাৎ রূপনগরের রাজকুমারী অপামান্ত রূপবতী ছিলেন; এই সৌনর্যালীলামরী রমণীর খ্যাতি দিল্লীতে পৌছিয়াছিল দিল্লীর পাদশাহ আওরক্ষঙ্গেব সংযতেক্দ্রির বলিয়| প্রশংসিত ছিলেন, কিন্ত মনোমোহিনী সুন্দরী রূপনগরীর সৌন্দর্য খ্যাতি তীহার চিত্ত- চাঞ্চল্য উপস্থিত করিল; তিনি রূপনগরীরঁ পাণিপ্রার্থী হইয়া দূত প্রেরণ কৰিলেন। ক্ষুদ্র রূপনগরের ক্ষুদ্রজীবি রাজা এই সংবাদে আনন্দে উংফুল্প হইয়৷ উঠিলেন এবং স্বী কন্যাকে সৌভাগ্যব্তী বলিয়া বিবেচনা করিলেন। পাদশাহ রূপনগরের অধিপতির সম্মতি লাভ করিয়৷ রাঁজকুমারীকে রাজধানীতে আনরন জন্য দুই সহজ সৈম্ প্রেরণ করিলেন। |

কিন্তু গাব্বঙ1 রাজকণ্ঠ| কুলমর্ধ্যাদ। নাশভয়ে আকুল হইয়। আওরঙ্গজেবের প্রস্তাব স্বণাতরে প্রত্যাখ্যান করিয়া মোগল সৈন্য সহ গমন করিতে অসম্মত হইলেন। কন্ঠার তাদৃশ অনিচ্ছা সন্বেও বূপনগরের আঁধপতি দোর্দওপ্রতাপ আওরগ্গগেবের ধিরাগভাজন হইবার ভন্নে তাহাকে রাজসৈন্ের সঙ্গে পাঠাইতে উদ্ভোগী হইলেন। এই কারণ রূপনগরী অনন্ভগতি হইয়া রাজকুলতিলক রাজসিংহের শরণাগত হইলেন এবং স্বীয় উদ্ধার কর্তার হস্তে আত্মসমর্পণ বিডি অভিলাষ জ্ঞাপন করিলেন।

মহারাণ] রাজসিংহ যুদ্ধে স্ত্রীরত্ব লাভ করিয়া যষশঃ এবং বিপন্ন রাজ- বালাকে রক্ষা করিয়া ধর্ম অঞ্জন করিতে সঙ্কল্প করিলেন। তিনি একদল সৈন্য সহ দ্রুতগতিতে আরাবলী পর্বতমালা! অতিক্রম পূর্বক রূপনগরের দ্বারদেশে উপনীত হইলেন এবং পথ পার্থে লুক্কায়িতভাবে অবস্থান করিতে লাগিলেন। এইস্থানে তিনি মোগল সৈন্যকে

(৫১) জাত লঙ্লন্না

_পরাঞ্জেত করিয়া! তেজস্িনী বীরবালার উদ্ধার সাধন করিলেন » রূপনগরীর মুখস্রী লজ্জা প্রীতির অপূর্ব উন্মেষে উজ্জলতর হইয়া উঠিল ; তিনি বিজমী বীরের কে মাল্য অর্পণ করিয়া আপন প্রতিজ্ঞা পালন করিলেন

গুণোর রাণী

অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম তাগে বর্তমান ভূপাল রাজ্যের একাংশে খুণোর নামে এক ক্ষুদ্র রাজ্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগে দোস্ত মোহাম্মদ নামা আওরঙ্গজেবের জনৈক বিচক্ষণ সেনাপতি গুণোর রাজ্যের পার্শে ভূপাল রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন অতঃপর দোস্ত মোহাম্মদ গুলোর রাজ্যের প্রতি সতৃষঃ দৃষ্টিপাত করিয়া তাহাও স্বাধিকারভুক্ত করিবার জন্য অভিলাধী হইলেন। দোস্ত মোহাম্মদ আপন অভীষ্ট সিদ্ধির জন্য গুণোর অভিমুখে যাত্রা! করিলেন তিনি তথায় পৌছিয়। বিশ্বাসঘাতকত। পূর্বক গুশোর নগর আকার করিলেন। তৎকালে গুণোররাণীর অনিন্দ্য বূপমাধুরীর খ্যাতি সর্বত্র বিদিতছিল। ইন্দ্িয়বিলাপী দোস্ত মোহাম্মদ রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করিয়। আপনার পাপলালসা৷ চরিতার্থ করিবার জন্য গুণোর রাণীকে রমণীর পরম ধন সতীত্ররত্র জলাঞ্জলি দিবার জন্য আহ্বান _করিলেন। রাণী দোস্তের প্রস্তাবে সম্মত হইয়া সাজসজ্জার জন্য ছুই ঘণ্ট। সময় চাহিলেন। রাজপ্রাপাদের ছাদের উপর পরিণয় ক্রিয়া সম্পাদ্দিত হইবে বলির! স্থিরীরূত হইল রাণী বিজয়ীবীরের সঙ্জার জন্য একটি মনোহর পরিচ্ছদ মণিমুক্তার নানাবিধ বিচিত্র আভরণ প্রেরণ করিলেন। দোস্ত মোহাপ্রদ এইসকল রমণীয় বেশ ভূষায় সজ্জিত হইয়। হর্ষোহফুল্প অন্তরে যথাসময়ে ছাদের উপর রাণীর সন্লিধানে গমন করিলেন। রাণীর “অতুল রূপরাশি নবাবের সম্মুথে উদ্ভাসিত

ভ্ডাক্ত্ হনতলনা (৫২ )

হইয়া উঠিল।” তিনি একেবারে মুগ্ধ হইঘ়্া গেলেন; তাহার নিকট প্রতীয়মান হইল যে, জনশ্রুতি সে সৌন্দর্য্যের বর্ণনায় অক্ষম হইয়াছে। তখন তিনি বিগলিত হৃদয়ে রাণীর সহিত মধুর বাক্যালাপ আরম্ত করিলেশ। কিন্তু ক্ষণ পরেই তাহার দেহে অদহা আলা আরম্ভ হইল। তহক্ষণাৎ পাখা পানীয় জল আনীত হইল। কিন্তু দেহের জ্বালা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাইতে লাগিল ; নবাব বরপজ্জ! ছিন্ন করিরা ফেলিতে আরন্ত করিলেন। নবাবকে তদবন্থার দেখিনা রাণী বলিতে লাগিলেন, পর্থা। জানিও। তোমার মৃত্যু আপন্ন হইয়াছে আমাদের বিবাহ যৃত্যু এক সমরেই সাধিত হইবে। তোমার পরিহিত এই পরিচ্ছদ বিষাক্ত ; আমার পবিভ্রত। রক্ষা করিবার জন্য অনন্টোপাঁর হইনা আমি এই কৌশল অবলম্বন করিতে বাধ্য হইয়াছি।” এই তেঙ্গোগর্ বাক্যে উপস্থিত ব্যক্তি মাত্রেই তয় এবং বিশ্বয়ে স্তম্ভিত হইরা পড়িল। সেই মুহূর্তে রাণী উলক্ষন প্রদান পৃর্ক প্রাপাদের পার্গবাহিনী নর্ম্দা গর্ভে পতিত হইয়া ইহ জীবনের শেষ করিলেন। অতঃপর দোস্ত মোহাম্মদ যন্ত্রণায় ছট ফট করিতে করিতে কালগ্রানে পতিত হইলেন

কৃষ্ণাকুমারী

বিধাতার অপুর স্থষ্টি কৃষণাকৃমারী ১৭৯২ খুষ্টাব্ে জন্ম পররিগ্রহ করেন। কৃষ্ণাকুমারী উদয়পুরের রাখা ভীমসিংহের কন্তা। কৃষ্টা- কুমারী অনুপম রূপলাবণাবতী ছিলেন; তাহার সর্ধাঙ্গে রূপমাধুরী খেলিয়া বেড়াইত। তাহার আচার ব্যবহারে এরূপ একটা অর্পূর্ব মহিমামরী ভঙ্গী দেখা যাইত, যাহা ছোট বড় সকলকেই মুগ্ধ করিত। বস্ততঃ কৃষ্টাকুমারী যথার্থ রাজপুতকুম্থম সদৃশ ছিলেন প্রসিদ্ধ ইতিহাস লেখক ম্যালকলম সাহেব লিখিয্া গিয়াছেন, “কৃষণাকুমারী

( ৫৩) জ্ঞাত তন্ন

অলোকসামান্ত রূপবতী ছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই আমি তাহার ভ্রাতা যুবরাজ যৌবন পিংহকে দেখিয়াছি ; এই রাজকুমারের সহিত রাজকুমারী ক্ৃষ্ণার আকুতিগত সৌসাদৃণ্ত ছিল। যৌবন সিংহের বর্ণ সুগৌর, তাহার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সকল সুন্দর সুগঠিত তাহার সর্বাঞ্গে একটি কোমল শ্রী দীপ্ত রহিয়াছে ; কিন্ত তাহার সুন্দর বদন তীক্ষ বুদ্ধির তেজস্থিতার পরিচায়ক |”

যোধপুরাধিপতি রাজপুতললনাকুস্রমের পাণিপ্রার্থি হইলেন * রাজা .ভীমসিংহও আহ্লাদ সহকারে এই প্রস্তাব গ্রহণ করিলেন কিন্তু শুভ পরিণয় ক্রিয়। সম্পন্ন হইবার পুর্ধেই যোধপুরাধিপতি অকালে পরলোক গমন করিলেন

অতঃপর ব্রাণ। ভীমসিংহ জয়পুরের মহারাঞ জগত্ রায়ের সহিত স্বীয় ছুহিতা রত্বের বিবাহের সম্বন্ধ স্থির করিলেন। এদিকে যোধপুরাধিপতির উত্তরাধিকারী মহারাজ মাননিংহও কষণকুমারীর পাণিপ্রাথী হইলেন। ফলতঃ কষ্ণাকুমারীরূপ অপরূপ রত্ন লাভের জন্য ছুই জন প্রতিদস্থী রঙ্গক্ষেত্রে অবতরণ করিলেন ইহার৷ উদয়পুরের রাণা অপেক্ষা বলশালী ছিলেন। ইহার! উভরেই আপন শ্রেষ্ঠত। প্রতিপন্ন করিবার জন্য যত্র করিতে লাগিলেন এবং কৃষ্ণাকুমারীর হস্ত লাভ করিতে অদমর্থ হইলে সমরানল প্রজ্বলিত কবিবেন বলিয়! ভয় প্রদর্শন করিলেন। মহারাণা বিষম সঙ্কটে পতিত হইলেন কাহাকে উপেক্ষা করিয়া কাহ।র হস্তে রৃষ্ণাকুমারীকে অর্পণ করিবেন, তাহ। নির্ধারণ করিতে না পারিরা নীরব রহিলেন। ইহাতে মহারাজ জগত রায় এবং মহারাজ মানপিংহ উভয়েই অপন্তষ্ঠ হইয়। উদয়পুর রাজ্যের সীমান্তে সৈন্ত সমাবেশ করিলেন। এই সকল সৈন্য রাজ্য মধ্যে প্রবিষ্ট হইয়া! সমস্ত দেশ ছারখার করিতে লাগিল

বলহীন মহারাণ! এই দৌরাত্ম্যের প্রতিরোধ করিয়া প্রকুতিপুঞ্জকে

ভ্ালত ললনা (৫৪ )

রক্ষা করিতে অমমর্থ হইলেন। এই ব্যাপারে তাহার বাঙজগৌরব পরিশ্নান হইয়া পড়িল। তাহার অপত্যল্েহ ক্ষুধ হইল। তিনি এই বিপদ হইতে পরিত্রাণ লাত করিয়া আয্মমর্ধ্যাদা রক্ষা করিবার কোন উপায় উত্তাবন করিতে পারিলেন না। তাদূশ বিপদ হইতে উদ্ধার লাভ করিবার একমাত্র ভয়াবহ উপায় দেখ। দিল ;_সে উপায় সমস্ত বিপদের মৃলীভূত কারণ কষ্খাকুমারীর অপদারণ এবং তাহার মৃত্যুর পর যোধপুর জয়পুরের সহিত সন্ধি স্থাপন করিয়া রাজ্য মধ্যে শান্তির প্রতিষ্ঠা। শোণিতলোনুপ মন্ত্রী আমীর খা মহারাণাকে এই উপায়. অবলম্বন করিবার জন্য কুমন্ত্রণা দিলেন। এই লোমহর্ষ প্রস্তাবে মহাঁরাণ! শিহরিয়া উঠিলেন ; তাহার স্নেহশীল হৃদয় ব্যথিত হইল। পরিশেষে বারম্বার অনুরুদ্ধ হইয়া তিনি প্রাণাধিক দুহিতার প্রাণ হরণে স্বীকৃত হইলেন

কিন্তু কুন্নুমকোমল! রুঞ্চাকুমারীর পবিত্র রক্তে হস্ত কলক্ষিত করিবার উপযুক্ত নির্মম লৌক পাওরা দুর্ঘট হইল। মহারাণা স্বীয় আত্মীয় মহারাজ দৌলত সিংহকে এততংসম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনি এই লোমহ্য প্রস্তাব শুনিয়া তীব্রস্বরে বলিয়া উঠিলেন, যে ভ্বিহবা হইতে এবপ প্রস্তাব বাহির হথ, সে িহবাকে ধিক! আর যদি বন্ধৃতা রক্ষার জন্য এইরূপ কাজে লিপ্ত হইতে হয়, তবে সে বন্ধৃতায় ধূলি নিক্ষেপ করা যাইতে পারে। অতঃপর মহারাণা আপনার কনিষ্ঠ ত্রাতাকে ধরিয়া বসিলেন এবং এই বিপদ হইতে উদ্ধার করিবার জন্ তাহাকে কাতরতাবে অনুরোধ করিলেন তিনি অনন্ঠোপার হইয়। স্বীকৃত হইলেন। কৃষ্ণার প্রাণনাশ জন্য তররারি হস্তে তাহার শত্বন কক্ষে প্রবেশ করিলেন। এই সময় নে নিম্পাপমতি অবল! নিদ্রিতা ছিলেন; তদীয় পিতৃব্য কক্ষ মধ্যে প্রবেশ করিয়া দেখিলেন যে, “শ্বেত শখ্যার উপর কে নির্মল কুন্থমরাঁশি ঢালিয়া দিয়াছে?” সে প্রন্ষ,টিত সৌন্দর্য্য

(৫৫) ভ্ডাল্রত শশঙন্ন?

সমস্ত গৃহ আলোকিত হইয়াছে। দৃ্ঠে তাহার হৃদয়ের অন্তস্তল পর্যন্ত মখিত হইয়া উঠিল, তাহার শিথিল হস্ত হইতে তরবারি পড়িয়া গেল।

অতঃপর মহারাণার ছুরভিসদ্ধির বিষর প্রকাশিত হইয়া পড়িল রাজমহিবী এই আপন্নবিপদে শোকে ছুঃখে ক্ষিপ্ত হইলেন, তাহার করুণ বিলাপে চারিদিক মুখরিত হইরা উঠিল কিন্তু কষণাকুমারী নিজে এই ছুঃসংবাদ শ্রবণ করিয়া অবিচলিত রহিলেন। তিনি পিতা, পরিবার জাতির উদ্ধার কল্পে জীবন বিদস্জন করিতে সন্কপ্ন করিলেন। এবার তরবারির পরিবর্তে বিষ প্রয়োগে তাহার জীবন নাশ করিবার প্রস্তাব স্টিরারূত হইল। কৃষ্খাকুমারী পিতার মঙ্গলের জন্য পরমেশ্বরের নিকট প্রার্থনা করিলেন। তারপর অগ্নান বদনে পিতার প্রেরিত বিষপাত্র মুখে তুলিয়! ধরিলেন। রাজ মহিষীর বিলাপধবনিতে আকাশ বিদীর্ণ হইতে লাগিল; তিনি নানাছন্দে মহারাণার উদ্দেশ্যে ভংসনা করিতে লাগিলেন | কিন্তু রুষ্ণাকুমারীর চক্ষু হইতে একবিন্দু অঞ্রও পতিত হইল না। তিশি ধার বচনে যাতাকে প্রবোধ দিতে লাগিলেন ; বলিলেন, জীবনের সকল কষ্টের অবসান হইতেছে, মা, ইহাতে কি জন্য শোকে কাতর হইতেছ ? আমি মৃত্যুকে ভর করি না। আমিকি তোমার সন্তান নই? আঙি মৃত্যুকে ভধ করি না। আমরা জন্মাবধি বলির জন্ত চিহ্নিত হইয়া থাকি আমরা ইহলোকে আসিতে না আসিতেই পুনর্ধার পরলোকে প্রেরিত হই আমি যে এতদিন জীবিত রহিয়াছি; তজ্জন্ত পিতাকে ধন্টবাদ। এইভাবে মাতাকে প্রবোধ দিয়া কৃষ্ণ মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হুইলেন। কিন্তু বিষের ক্রিয়া প্রকাশ পাইতে বহু বিলম্ব হইল ? এজন্য কৃষ্ণাকুমারী আর ছুই পাত্র বিষ নিঃশেষ করিয়া পান করিলেন অতঃপর বিষের ক্রিঘনা আরম্ভ হইল। রাজপুত কুন্থুম অকালে ঝরিয়৷ পড়িল।

রহাউ ০০০০০

কর্ধাদেবী

প্রথম

১১৯৩ খুষ্টা্দে দৃশদ্ধতীর তীরবর্তী বিশাল প্রান্তরে ঘোর সেনাপতি, সানুবুদ্দীনের হস্তে দিল্লীশ্বর পৃদ্বীরাজ পরাজিত হইয়া বন্দী হইলেন ।. পৃপ্ধীরাজের ভগিনীপতি এবং অনুরক্ত সুদ চিতোরের রাণা সমর- সিংহ রণক্ষেত্রে প্রাণ পরিত্যাগ করিলেন। দিল্লীর দুর্গপ্রীকারে মোসলমানের অগ্চন্দ্র লাঞ্ছিত বিজয়পতাক। উড্ডীন হইল। পতির মৃত্যুসংবাদ শ্রবণ করিয়া সমরসিংহের প্রিয়তম! মহিষী পৃথা জলন্ত চিতায় আরোহণ করিয়া পতির অন্ুগমন করিলেন! দিল্লীনগরী অধিকার, সমরসিংহের দেহপাত, শ্রে্ঠ রীঞ্পুতগণের মৃত্যু,-এই সকল ঘটনার পর মোসলমানের রাজ্যাধিকার সহ্জসাধ্য হইল) রাজ্যের পর রাজ্য অধিকৃত হইতে লাগিল সাহবুদ্দীনের সহকারী কুতবুদ্দীন সটৈন্ঠে চিতোরের দ্বারদেশে আগমন করিলেন কিন্তু এই স্থানে বিজরদৃপ্ত মোসলমানের অপ্রতিহত.গতি বাধাপ্রাপ্ত হইল ) এই সময় সমরসিংহের অপরিণতবয়স্ক পুল কর্ণ চিতোরের সিংহাসনা- ধিকারী ছিলেন। তীয় মাত। বীর্যবতী কর্দেবী শক্রর বিনাশ সাধন জন্ঠ দ্বগ্ডারমান হইলেন। তিনি নিজে সৈনাপত্য গ্রহণ করিয়া. বিপুল রাজপুতবাহিনী সহ শত্রুর অভিমুখে ধাবিত হইলেন। অস্বরের নিকট উর সৈন্য পরম্পরের সম্মুখীন হইয়। বিপুল বিক্রমে যুদ্ধ করিতে লাগিল বিজয়শ্রী। কর্শদেবীর প্রতি প্রসন্ন হইলেন। কুতবুদ্দীন, আহত পরাজিত হইয়! প্রস্থান করিলেন এই যুদ্ধকালে নয় জন. রদ রাজ এগার জন সামন্তরাণী কর্শদেবীর সঙ্গে ছিলেন।

(৫৭ ) ভ্ডাপ্লত ভঙলম্না

দ্বিতীয়!

মোগল কুলতিলক পাদশাহ আকবর স্বীয় আধিপত্য বিস্তার কারতে প্রবৃত্ত হইয়। মিবার ভূমির দিকে সতৃষ্ণ দৃষ্টিপাত করিলেন, এবং বিপুলবাহিনী সমভিব্যাহারে চিতোবের দ্বারদেশে উপনীত হইলেন ।' এই সময় ভীরুস্বভাব উদয্নসিংহ চিতোরের সিংহাসনের অধিপতি ছিলেন। প্রবল শক্রর আগমনে উদয়সিংহ কিংকর্তব্যবিমুট হইয়। পড়িলেন। এই অবস্থা! দর্শন করিয়া তদীয় অন্যতম। রাণী ( এই রাণীর সঙ্গে উদয়সিংহের শান্বান্থদারে বিবাহ হইরাছিল কিনা, ততসন্বদ্ধে সন্দেহ আছে?) অসীম তেজে অন্ত্রধারণ করিলেন এবং ধ্াজপুত সৈন্যের পরিচালনতার গ্রহণপুব্বক মোগলশিবিরে আকস্মিক বিপদে স্যার পতিত হইলেন। মোগলপৈন্য তাদুশ প্রবল আক্রমণ সহ করিতে অসমর্থ হইয়া ছত্রভঙ্ হইয়া পড়িল। পাদশাহ আকবর ভগ্রচিন্তে রাজধানীর অভিমুখে প্রস্থান করিলেন

উদয়সিংহ শক্রর আক্রমণ হইতে উদ্ধার লাভ করিয়। সব্বব্র রাণীর প্রশংসা করিতে লাগিলেন। ইহাতে মিবারের কতিপন্ন সদ্দার ঈষ্যান্িত হইর। উঠিলেন, ভাহাদের ঈর্যাকুল হদরের পরিতৃপ্তি সাধন, জন্য সেই অলোকসামান্ত। নারীর হত্য। সাধিত হইল। কিন্তু তদীয় ব্ুক্তপাতেও এই সকল সর্দারের ঈর্যানল নির্বাপিত না হওয়াতে, তাহারা পাদশাহ আকবরকে আহ্বান করির়। পাঠাইলেন

এই আহ্বানে আকবরের তঞ্ুণ জদয়ে বারপ্রপবিনা মিবার ভূমি জয় করিয়া খ্যাতিলাভের অভিলাষ পুনব্বার জাগ্রত হই। উঠিল ; তিনি, দ্বিতীয়বার বিপুল সৈন্ঠ সমভিব্যাহারে চিতোরের দ্বারদেশে উপস্থিত হইলেন। তাহার আগমন সংবাদ পরিঞ্ত হইয়া ছুর্বল উদয়সিংহ তয়-ব্যাকুলচিত্তে রাজধানী পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করিলেন কিন্ত বীরভূমি মিবার শক্রর আক্রমণে বীর্ধযমদে উন্মন্ত হইয়া উঠিল 7.

স্ডাব্লত জন (৫৮ )

বহুসংখাক বীরপুরুষ আকবরের বিরুদ্ধে কপাণ হস্তে দণ্ডায়মান হই- লেন। পুরুষসিংহ জয়মল্প এই সকল বীরপুরুষের অপিনায়কত্ব গ্রহণ করিলেন। তাহারা বিপুল বিক্রমে শক্র নাশ করিতে লাগিলেন কিন্তু তাহাদের সমস্ত সাধনা ব্যর্থ হইল; অধিনায়ক জরমল্ল শক্রহস্তে জীবন বিসক্ন করিয়া স্বর্গগামী হইলেন। তাদৃশ পরাক্রান্ত অধি- নায়কের আকন্মিক মৃত্যুতে রাজপুত সৈন্য বিশৃঙ্খল হইরা৷ পড়িল | স্বদেশ মিবারের এই ঘোর বিপদ দর্শন করিয়া কৈলবার প্রদেশের শাসনকর্তা যোড়শবর্ষীয় পুন্তের মাতা কর্মদেবীর প্রাণ অস্থির হইয়া উঠিল। তিনি স্বীয় পুত্রকে রণক্ষেত্রে গমন করিবার জন্য আদেশ করিলেন। কিশোরবয়স্ক পুত্ত মাতার আদেশ প্রাপ্ত হইয়া পত্রী কমলাবতী ভগিনী কর্ণবতীর নিকট গমন করিলেন। তাহারা সহর্ষে তাহাকে যুদ্ধে গমন জন্য অনুমতি দিলেন। পুত্ত অন্তরঙ্গ বর্গের নিকট বিদায়গ্রহনপূর্বক অতুল সাহসের সহিত জীবন পণ করিয়া সমরক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইলেন। রাজপুতসৈন্স অভিনব নেতার অধীনে পরিচালিত হইয্বা পুনর্ধার নবতেজে যুদ্ধ করিতে লাগিল। মোগল সৈন্য দুইদলে বিভক্ত হইল; একদল সম্মুখ হইতে পুস্তকে আক্রমণ করিল) স্বপ্ং সম্নাট আকবর অপর দলের সৈনাপত্য গ্রহণ করিয়! পুস্তকে অন্তদিক হইতে আক্রমণ করিতে অভিযান করিলেন। এই বিপদ নিবারণ-কল্পে তদীয় মাতা, পত্রী ভগিনী অশ্বারূঠা হইয় লোকাভীত পরাক্রমে আকবরের সৈনাপত্যাধীন মোগলসেনার গতি- রোধ করিলেন এবং ক্ষিপ্রহস্তে গুলি নিক্ষেপ করিয়া তাহাদিগকে বিব্রত করিয়া তুলিলেন। একজন বর্ষীয়সী রমণী এবং দুইজন ঈধদুত্তিনন কমল-দলের ন্যাঁয় অপুর্ধ যুবতীর অব্যর্থ বাহুবলে বিপুল সৈন্যের অধিপতি আকবর রুদ্ধগতি হইয়া যুগপৎ বিস্মিত ক্ষুন্ধ হইয়া উঠি- 'লেন। তাহার আদেশে চতুদ্দিকে ভীষণ যুদ্ধ আরস্ত হইল। ছুইপ্রহর

(৫৯ ) ভ্ভাক্ত তলতসক্না

হইতে সন্ধ্যাপর্যযস্ত অবিরাম যুদ্ধ চলিল? বীরাঙ্গনা! কর্খ্দেবী, বীর- বালা বীরবধূসহ অসীম পরাক্রমে শক্র হনন করিতে লাগিলেন মোগলটৈন্য উন্মন্ত হইয়া তাহাদের প্রতি লক্ষ্য করিয়া অগ্ত্র পরিচালনা করিতে আবন্ত করিল। অবশেষে বীরবালা কর্মবতী শত্রুর অন্ত্রাঘথাতে ক্ষতবিক্ষত কলেবরে বৃন্তচ্যুত কুন্ুমের ন্যায় ভূতলে পতিত হইলেন। কর্মদেবী প্রাণাধিক। কন্ঠার মৃত্যুতে অবিচলিত থাকিরা যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। কিন্তু তাহারও মৃত্যু আসন্ন হইয়া আসিল ; বহুসংখ্যক ক্ষত স্থান হইতে রক্ত মোক্ষণ জন্য তিনি অবসন্ন দেহে ভূতলে পতিত হইলেন। অচিরে বীর্যবতী বধৃও তাহার পার্থ ভূতলশায়িনী হইলেন তম্বহুর্তে মহাবীর পুত্ত মোগলবাহিনী অতিক্রম করিয়! তাহাদের সমীপে আসিয়া দাড়াইলেন। তিনি বাহু প্রসারণ করিয়া মাতা পত্বীকে তুলিরা ধরিলেন ; তদবস্থায় কমলাবতী স্বামীর বাহুমুলে প্রাণ পরিত্যাগ করিলেন ন্নেহের আধার পুক্রবধূর প্রাণ পরিিত্যাগের অব্যবহিত পরেই কন্মদেবীও মরদেহ পরিত্যাগ পুর্বক অমরলোকে গমন করি- লেন? মৃত্যুকালে স্বদেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থ দেহপাত পূর্বক যুদ্ধ করিবার জন্য পুল্রকে আদেশ করিয়। গেলেন। মিবারগৌরব পুক্ত তাৃশ দৃপ্ত অবলোকন করিয়া ক্ষণকাল স্তম্ভিত হইয়া রহিলেন। তার পর মাতার আজ্ঞ। অনুপারে অসি হান্তে শত্রকুল মধ্যে প্রবেশ করিয়া শক্রনাশ করিতে করিতে অনন্ত নিদ্রার শরন করিলেন, “জননীর কোলে শিশু;_যেমতি লভয়ে বিরাম”

তৃতীয়া

রাজপুতনার অন্তর্গত ক্ষুদ্র অরিস্ত নগরের অধিপতি মাণিক রাও, রাঠোর বহণীয় রাজকুমার অরণ্যকমলের সহিত রাজকুমারী কর্ম্দেবীর শুভবিবাহের প্রস্তাব অবধারণ করিয়াছিলেন। কিন্তু এই পরিণয়

ভ্ডাজত্ত তমতলজ্স1 (৬ )

ক্রিয়া সম্পন্ন হইবার পূর্বে পুগলের রাজকুমার সাধু; একটি যুদ্ধক্ষেত্র হইতে প্রত্যাগমনকালে মাণিকরাওর আতিথ্য গ্রহণ করেন। এই সময় তাহার অপীম বীরত্ব অবিচলিত সাহপ এবং প্রবলপ্রতাপের খ্যাতি সর্ধত্র পরিজ্ঞাত ছিল। বীরবাল কর্ম্দেবী রাজকুমার সাধুর কীন্তি কাহিনী শ্রবণ এবং তাহার বীরত্ব ব্যগ্রক অনুপম মৃত্ঠি দর্শন করিয়া মুগ্ধ হইলেন। “সৌন্দরধ্যলীলামনী উদ্ভানলতা সুদৃঢ় আরণ্য তরুবরকে আশ্রয় করিতে ইচ্ছা করিল” রাজকুমারী পুর্ব বিবাহের প্রস্তাব উপেক্ষা করিয়া সাধুর কণ্ঠে বরমাল্য অর্পণ করিবার অভিলাষ. প্রকাশ করিলেন। এই পরিণয়ের ফলে প্রবলপরাক্রান্ত রাঠোর বংশের সহিত দারুণ কলহ অবশ্ঠস্তাবী জানিয়াও বীরবর পাধু বীর- বালার অতিলাষ পূর্ণ করিতে কৃতসঙ্কল্ন হইলেন। অতঃপর তিনি পিতার অন্থুমতি গ্রহণপূর্বক কর্মদেবীকে পরিণয়স্থত্রে আবদ্ধ করিলেন।

বিবাহান্তে সাধু নবপরিধীতা প্রণয়িনীকে সঙ্গে লইরা স্বীয় রাজ্য।তি- মুখে যাত্রা করিতে উদ্যোগী হইলেন। পথিমধ্যে অপমান পীড়িত অরণ্যকমল কর্তৃক আক্রমণের আশঙ্কা করিয়া মাণিক রাও তাহাদের সঙ্গে সৈন্ঠ প্রেরণ করিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন ;-কিন্তু সাধু এই প্রস্তাবে অস্বীক্ৃত হইয়! স্বীয় বাহুবলের উপর নির্ভরপূর্বক কেবল: আপনার সাতশত সহচর এবং শ্বশুরের পঞ্চাশ জন সৈম্ত সমভিব্যাহারে, অরিস্তনগর হইতে বহির্গত হইলেন

নবীনদম্পতি কিয়দ্,র অগ্রাদর হইলেই প্রতিহিংসাকুল অরণ্যকমল বৈরনির্যাতন মানসে চতুঃসহত্র সৈন্যসহ সাধু এবং তীয় সহচর- বৃন্দকে আক্রমণ করিলেন। বীরসিংহ সাধু তাদ্বশ বিপুল সৈন্য কর্তৃক আক্রান্ত হইয়াও অবিচলিত সাহসে সসৈন্টে যুদ্ধার্থ দণ্ডায়মান হইলেন। তুমুল যুদ্ধ আরস্ত হইল। সুকোমল কুস্থমকামিনী কর্মদেবী নির্ভীক

৬১) ভ্ডাব্রত ভভ্নন্না

হুদরে এই ঘোর যুদ্ধ দেখিতে লাগিলেন সাধু এবং তদীয় সৈন্যের ভীম বাহুবলে ছয়শত রাঠোর সৈন্য জীবন বিসর্জন করিল। রাঠোর সৈন্যও অর্ধ পরিমিত শক্রসেনা ভূতলশায়ী করিতে সমর্থ হইল। এইরূপ সম্কটপুর্ণ অবস্থাতেও কর্খদেবী অবিচলিত রহিল্েন, এবং তেজোগর্ভ বাক্যে স্বামীকে উৎসাহিত করিতে লাগিলেন। সাধু রাজকুমার অরণ্যকমলকে দন্দ যুদ্ধে আহ্বান করিলেন ধশ্মণীল অরণ্য- কমল তাদৃশ অসম যুদ্ধ অকর্তব্য বিবেচনা করিয়া সাধুর আহ্বানে অগ্রসর হইলেন। বীরকুলোচিত রীতি অনুসারে তাহারা পরম্পরকে অভিবাদন করিয়া যুদ্ধার্থ অস্থ উন্মুক্ত করিলেন। তীক্ষধার অন্ত্রের সংঘর্ষ আরম্ভ হইল। অবশেষে অরণ্যকমল, সাধুর মস্তক লক্ষা করিয়া অন্্রাঘাত করিতে সমর্থ হইলেন, মুহুর্ত মধো সমস্ত শেষ হইয়া গেল, সাধুর ছিন্নশির ভূতলে পতিত হইল

বীরাঙ্গনা কম্মদেবী স্বচক্ষে প্রাণাধিক স্বামীর মৃত্যু দেখিলেন, স্টাহার হৃদয় হইতে সুখের মোহিনীমৃঙ্ি অস্তহিতা হইল, কিন্তু তিনি বিহ্বল চিত্তে ক্রদন করিয়া শোক প্রকাশ করিতে বিরত রহিলেন। কন্র্দেবী স্বামীর সহিত সহঘৃত। হইয়া। বিরহের তীর জালা নিবারণ করিতে সঙ্কল্প করিলেন। তেজন্ষিনী বর্খ্দেবী বাম হস্তে তরবারি ধারণপুর্বক দক্ষিণ বাহু ছিন্ন করিরা ফেলিলেন এবং সে ছিন্ন বাহু স্বীয় নিদর্শন স্বরূপ শ্বশুরের নিকট প্রেরণ করিলেন। অতঃপর তাহার আদেশক্রমে একজন অন্ুচর তদীর বাম বাছুও ছিন্ন করিয়া ফেলিল; এই বাহু উপহার স্বরূপ মহিলকবিকে প্রেরিত হইল। উহার পর চিতা সজ্জিত হইল, পতিপ্রাণা কর্ম্মদেবী স্বামীসহ চিতানলে জীবন বিসক্জন করিয়। অমরলোকে গমন করিলেন

বস

রাণী ভবানী *

. সবাণী ভবানী প্রাতঃস্মরণীয়া আর্ধ্যনারী। তাহার পুতচরিত বাঙ্গালীর সাহিত্যে এবং জনক্রতিতে কান্তিত হইয়। আসিতেছে » তাহার পুণ্যকীন্তি শ্রবণে আপামর সাধারণ সকলের হৃদয়েই ভক্তি ও. প্রীতির সঞ্চার হইয়া থাকে আমরা তাহার পবিত্র কাহিনী বিবৃত করিতে প্রবৃত্ত হইলাম

বঙ্গদেশে পুঁঠিয়ার রাজবংশ অতি প্রাচীন; এই রাজ সরকারে কামদেব নামক জনৈক দরিদ্র ব্রাঙ্গণ সামান্য তহশীলদারী চাকুরী করিতেন। তাহার তিন পুত্র ছিল; জো্ঠ রামজীবন, মধ্যম রঘুনন্দন, কনিষ্ঠ বিরাম

মধ্যম পুত্র রঘুনন্দন অনাধারণ প্রতিভাশালী ছিলেন; তিনি (যৌবনের প্রারন্তেই আপন প্রতিভার পরিচয় প্রদান পূর্বক পু'ঠিরার বাজ সরকারে সবিশেষ প্রতিষ্ঠাপন্ন হইরা উঠেন।

পু'ঠিয়ার অধিপতি দর্পনারায়ণ ঠাকুর রঘুনন্দনের তাদৃশ প্রতিতা দর্ণনে সাতিশর প্রীত হইয়া তাহাকে স্বীয় জমিদারীর হিসাব নিকাশ পরিস্কার করিবার জন্য প্রতিনিধিরূপে নবাব দরবারে প্রেরণ করেন। তৎকালে অর্থাৎ ১৭০১ খৃষ্টাব্দে ঢাকা নগরীতে বঙ্গদেশের রাজধানী ছিল এবং আওরঙ্গজেবের পৌন্র আজিম ওশ্ান বাঙ্গালার নবাব

শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় লিশিত রাণী শভগানী এবং নীলমণি বসাক কৃত নবনারী অবলম্বনে এই প্রবন্ধ সঞ্চলিত হইয়াছে। রাণীর দয়া দাক্ষিণোর বুস্তান্তের অনেক অংশই নবলারী হইতে উদ্ধত হইয়াছে ; কেবল স্থানে স্থানে ভাষার পরিবর্তন করা হুইয়াছে। পূর্বেবোক্ত ছুই গ্রন্থ ব্যতীত রিয়াঞ্জ-উদ-সালাভিন, কালী প্রসন্ন বাবুর ইতিহাস, 3681705 [71500:0 ০0 1390€ঞ1 এবং [৪]25 01 7২2)5172181: হইতেও সাহাধ্য গ্রহণ করা হইয়াছে।

রাণী ভবানীর পিলের |

(

ছাতিন

( ৬৩ -) ভ্ডার্ত্চ তলতপত্মা

নাজিম অন্ুগ্রহভাজন মুর্শিদকুলি খা নবাব দেওয়ান ছিলেন। প্রতিভার অবতার স্বরূপ রথুনন্দন নূতন পদে ৰৃত হইয়া সহজে সুকৌশলে হিসাব নিকাশ প্রস্থত করিবার এক অভিনব প্রণালীর. উদ্ভাবন কাঁরলেন; ইহার ফলে তাহার খ্যাতি চারিদিকে বিস্তৃত. হইয়] পড়িল, নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ তাহাকে নায়েব “কাননশুর” পদে নিযুক্ত করিয়া পুরস্কত করিলেন

প্রতিভাশালী রঘুনন্দন নায়েব 'কাননগুর পদে প্রতিষ্ঠিত হইয়! যোগ্যত। সহকারে আপন কর্তব্য কন্ম নিব্বাহ করিতে লাগিলেন এইরূপ সমরে সমাট আওরঙ্গজেব মুর্শিদকুলি খাকে হিসাব নিকাশ দিবার জন্য দক্ষিণাপথে স্বীয় শিবিরে আহ্বান করিলেন মুর্শিদ- কুলি খা সুশৃঙ্খলভাবে সমস্ত হিপাৰ প্রস্বত কির] তাহাতে কানন দ্বরকে যথারীতি স্বাক্ষর করিতে বলিলেন। আজিম ওণ্মানের সহিত মুর্শিদকুলি খার ঘোর শক্রতা ছিল। এই কারণ আজিম গশ্মান মুর্শিদকে অপদস্থ করিবার উদ্দেশ্যে কাননগুদ্বরকে নিকাশী কাগঞ্জ স্বাক্ষর করিতে নিষেধ করিয়া দ্িলেন। ঠীাহারা রাজকুমারের অনুরোধ উপেক্ষা করা সমীচীন বিবেচনা ন। করির্। নিকাণী কাগজ স্বাক্ষর করিতে অসম্মত হইলেন। কাননগুর স্বাক্ষর ব্যতীত নিকাশী কাগজ বাদশাহী সেরেস্তার গৃহীত হইত না বলিয়! মুর্শিদকুলি অত্যন্ত বিপদে পতিত হইলেন এবং অনন্ঠোপায় হইয়া এই বিপদ হইতে উদ্ধার লাভ জন্থ নারেব কামনগু রঘুনন্দনের আশ্রন্ গ্রহণ করিলেন। তাহার স্থকৌশল চেষ্টার দ্বিতীয় কানন জরনারায়ণ নিকাশী কাগজে স্বাক্ষর করিলেন . অতঃপর মুর্শিদ কুলি খা দরবারে উপনীত হইয়। বঙ্গদেশজাত উত্কষ্ট দ্রব্য এবং উদ্বূত্ত রাজন্ব প্রদান করিলেন, সেরেস্তায় নিকাশী কাগজ দাখিল করিয়া নিজ কার্য্য দক্ষতার প্রমাণ প্রদর্শন . পূর্বক সম্রাটের অধিকতর অস্ুগ্রহতাজন হইলেন। সম্রাট তাহাকে

জ্ভানল্তে ভলহনম্মা (৬৪ ) 'বঙ্গদেশের দেওয়ানী কার্্যের সঙ্গে সঙ্গে শাহজাদা আজিম ওশ্ানের সহকারীরূপে নিজামতি কার্য্য ভারও অর্পণ করিলেন। মুর্শিদকুলি খা সগৌরবে বঙ্গদেশে প্রত্যাবৃত্ত হইনা মুখম্থপাবাদে (যুখস্ুসাবাদ পরবর্তীকালে মুর্শিদাবাদ নামে পরিচিত হত ) আপন কার্ধ্যালয় স্থাপন করিলেন এবং উপকারী রুনন্দনকে রায় রায়ান উপাধি এবং দেওয়ানী 'পদ দ্রিলেন।

মুর্শিদকূলি খা মুর্শিদাবাদ নগরীতে সুপ্রতিষ্ঠিত হইর| রাজস্বের নৃতন বন্দোবস্ত জন্ত মনোনিবেশ করিলেন এই কার্যে কাননগু দর্পনারায়ণ দেওয়ান রথুনন্দন তাহার যথেষ্ট সহাননত। করিয়াছিলেন! এই ছুইজন মধ্যে অর্থনীতিকুশল রবুনন্দনের সহাব্রতাই অধিকতব কার্থাকর হইয়াছিল নূতন বন্দৌবস্তের ফলে রাজন্ব ১৩১১৫৯*৭ হইতে ১৪২৮৮১৮৬ টাকা বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইল। মুর্শিদ কুলি খা অতি কঠোর হস্তে এই বাজস্ব সংগ্রহ করিতে আরম্ভ করিলেন বঙ্গদেশের বহু প্রাচীন জমিদার নিরমিত সমরে বাজস্ব পরিশোধ করিতে অসমর্থ হইয়া তাহার নির্্ম ব্যবহারে আপনাদের জমিদীরী হইতে বঞ্চিত হইলেন। বাজেয়াপ্ত জমিদারী সকলের জন্য নৃতন বন্দোবস্ত কর! আবগ্তক হইয়া উঠিল এই সময় দেওয়ান রণুনন্দন রাজস্ব সম্পকাঁয় কার্যে সব্বেসর্ধা ছিলেন; ঠাহার ক্ষমতা প্রতিপত্তি চরম সীমায় উঠিগাছিল। রথুনন্দন পূর্বাধিকারিচ্যুত জর্মদারী সমূহ স্বীর জোষ্ঠ ভ্রাতা রামজীবনের নামে বন্দোবস্ত করিয়া দ্রিতে লাগিলেন রাম- জীবন কৌশলনিপুণ স্বশাসক ছিলেন তিনি নিয়মিতরূপে রাজস্ব পরিশোধ করিতে আরন্ত করিয়া অল্প দিনের মধ্যেই নবাবের প্রিয় পাত্র হইয়া উঠিলেন। জমিদার রামজীবন নাটোরে বহ্বারতন সৌষ্ঠবশালী- বাসভবন নির্মাণ করিয়া জমিদারী শাসন করিতে লাগিলেন।

(৬৫ ) ভ্ডান্ত ভনভসক্দ!

নাটোর রাজ বংশের প্রথম জমিদারীর নাম বনগাছী। এই জমিদারী ক্ষুদ্র ছিল। ১৭০৭ খৃষ্টাব্দে নবাব মুর্শিদকূলি খাঁ স্বীয় বিশ্বস্ত অনুচর রঘুনন্দনকে এই জমিদারী উপহার স্বরূপ প্রদান করেন। গঙ্গার পশ্চিম তটস্থ এবং রাজমহলের অনতিরূরবস্তা রাঞঙ্জপাহী পরগণার জমিদার উদয়নারায়ণ বাজস্ব দিতে অপম্মত হইরা যুন্ধ ঘোষণ! করিয়াছিলেন তিনি যুদ্ধে' পরাজিত হইয়া আত্মহত্যা করেন। নবাৰ এই বিস্তীর্ণ জমিদারী রামজীবনের নামে বন্দোবস্ত করিয়া দেন। -বাজসাহী পরগণা রামজীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পত্তি ছিল। রামজীবনের প্রধান জমিদারীর নামানুসারে তীহার সমস্ত জমিদারী রাজসাহী আখ্য। প্রাপ্ত হয় রাজসাহী পরগণা লাভের সমকালেই আত্রের়ী করতোয়া .নদীবিধৌত বিস্তীর্ণ ভাতুরিয়া জমিদারীর অধিকারিণী রাণী সর্ধানী নিঃসন্তান অবস্থায় পরলোক গমন করাতে অথবা যথাসময়ে রাজস্ব পরিশোধ করিতে অসমর্থ হওরাতে মুশিদকুলি খা রামজীবনকে উহ। অর্পণ করেন। বঙ্গের বীর সন্তান সীতারাম বারের উচ্ছেদের পর তাহার সুবিস্তীর্ণ জমিদারীর অধিকাংশ রামজীবনের হস্তগত হয়। যশোহর অঞ্চলের টুনকি স্বরূপপুরের জমিদার (সুজাত খা নজাত খা আফগানী ) ছার্দান্ত প্রকৃতির জন্য পরিচিত ছিলেন। তাহার! বিদ্রোহী হইয়। নবাবের রাজন্ব লুণ্ঠন করেন। নবাব এই জমিদার দ্বরকে বিনষ্ট করিয়। তাহাদের জমিদারী রামজীবনকে প্রদান করেন।

এইভাবে ক্রমে ক্রমে পরগণার পর পরগণা রামজীবনের হস্তপত হইতে থাকে এবং ন্যুনাধিক সপ্তদশ বৎসর মধ্যে বার হাজার বর্ণ মাইলেরও অধিক স্থানে তাহার অধিকার প্রতিষ্ঠা লাত করে। বর্তমান রাজসাহী, মুর্শিদাবাদঃ বীরভূম বর্ধমানের অধিকাংশ, বগুড়া পাবনার প্রায় সমস্ত অংশ এবং রঙ্গপুর যশোহর-খুলনার অর্ধাংখ তাহার জমিদারী ভুক্ত ছিল। মহারাজ রামজীবন বঙ্গদেশের এই

৫77

ভ্ডাক্গত জতননা (৬৬)

বিপুল অংশে স্বাধীন নরপতির ন্যায় সমুদয়. ক্ষমতাই পরিচালনা করিতেন। ফলতঃ নবাব দরবারে তাহার পদগৌরব অতুল ছিল, হিন্দু সমাজ তাহার অসাধারণ খ্যাতি প্রতিপত্তিতে পরিপূর্ণ ছিল সৌভাগ্যলক্্মীর ঈদৃশ ববপুত্র মহারাজ রামজীবনের শেষ জীবন ছঃখ বিষাদে পূর্ণ হইয়াছিল। ১৭২৪ খৃষ্টাব্দে তাহার একমাত্র পুত্র কালিকাপ্রসাদ হঠাৎ অকালে কালগ্রাসে পতিত হইলেন। এই শোচনীয় দুর্ঘটনার অব্যবহিত পরেই "নাটোর রাজ বংশের উজ্জল: প্রদীপ” রায়রায়ান রঘুনন্দন পরলোক গমন করিলেন উপর্যযপরি দারুন শোকে ক্রিষ্ট হইয়৷ রামজীবনের হৃদয় ভাঙ্গিয়া পড়িল রামজীবন রণুনন্দন,_দুই ভ্রাতায় মিলিত হইরা উৎকট সাধনা বলে যে বিপুল রাজসাহী রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন, তাহা এখন. কে উপভোগ করিবে, এই দুশ্চিন্তায় রামজীবন পীড়িত হইতে লাগিলেন। অন্তরঙ্গ আত্মীয় স্বজনগণ মধ্যে অনেকে. পোস্বুপুত্র গ্রহণ করিবার জন্য পরামর্শ দিলেন, কেহ কেহ বা কনিষ্ঠ ভ্রাত। বিঞ্ুরামের পুত্র দেবীপ্রপাদকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করিবার প্রস্তাব করিলেন। মহারাজ রামজীবন অনেক ভাবিয়া চিন্তিরা অবশেষে পোষ্ঠপুত্রই গ্রহণ করিলেন বঙ্গদেশের ইতিহাসে এই পোমপুন্র মহারাজ বামকান্ত নামে পরিচিত রহিয়াছেন। রাঁমকান্ত রাজসাহী জেলার ছাতিন। গ্রামে সনত্রন্ত জমিদার আত্মারাম চৌধুরীর একমাত্র কন্ঠা ভবানী দেবীর পাণিগ্রহণ কবিষ়াছিলেন। এই রাজকুললক্ীই আমাদের চির পরিচিতা রাশী ভবানী ্‌ মহারাজ কুমার রামকান্তের সহিত তবানী দেবীর শুভ পরিণয়ের পর অল্প দিন মধ্যেই মহারাজ রামজীবনের লোকান্তর ঘটিয়াছিল। রামজীবন যৃত্যু আসন্ন দেখিয়া স্বীয় বিশ্বস্ত অন্ুচর এবং ধর্মভীরু

(৬৭) ভ্ালত লললা

কাধ্যকুশল কর্মনায়ক দয়ারামকে রামকান্তের অভিভাবক নিযুক্ত করিলেন মহারাজ রামজীবনের মৃত্যুকাল ১৭৩৩ খৃষ্টাব্দ

মহারাজ রামজীবনের পরলোক গমনের পর মন্ত্রী দয়ারাম অতি যোগ্যতা সহকারে সমস্ত কার্য নিব্বাহ করিতে লাগিলেন। মন্ত্রী দয়ারামের নাম বাঙ্গালার ইতিহাসে গৌরব মগ্ডিত হইয়া! রহিয়াছে, অচল প্রভুভক্তি, কঠোর কর্তব্য নিষ্ঠা এবং তীক্ষ বুদ্ধি তাহার নাম গৌরবোজ্জল করিয়! তুলিয়াছিল। দয়ারাম চারি বৎসর কাল রাজসাহীর কাধ্যভার পরিচালন করিলেন। তারপর রামকান্ত ঃপ্রাপ্ত হইলে অবসর গ্রহণ পুর্বক আপন বৈষয়িক উন্নতি সাধনে প্রবৃত্ত হইলেন

রামকান্ত রাজ্যভার গ্রহণ কালে তরুণ বরদ্ক যুবক ছিলেন; কিন্তু তাহার যথেষ্ট দৃঢ়তা কাধ্যকুশলত। ছিল। তিনি যোগ্যতা সহকারে সমস্ত কার্য নির্বাহ এবং নিয়মিত সময়ে রাজস্ব পরিশোধ করিতে আরম্ভ করেন। এই ভাবেছধ ব২্সর অভিবাহিত হইলে মহারাজ রামকান্ত এবং তদীয় সহধন্মিনী রাণী ভবানা এক অভাবনীয় বিপদ জালে জড়িত হইয়া পড়েন

মহারাজ রামজীবন পোয্টপুত্র গ্রহণ করিয়। তাহাকে সমস্ত রাজ সম্পদ অর্পণ করাতে তীয় কনিষ্ঠ ভাতা বিষণরামের পুজ দেবীপ্রসাদ ঈর্ধ্যাকুল হইয়া উঠেন। এই কারণ মহারাজ রামজীবনের পরলোক গমনের পর তিনি রামকান্তের ধ্বংস সাধন করিয়া রাজসাহীর রাজ সম্পদ হস্তগত করিবার জন্য উদ্যোগী হন এবং সমুচিত ধৈর্য্য সহকারে আপন অভী সিদ্ধির সুযোগ অন্বেষণে নিরত থাকেন। মহারাজ রামজীবনের পরলোক গমনের ন্যুনাধিক দশ বৎসর পরে বঙ্গের রাজলঙ্গী মুশিদকুলি খার বংশ পরিত্যাগ করিয়া পুরুষসিংহ নবাব আলীবদর্শ খর আশ্রয় গ্রহণ করেন। এই রাষ্ট্রবিপ্লবের সঙ্গে দেবী

ভ্ডান্পত শত! (৬৮)

প্রসার্দের মনোবাঞ্থ৷ পূর্ণ করিবার সুযোগ উপস্থিত হয়। নবাব আলীবপ্ী খা কর্তৃব্যনিষ্ঠ স্ুশীসক ছিন্ন, কিন্তু রাজত্বের প্রারস্তে বঙ্গদেশের আত্যন্তরীন অবস্থা সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ বলিয়া সহজেই কর্ণ- জেপগণের বাক্যে বিচলিত হইলেন এবং দেবীপ্রসাদকে রাজসাহী রাজ্যের তার অর্পণ করিলেন। দেবীপ্রসাদ চিরাভিলধিত নবাবী সনন্দ হস্তগত করিয়া দ্রুতগতিতে নাটোর উপস্থিত হইলেন এবং মহারাজ রামকান্ত রাণী ভবানীকে গৃহবহিষ্কত করিয়া সগৌরবে রাজসাহীর শাসন ভার গ্রহণ করিলেন *

মহারাজ রামকান্ত রাজ্যচ্যুত হইয়া মহিষী সহ জগৎ শেঠের বাড়ীতে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন এবং নাটোর বংশের চিরহিতৈষী দয়ারামের সহায়তায় নবাব দরবারে আবেদন পাঠাইলেন নবাব দরবারে জগৎ শেঠের অপ্রতিহত প্রতিপত্তি ছিল, তাহার অনুরোধে এবং দয়ারামের কৌশলে নবাব আলীবদ্দী খা অবিলন্বে মৃলান্ুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইলেন এবং কয়েক মাস মন্যেই মহারাজ রামকান্তকে অপহৃত রাজ্য প্রত্যর্পণ করিলেন।

বিপুল রাজসম্পদ লাভ করিয়াও মহারাজ বামকান্ত এবং রাণী ভবানী জীবনে সম্পূর্ণ স্থধী হইতে পারেন নাই। এই রাঞ্জদম্পতির সন্তান ভাগ্য অপ্রসন্ন ছিল। তাহারা ক্রমান্বয়ে দুই পুক্র লাত করেন? কিন্তু জ্যেষ্ঠ পুত্র কাণীকান্ত একাদশ মাসে এবং কনিষ্ঠ পুন্র নামাকরণের পূর্বেই পিতা মাতার হৃদয়ে শোকশন্য বিদ্ধ করিয়! কালগ্রাসে পতিত হন। অতঃপর এক কন্ঠারত্ব জন্ম গ্রহণ করিয়া রাজপুরী

* গোঁড়ে ব্রান্মণ নামক পুস্তকের লেখক মহিমাচন্ত্র মজুমদার মহাশয় নির্দেশ করিয়াছেন যে, মহারাজ নন্দকুমারের চক্রান্তে দেবীপ্রসাদের রাঞ্যলাভ হটিয়াছিল।

জীমুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয় এই মতের পোষকতা করিয়াছেন!

৬৯ ) ভ্ডা্গজ জলতলম্ষ'

আলোকিত করেন। এই কন্তা ইতিহাস পরিচিতা তারা সুন্দরী ) তার) সুন্দরীর শৈশবকালেই রামকান্ত পরলোক গমন করেন। তাহার মৃত্যুকাল ১৭৪৮ খৃষ্টাব্দ

মহারাজ রামকান্তের জীবদদশাতেই রাণী ভবানীর বিমল যশঃপ্রভা চারিদিকে বিকীর্ণ হইয়া! পড়িয়াছিল। কারণ মহারাজের মৃত্যুর পর নবাব আলীবন্ী খা তাহাকে রাজসাহী রাজ্যের অধিকার প্রদান করেন। কিন্তু তাহার বিষয়তৃষ্ণার অভাব ছিল বলিয়া তিনি রাজকুমারী তারাস্থন্দরীকে সৎপাত্রস্থ করিয়া! জামাতার হস্তে রাজ্যভার প্রদান করিতে অভিলাধিণী হইলেন। এই উদ্দেশ্যে রাজসাহীর খাজুরা গ্রাম নিবাসী রঘুনাথ লাহিড়ীর সঙ্গে মহা সমারোহে তারা সুন্দরীর বিবাহ দ্রিলেন, এবং জামাতার নামে নবাবের সেরেম্তায় নামজারী করিয়া লইলেন। কিন্তু ছুর্ভাগ্যক্রমে বিবাহের অল্প দিবস মধ্যেই রঘুনাথ পরলোক গমন করিয়া রাজকুমারীকে চিরছুঃখিনী করিলেন

এই ছূর্ঘটনায় রাণী ভবানী অনন্টোপায় হইয়। পৃর্বের ন্ঠায় রাজ- কার্য সম্পাদন করিতে লাগিলেন এবং তত সঙ্গে সঙ্গে ধন্মচর্্যা পরসেবা ব্রতে জীবন উৎসর্গ করিলেন রাণী তবানী ধর্মপ্রাণা লোক হিতৈষিনী শাসনকত্রী ছিলেন।

রাণী ভবানী সুর্য্যোদয়ের চারিদও পূর্বে শয্যা পরিত্যাগ পূর্বক জপ করিতে আরম্ভ করিতেন। জপ শেষে স্বহস্তে পুষ্পচয়নে নিরত হইতেন। অতঃপর তিনি সৃর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গঙ্গা স্নান পূর্বক বেল৷ দ্বিপ্রহর পর্য্যস্ত দেবপুজা৷ দেবালয়ে পুষ্পাঞ্জলি দান এবং পুরাণ শ্রবণে অতিবাহিত করিতেন। তদন্তর তিনি বেলা আড়াই প্রহরের সময় ন্বপাক হবিষ্যান্ন আহার করিতেন। তাহার আহারের পূর্বে হবিষ্ঠান্ন দ্বারা দশ জন ব্রাহ্মণের ভোজন হইত। রাণী ভবানী

ভ্ডাল্ত ললন্ন। (৭4০)

আহারান্তে দেওয়ান খানায় কুশীনে উপবেশন পূর্বক কর্শচারিগণকে বিষয় কর্ম সম্পর্কে আদেশ প্রদান করিতেন এই কার্য্য অস্তে পুরাণ পাঠ আরন্ত হইত। সন্ধ্যার প্রাক্কালে আবার বিষয় কর্ম হইত। তৎকালে রাণী তবানী কাঁগজ পত্রাদি স্বাক্ষর করিতেন। সায্ংকালে তিনি গঙ্গ। দর্শন কবিরা ঘ্বত প্রদীপ দ্িতেন। রাণী ভবানী গঙ্গাতীর হইতে প্রত্যাগমন করিয়! রাত্রি চারি দণ্ড পর্যান্ত মালা জপ করিতেন। তারপর জলযোগ করিয়া বিষয় কর্ম সন্বন্ধে কর্চারিগণের সঙ্গে পরামর্শ এবং প্রজাপুঞ্জের অতিযোগাদি শ্রবণে নিরত হইতেন। এই সমস্ত কার্য সমাপ্ত হইলে তিনি সদালাপ এবং পৌরগণের তত্বাবধানে কিয়ৎকাল অতিবাহিত করিয়! রাঁত্রি দেড় প্রহারের সময় বিশ্রাম জন্য শয়ন কক্ষে প্রবেশ করিতেন

রাণী তবাঁনী দেবসেবা, অতিথি সেবা এবং লোক সেবার জন্ জলের ন্যায় অর্থ ব্যপ্ন করিতেন। আমরা এই পুর্ন্যকীন্তির কাহিনী সংক্ষেপে বর্ণনা করিতেছি রাণী তবানীর আবির্ভাবের পূর্বে ধর্ধান্ধ আওরঙ্জজেবের কঠোর শাসনে হিন্দুর পবিত্র তীর্থক্ষেত্র কাশীধামের শোচনীয় অবস্থা হইয়াছিল। রাণী ভবানীর অসংখ্য কীর্তিমধ্যে কাশীর লুপ্তোদ্ধার সাধন সর্বশ্রেষ্ঠ

রাণী ভবানী কাশীধামে বহুযুদ্তি বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা করেন? এতন্মধ্যে বিশ্বেশ্বর দগ্ডপাণি, দুর্গা, তারা রাধারুষ্ণ প্রধান। এই সকল দেবমুস্তি ব্যতীত শত শত শিবলিঙ্গ ছিল। তাহার প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহাদির জন্য সুদৃশ্য মন্দির সমূহ নির্মিত হইয়াছিল। তাহার অর্থ ব্যয়ে প্রস্তুত হইয়। বু সংখ্যক প্রস্তর নির্মিত ঘাট কাশীর নিম্ন বাহিনী গঙ্গার শোত। বর্ধন করিত রাণী ভবানী বহু অতিথিশালার প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। তিনি তীর্থবাসিগণের বাস জন্য তিন শত বাটী প্রস্তত করিয়। দিয়াছিলেন। যে সকল লোক অসঙ্গাত বা শেষ অবস্থা

(9১৯) ভ্ঞাক্ত ভনভলম্মা

নিবন্ধন স্বদেশ পরিত্যাগ করিয়া কাশীবাসের ইচ্ছা করিত, তাহাদিগকে সপরিবারে সকল বাটীতে স্তানদান পূর্বক যাবজ্জীবন অন্নদান করিবার নিয়ম ছিল। এই সকল বাটাতে যাহাদের মৃত্যু ঘটিত, তাহাদের গুদ্ধদৈহিক ক্রিয়া এবং শ্রাদ্ধাদি সম্পাদনের ব্যবস্থাও ছিল। রাণী ভবানী কাশীর চতুর্দিকে পঞ্চ ক্রোশ ব্যাপিয়া কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ ব্যবধানে এক এক ধন্ধ চৌক। নিন্মাণ করিয়া দিয়াছিলেন প্রত্যেক ধন্মচৌকার একটি পিলপা, একটি বৃক্ষ একটি কূপ ছিল। ভারবাহী শ্রমজীবি অথবা পথিক পরিশ্রান্ত অথবা পিপাপার্ত হইলে ধন্ম চৌকার পিলপার উপর মোট বা দ্রব্যাদি রাখিয়া রুক্ষ মুলে বসিয়া বিশ্রাম এবং জলপানাদি করির1 পুনব্বার গমন করিত মোট বা দ্রব্যাদি নামাইবার এবং তুলিবার সময় কাহারও সহায়তা আবশ্যক হইত না। এসকল ধর্ম চৌকা অগ্যাপি বঞ্তমান আছে। পুব্বোক্ত পঞ্চ ক্োশের মধো বভৃষ্তানে প্রশপ্ত জলাশর প্রতিষ্ঠিত হইঘাছিল। এই সকল জলাশয়তাবে পথিকগণের বিশ্রাম, বন্ধন আহারের জন্য চুল্লা, বাটী, জল পাত্র, তঙুলাদি এবং ফলমুল প্রস্থত থাকিত। তজ্জন্ঠ পথিকের! স্বচ্ছন্দে আহার বিশ্রাম করিতে পাবিত। নিজ কাশীতে স্িত্য প্রাতঃকালে একটা প্রশ্তরের চৌবাচ্চাতে আট মণ বুট ভিজান হইত; এই সকল বুট বাত্রীমাত্রেই আহার করিতে পাবিত। অন্নপূর্ণার বাটীতে প্রত্যহ পচিশ মণ তরল বিতরণ করিবার ব্যবস্থা ছিল। দেবদেবীর পুজজ। ভোগের যেমন ধুম ধাম, সেইরূপ পারিপাট্য ছিল ঠাহাদের তোগের জন্য অন্ন নান। প্রকার ব্যঞ্ন প্রস্তত হইত, চারি পাঁচ সহক্স লোক উত্তমরূপে আহার করিত। প্রত্যহ ১০৮ জন দণ্ডী, কুমারী সধবা ইচ্ছাতোজন করিতেন। এক টাক] করিয়া! দক্ষিণা দরবার নিয়ম ছিল। বাণী ভবানীর মনুষ্ের প্রতি যেরূপ কৃপা ছিল, জীব জন্তুর প্রতিও সেইরূপ ছিল।

ভারত শনহলঞ্মা (৭২)

কথিত আছে, কাশীর পঞ্চ ক্রোশের মধ্যে ষে যে স্থানে পক্ষী ইত্যাদি বাস করিত, সেই সেই স্থানে অন্ন নিক্ষিপ্ত হইত; পিপীলিকাদির গর্ভের ভিতরে এবং সম্মুধে চিনি এবং আন্ঠান্য মিষ্ট দ্রব্য প্রদত্ত হইত।

বাণী তবানী রাঁজপাহী এবং নাটোরে বহু দেবালযবের প্রতিষ্ঠা এবং নানাবিধ পুণ্যকর্ম্ের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন নাটোর গঙ্গাহীন স্থান বলিয়া তিনি অধিকাংশ সময় মুর্শিদাবাদের নিকটবর্তী জাহুবীর তাটস্থ বড়নগর গ্রামে বাদ করিতেন। বড়নগরে বহুসংখ্যক দেবালয় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল

বাণী ভবানী স্বরাজ্যে বহুসংখ্যক আখড়া অতিথিশাল! প্রতিষ্ঠা কবিয়াছিলেন। তিনি ব্রাঙ্গণ এবং গঙ্গাবাসী, ক্ষেত্রধামবাসী আখড়াবাসী মহন্তদ্রিগকে বৎসর বৎসর একলক্ষ আশী হাজার টাকা নগদ বৃত্তি দিতেন তাহারা এই অর্থ দ্বারা দেবসেবা, অতিথিসেব। প্রভৃতি নানাপ্রকার ধর্ম কর্ম করিতেন। প্রাগুক্ত বৃত্তির ২০২৫ হাজার টাকা অধ্যাপক পগ্ডিতগণের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। অধ্যাপক পণ্ডিতগণ তাশ রাজবৃত্তি দ্বার টোল স্থাপন করিয়া বন্ধ ছাত্রকে বিষ্া অন্ন দান করিতেন।

নগদ বৃত্তি বাতীত রাণী ভবানী ব্রাঙ্গণ, ক্ষত্রিয় বৈশ্য শুর, এই চতুব্র্ণকে নুনাধিক পাঁচ লক্ষ বিঘা ব্রন্গোত্তর, দেবোত্তর মহাত্রাণ দিয়াছিলেন। তাদৃশ ভূমির কর ছিল ন1। বর্তমান সময়েও রাণী ভবানী প্রদত্ত নিষ্কর ভূমির উপস্বত্বে অনেক লোক সুখে কাল যাপন করিতেছেন।

রাণী তবানী রোগীর চিকিৎসার জন্যও উত্তম ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। তিনি আট জন বৈদ্য বেতন দিয়া নিযুক্ত করিয়াছিলেন। তাহার! ৰড়নগর তত্চতুঃপার্ববর্তী সাতখানা গ্রামের সমুদ্রয় রোগীর চিকিংস)

( ৭৩ ) ভ্ডাক্ তত তনজলন্না'

করিতেন। এই আটজন বৈদ্যের দুইজন ভূত্য নিয়োজিত ছিল, তাহার রোগীদিগের ওঁষধ প্রস্তুত করিয়া দিবার জন্য বৈচ্াগণের সঙ্গে সঙ্গে যাইত। এতস্তিন্ন প্রত্যেক চিকিৎসকের সঙ্গে ছুই তিন জন ভারী পাচন, ক্ষুদ্র মৎস্য, পুরাতন তুল, মুগের দাইল, মিছরি রোগীর পথ্য অন্যান্য দ্রব্য লইয়া যাইত। তাহারা চিকিৎসকের বিধান মত রোগীর পথ্য প্রস্ত করিয়া দিত। প্রাগুক্ত সাতখানি গ্রামে কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হইলে তাহার সংকারাদির ব্যয় সরকার হইতে দিবার নিয়ম ছিল।

রাণী তবানী দীন দরিদ্র ব্যক্তির মৃত্যু হইলে ব্রাহ্মণের সৎকার জন্য পাঁচ টাকা শুদ্ের সকার জন্য তিন টাকা করিয়৷ দিতেন। সতী স্ত্রী পতির সহগমন করিলে একথান বন্ব, এক জোড়া শাখা এবং অবস্থা বিবেচনায় ৬২ টাকা হইতে ১০২ টাক পর্য্স্ত নগদ সাহায্য প্রদান করিতেন

রাজসাহী রাজ্যে কোন ব্রাহ্মণ কন্যার বিবাহ উপস্থিত হইলে রাণী তবানী কন্তাদানের সমুদর ব্যর নিজে দিতেন। দুর্গোৎসব কালে ২০০০ পষ্ট্রবন্ ক্রয় করিয়া কুমারী সধবাদিগকে প্রদান করিতেন তৎ্সঙ্গে তাহাদের 'প্রতিজনকে একজোড়া শীখ। ন্বর্ণ নথ প্রদান করিতেন পুজার সময় দেশীয় বিদেশী শ্রাঙ্গণ পণ্ডিতগণকে পঞ্চাশ সহত্র টাকা বার্ষিক দিতেন

রাণী ভবানী সকল সময় স্বহস্তে দান করিতে পারিতেন না, এজন্য আজ্ঞ। দিয়াছিলেন যে, দরিদ্র দায়গ্রস্ত ব্যক্তিদ্িগকে পোদ্দার এক টাকা পর্য্যন্ত দান করিতে পারিবেন, ধনরক্ষক একটাকা হইতে পাচ টাকা পর্য্যন্ত দিতে পারিবেন, এবং দেওয়ান ১০২ টাকা হইতে ১০০২ টাক পর্যযস্ত দান করিবেন। একশত টাকার অধিক হইলে বাণীর. অনুমতি আবশ্তক হইত

ভ্ডাব্রত ভতলন্মা (48.

রাণী ভবানী রাজসাহী রাজ্যের নানা স্থানে বহুসংখ্যক জলাশয় প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলন। তাহার প্রতিষ্ঠিত জলাশয়ের সংখ্য। নির্ণয় করা সহঞ্জ নহে। এখনও বঙ্গদেশের নানাস্বানে শত শত জলাশর বিদ্যমান থাকিয়া রাণী তবানীর মহিমা ঘোষণ। করিতেছে

বাণী ভবানী বঙ্গদেশে কতিপয় রাজপথ নির্মীণ করিয়া দিয়াছিলেন, তাহার নিশ্মিত পথের বিশেষত্ব এই ছিল যে, তত্সমুদবের পার্খে জলাশয় এবং জলাশয়ের তীরে চুল্লী, ভোজনপাত্র, পানপাত্র প্রভৃতি রক্ষিত থাকিত।

প্রাভঃন্মরণীরা রাণী ভবানীর ধর্মপ্রাণতা এবং লোকহিতৈষিতা কীদুশ প্রবল ছিল: তাহ। আমরা প্রদর্শন করিলাম। তাহার কার্য্যদক্ষতা কিরূপ অপামান্য ছিল, আমর। তাহাই এখন প্রদর্শন করিতেছি নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর রাজন্বের সময় হইতে বঙ্গীয় জমিদারগণের অতি সঙ্কটক।ল উপস্থিত হইয়াছিল; অনেক প্রাচীন জমিদার বংশের বিলোপ সাধিত হইয়াছিল ; সময় মত রাজন্ব পরিশোধ করিতে অপমর্থ হইলেই অনেক জমিদারের জমিদারী বাজেষাপ্ত হইত, তাহাদের স্থলে নৃতন জমিদার নিয়োজিত হইতেন। বাণী তবানীর সময়েও জমিদারগণের এই প্রকার অবস্থাই ছিল। রাণী ভবানী ধশ্বার্থ পরহিতকল্পে অজঅধারে অর্ধ ব্যর করির়াও তাদৃশ বিস্তীর্ণ 'জমিদারীর রাজস্ব সময়মত পরিশোধ করিতেন, ইহা অবগ্তই তাহার অসাধারণ ক্ষমতার পরিচারক ছিল; তাহাতে সন্দেহ নাই। বাণী ভবানী কখনও প্রজাপীড়ন করিয়া আপন প্রাতঃস্মরণীয় নাম কলঙ্কিত করেন নাই; এজন্য ভীহার নিঘমমত বাজকর সংগ্রহ সমধিক বিন্ময়ের ব্যাপার বলিয়া প্রতীয়মান হয়

বাণী তবানীর প্রথম সময়ে নবাব সিরাজদ্দৌল! মুর্শিদাবাদের

( ৭৫ ) ভ্ডাল্সভ তলজ্লম্না

মসনদে উপবিষ্ট হইয়াছিলেন। বঙ্গদেশের তৎকালীন শ্রেষ্ঠ পুরুষগণ তাহার প্রতি অসন্তষ্ট হইয়া ইংরেজ কোম্পানীর সহারতায় সেনাপতি মিরজাফরকে রাজ্যভার অর্পণ করিবার অভিপ্রায়ে ষড়যন্ত্রে প্রবৃত্ত হন এবং এতৎ সন্বন্ধে রাণী ভবানীর অভিমত জিজ্ঞাসা করেন। বিশ্বাস- ঘাতকতা অধন্থমজনক বরাজবিপ্নব প্ররুতিপুঞ্জের অহিতকর বলিয়া তিনি প্রতিকূল মত প্রকাশ করেন। এরূপ কথিত আছে যে, বড়যন্ত্রের অন্যতম নায়ক মহারাজ রুষ্চন্্রকে শাখা, সিন্দুর শাটী উপচৌকন পাঠাইঘা তিনি ইঙ্গিত করিয়াছিলেন যে, তাদ্শ কার্য্য নারীজনোচিত অপকারধ্য কিন্তু বঙ্গদেশের নেতৃস্থা্নীয় ব্যক্তিগণের নিকট রাণী ভবানীর মত উপেক্ষিত হইয়াছিল শ্টাহারা ইংরাজ কোম্পানীর সহায়তায় নবাব, সিরাজন্দোলাকে পদচ্যুত করিয়া মির জাফরকে নবাব করেন। ইহার ফলে অচিরে বঙ্গদেশের শাসনাধিকার মুপলমান্রে হস্তচাত হই ইংরেজ কোম্পানীর হস্তগত হয়।

ইংরেজ কোম্পানীর অসাধারণ সাপনার বঙ্গদেশের রাজশাপন সুব্যবস্থিত হর এবং প্রঞ্জাকুল সুখ শান্তিতে বাস করিতে আরম্ত করে কিন্তু রাজবিপ্লবের অনিবার্য ফল স্বরূপ কোম্পানীর রাজনের প্রারস্তে অরাজকতা উপস্থিত হইয়াছিল

এই দুঃসময়ে রাণী ভবানী সবিশেষ দক্ষত। সহকারে প্রজার রক্ষণ ব্যাপারে নিযুক্ত ছিলেন তাহার স্ুশাপনে প্র্জারন্দ দস্থ্য তঙ্করের হস্ত হইতে পরিজাণ লাভ করিয়াছিল। শাহার সুব্যবস্থায় প্রজারন্দ অপেক্ষারুত সুখ শান্তিতে বাস করিতে পারিয়াছিল

ফলতঃ আপন সুবিশাল জমিদারীর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যাপারে রাণী ভবানীর মনস্থিতা, কাধ্যদক্ষতা এবং প্রজাহিতৈধিতা সবিশেবরূপে পরিশ্দুট হইয়া উঠে। তাহার মঙ্গলজনক শাসন সুদীর্ঘকাল ব্যাপী

ভ্ডাক্সত জঙলন্ন। (৭৬ )

হইয়াছিল। রাজকুমারী তারানুন্দরী বিধবা হইলে রাণী ভবানী পোস্বপুত্র গ্রহণ করিয়াছিলেন এই পুক্র বঙ্গের চিরস্মরণীয় সাধক- শ্রেষ্ঠ রামরুষ্চ। মহারাজ রামকৃষ্ণ বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে রাণী ভবানী, তাহার হস্তে রাজ্যতার অর্পণ করিয়৷ গঙ্গাবাস আশ্রয় করেন।

শিবপুজানিরতা। অহল]াবাই

অহল্যাঁবাই

প্রাতঃস্মরণীয়া৷ অহল্যাবাইর জীবনের পবিত্র কথা বঙ্গসাহিত্যে একাধিকবার বিবৃত হইয়াছে কিন্তু তদীয় পুতচরিত পুনঃ পুনঃ আলোচনার যোগ্য কারণ আমরা তাহার পুণ্যকাহিনী পাঠক পাঠিকাদিগকে উপহার প্রদান করিব

অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রারন্তে মোগল সামাজ্যের অধঃপতন মহারাষ্ট্র শক্তির অভ্যুদরের ফলে ভারতবর্ষে ঘোর রাজবিপ্লুব উপস্থিত হইরাছল। এই রাজবিপ্লবের ঘূর্ণণে রাজা হঠাৎ পথের কাঙ্গাল হইতেছিলেন এবং পথের কাঙ্গাল ভাগ্যলগ্ষমীর অচিন্ত্য কপায় বাজসিংহাসনে আরোহণ করিতেছিলেন। এই শেবোক্ত শ্রেণীর সৌভাগাশালী পুরুষগণ মধ্যে মলহর রাওর নাম উল্লেখযোগ্য |

মলহররাও ১৬৯৩ খুষ্টান্দে জন্ম পরিগ্রহ করেন। ষ্ঠাহার পিতা একজন মেষপালক ছিলেন মধ্য ভারতের নীরা নদীর তারে হোল নামক পল্লীতে তাহার বাঁস ছিল। আদি বাসস্ানের নামানুসারে মলহররাও কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রাজবংশের নাম হোলকার হইয়াছে। কোর" শব্দের অর্থ অধিবাসী

১৭২৪ খুষ্টান্ধে মলহররাও পেশওয়ার সৈন্য বিভাগে প্রবেশ লাভ করেন। ইহার পর তদীয় জীবন অবিচ্ছিন্ন ক্রমিক উন্নতির ইতিবৃত্ত _ বলিয়া! নির্দেশ করা যাইতে পারে মলহর অধ্যবসায় শোর্ধ্য বীর্যের অবতার স্বরূপ ছিলেন। তিনি অপূর্ব প্রতিতা বলে সুদীর্ঘ কাল ( ১৭২৪-_-৬৫) ব্যাপি সাধনায় এক বিস্তীর্ণ রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করিতে সমর্থ হন। তাহার প্রতিষ্ঠিত রাজ্যের রাজস্ব ৭০ লক্ষ

যুদ্রা ছিল।